জয়সওয়াল কি হেডকে বলেছিলেন গ্লাভসে বল লেগেছিল, ভিডিও ঘিরে বিতর্ক
সত্যিই কি আউট ছিলেন যশস্বী জয়সওয়াল? প্যাট কামিন্সের বল কি তার গ্লাভসে লেগেছিল? নাকি ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ম্যাচটিতে টিভি আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন করা বাংলাদেশের শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈতক? মেলবোর্ন টেস্টের আলোচিত এই ঘটনার রেশ এখনও থামেনি। তার মধ্যেই একটি নতুন ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে। তাতে বিতর্ক আরও বেড়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারদের আবেদনে মাঠের আম্পায়ার সাড়া না দেওয়ার পর তারা তৃতীয় আম্পায়ারের কাছে আবেদন করেন। সেই সময় ট্র্যাভিস হেড যশস্বীর কাছে যান। তিনি যশস্বীকে কিছু একটা প্রশ্ন করেন। তার জবাব যশস্বী দেন। তারপরেই দেখা যায়, হাসিমুখে সতীর্থদের দিকে তাকিয়ে আউটের ইশারা করছেন হেড। তবে কি হেডকে যশস্বী জানিয়েছিলেন যে, তার গ্লাভসে বল লেগেছে। নাহলে কেন ওভাবে উল্লাস করলেন হেড। এই ঘটনার ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে। তবে কে কী বলছেন, তা ভিডিওতে বোঝা যায়নি। যশস্বী বা হেড, কেউ এই বিষয়ে কিছু বলেননি।
— 7Cricket (@7Cricket) December 30, 2024
মেলবোর্নে তখন শেষ দিনে ব্যাট করছিলেন যশস্বী। ৭১তম ওভারে বল করছিলেন কামিন্স। তার বল যশস্বীর লেগ স্টাম্পের বাইরে যাচ্ছিল। সেই বলে ব্যাট চালান ব্যাটার। বল উইকেটরক্ষক অ্যালেক্স ক্যারের হাতে যেতেই অস্ট্রেলিয়া আউটের আবেদন করে। কিন্তু মাঠের আম্পায়ার ওয়েস্ট ইন্ডিজের জুয়েল উইলসন আউট দেননি। রিভিউ নেয় অস্ট্রেলিয়া। আউট দেন তৃতীয় আম্পায়ার।
তৃতীয় আম্পায়ার যখন রিপ্লে দেখছেন, তখন স্নিকোতে কোনো বড় স্পাইক দেখা যায়নি। তারপর তৃতীয় আম্পায়ার আউট দেওয়ায় বিতর্ক তৈরি হয়। তৃতীয় আম্পায়ার সৈকত বলেন, ‘ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে বল গ্লাভসে লেগেছে। বলের দিক পরিবর্তন হয়েছে।’ সেই যুক্তিতে স্নিকোতে ব্যাটে বা গ্লাভসে বল লাগার কোনো প্রমাণ না পাওয়া গেলেও তৃতীয় আম্পায়ার আউটের সিদ্ধান্ত জানান।
স্নিকোতে কোনো স্পাইক না দেখালেও তৃতীয় আম্পায়ার আউট দেওয়ায় বিতর্ক হয়। কিন্তু রবি শাস্ত্রী বলেন, ‘তৃতীয় আম্পায়ার চাইলে স্নিকো নাও মানতে পারেন। সেই ক্ষমতা তার আছে। তিনি দেখছেন বল গ্লাভসে লাগার পর দিক পরিবর্তন করেছে। তাই তিনি আউট দিয়েছেন। আমার মনে হয় সঠিক সিদ্ধান্ত।’ সম্প্রচারকারী সংস্থার চ্যানেলে দেখানো হয় বল যশস্বীর ব্যাটের কাছ দিয়ে যাওয়ার সময় দিক পরিবর্তন করেছে, যা তৃতীয় আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের পক্ষেই কথা বলছে।
বল যশস্বীর গ্লাভসে লাগার ভিডিও দেখা গেলেও স্নিকোতে দেখা যায়নি। এর আগেও বিভিন্ন সময় স্নিকো নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। কখনও বল না লাগলেও স্নিকোতে আওয়াজ ধরা পড়েছে, আবার কখনও ব্যাটে বল লাগলেও তা ধরা পড়েনি। এই প্রযুক্তি কতটা সঠিক সিদ্ধান্ত দিতে পারে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই। তবে যশস্বীর ক্ষেত্রে আরও একটি যুক্তি প্রযোজ্য। স্নিকোর মাইক থাকে স্টাম্পের পেছনে মাটির নিচে।
উইকেটের উচ্চতায় বল থাকলে সেই আওয়াজ যতটা সহজে ধরা পড়ে, সেটা বেশি উচ্চতা থাকলে সম্ভব নয়। যশস্বী ৬ ফুট লম্বা। বল তার মাথার কাছ দিয়ে যাচ্ছিল। অর্থাৎ, স্টাম্প মাইক ছিল অন্তত ৬ ফুট নীচে। সেই কারণে গ্লাভসের মতো নরম জিনিসে বলের স্পর্শ ধরা না-ও পড়তে পারে স্নিকোতে। তাই তৃতীয় আম্পায়ার তার পর্যবেক্ষণকে গুরুত্ব দিয়েছেন। তৃতীয় আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকে তাই অনেকেই সাহসী সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন।
এফআই