দেশি খেলোয়াড়দের নিয়েই শিরোপায় চোখ মারুফের
বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলে বিদেশি ফুটবলাররাই নিয়ন্ত্রক। ৫ আগস্ট পট-পরিবর্তনে দেশের শীর্ষ ক্লাব আবাহনী বিদেশি ফুটবলার নিতে পারেনি। দেশি ফুটবলার দিয়েই খেলছে নতুন মৌসুমে। চার ম্যাচে ৯ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলে যুগ্মভাবে দ্বিতীয় স্থানে। এর চেয়েও বড় বিষয় টানা পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ও সবচেয়ে শক্তিশালী দল বসুন্ধরা কিংসকে হারিয়েছে নিজেদের সবশেষ ম্যাচে।
দেশের অন্যতম সেরা কোচ মারুফুল হক শুধু দেশি ফুটবলারদের নিয়ে স্বাধীনতা কাপ টুর্নামেন্টে আরামবাগকে চ্যাম্পিয়ন করিয়েছিলেন। এবার তিনি শুধু দেশি নিয়ে গড়া আবাহনীর কঠিন সময়ে হাল ধরেছেন। নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও তার লক্ষ্য শিরোপা জয়, ‘আবাহনী সব সময় শিরোপার জন্যই খেলে। এবার পরিস্থিতি ভিন্ন থাকলেও লক্ষ্য অবিচল। লিগ ও ফেডারেশন দু’টো প্রতিযোগিতাই আবাহনী শিরোপার ফাইট দেবে।’
লিগে আবাহনীর চেয়ে তিন পয়েন্ট এগিয়ে আছে মোহামেডান। বিদেশি পরিপূর্ণ মোহামেডানের বিরুদ্ধে আবাহনী মাত্র এক গোলে হেরেছে। যদিও ম্যাচের শেষ মুহুর্তে সমতা আনার অবস্থায় ছিল। দেশি নির্ভর আবাহনীও যে শক্তিশালী সেটা পরের ম্যাচে কিংসকে হারিয়ে প্রমাণ করেছে। বিদেশি ছাড়া খেলে জয় পাওয়া নিয়ে মারুফের মন্তব্য, ‘এটা সম্পূর্ণ মানসিক ব্যাপার। আমরা সিজনের শুরু থেকেই জানি বিদেশি নেই। সেভাবে নিজেদের মানসিকভাবে তৈরি করে প্রস্তুতি নিয়েছি। অবশ্যই খেলোয়াড়দের কৃত্তিত্ব। তারা বেশ গতিশীল এবং ট্যালেন্টেড।’
লিগে এবার কাগজ-কলমে শীর্ষ ভালো দলের মধ্যে বসুন্ধরা কিংস এবং মোহামেডান। সেই দলের সঙ্গে বিদেশিদের নিয়েই দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করায় আবাহনী ও কোচ মারুফ এখন আলোচনায়। যদিও মারুফ এই আলোচনায় এখনই জড়াতে নারাজ, ‘জয় এবং সাফল্যকে আমি আলাদা ভাবে দেখি। ম্যাচ জয়ই সাফল্য নয় আমার কাছে। মাত্র লিগের চার ম্যাচ শেষ হয়েছে। সামনে আরো ১৩ ম্যাচ রয়েছে। এরপরই মূলত অনেক বিষয়ে সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যাবে।’
আরও পড়ুন
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের প্রথম লেগে আরো পাঁচ ম্যাচ বাকি রয়েছে। এরপর মধ্যবর্তী দলবদল। সেখানে বিদেশি খেলোয়াড় নিবন্ধনের সুযোগ রয়েছে। এখনো বিদেশি নিয়ে ভাবছেন না মারুফ, ‘ক্লাব থেকে এখনো এই সংক্রান্ত কোনো নির্দেশনা আসেনি। আমি মানসিকভাবে দেশিদের নিয়েই মৌসুম শেষের জন্য প্রস্তুত রয়েছি। আমার খেলোয়াড়দেরও সেভাবে তৈরি করেছি।’
মারুফুল হক দেশীয় কোচদের মধ্যে সেরা। এটা ফুটবলাঙ্গনে অনেকটাই প্রতিষ্ঠিত। আবাহনীর দেশি ফুটবলার দিয়ে চলমান পারফরম্যান্সে সেটা আরো প্রমাণিত। বসুন্ধরা কিংসের মতো শক্তিশালী দল মারুফ দেশি খেলোয়াড়দের দিয়েই কুপোকাত করেছেন। দেশি-বিদেশি অন্য কোচ-দল নিয়ে একদমই ভাবেন না মারুফ, ‘আল্লাহ’র উপর বিশ্বাস রাখি এবং নিজের উপর আত্মবিশ্বাস রয়েছে। এই দুইয়ের উপর ভর করেই আমি চলি। এর বাইরে কোনো তুলনা বা কোনো কিছুতে মনোযোগ দেই না।’
মারুফুল হক ২০১৫ সালে কেরালা সাফে জাতীয় ফুটবল দলের কোচ ছিলেন। সম্প্রতি ইংলিশ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগের ক্লাব লেস্টার সিটির হামজা চৌধুরির বাংলাদেশের হয়ে খেলার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। হামজার আগমনে বাংলাদেশ ফুটবল দলে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন এই ফুটবল বিশ্লেষক, ‘সে বাংলাদেশের জন্য একজন ইনফ্লুয়েন্সার। তার পারফরম্যান্সই অবশ্যই বাংলাদেশকে ইনফ্লুয়েন্স করবে। সেটা অবশ্যই দলে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।’
এজেড/জেএ