রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে আশা জাগিয়েও পারল না বাংলাদেশ
১৭০ রানের বড় লক্ষ্য তাড়ায় ইতিহাসটা পক্ষে ছিল না বাংলাদেশের। তবে ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে উদ্বোধনী জুটিতে ঠিকই আরেকটি ইতিহাস গড়ে ফেললেন টাইগ্রেস দুই ওপেনার সোবহানা মোস্তারি ও দিলারা আক্তার। রান তাড়ায় দারুণ শুরুতে স্বাগতিকরাও উড়ছিল।
বিনা উইকেটে শতরান পেরোনোর পর জয়টা সময়ের অপেক্ষাই ধরা হচ্ছিল। দলীয় ১০৩ রানে উদ্বোধনী জুটি ভাঙতেই যেন সব এলোমেলো হয়ে যায়। ৭ রানের ব্যবধানে পতন হয় তিন তিনটি উইকেটের। এরপর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি স্বাগতিকরা। বাংলাদেশকে ১২ রানে হারিয়ে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেল সফরকারী আয়ারল্যান্ড।
ওয়ানডে সিরিজে আইরিশ মেয়েদের সহজে হারালেও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে প্রথম ম্যাচেই বাংলাদেশকে কঠিন লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়েছিল সফরকারীরা। আজ (বৃহস্পতিবার) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে অধিনায়ক গ্যাবি লুইস ও লিয়াহ পলের ঝোড়ো ফিফটিতে নির্ধারিত ওভারে ৫ উইকেটে ১৬৯ রানের বড় পুঁজি গড়েছিল আয়ারল্যান্ড।
জবাবে ১০৩ রানের রেকর্ড ওপেনিং জুটির পরও বাংলাদেশ থেমেছে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৫৭ রানে। টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ ১৪৭ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড আছে বাংলাদেশের মেয়েদের। আজ জিততে পারলে নতুন ইতিহাস গড়তেন নিগার সুলতানা জ্যোতিরা।
বড় লক্ষ্য তাড়ায় বাংলাদেশকে দারুণ সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার দিলারা আক্তার ও সোবহানা মোস্তারি। বিনা উইকেটে ১০৩ রানের জুটি গড়েন তারা। ওপেনিংয়ে বাংলাদেশের মেয়েদের যা সর্বোচ্চ রানের জুটিরও রেকর্ড।
যদিও দুইজনই অর্ধশতক হাতছাড়া করেছেন। ৩৫ বলে ৪৬ রান করে সোবহানা আউট হয়ে যান। আরেক ওপেনার দিলারা আক্তারও এক রানের আক্ষেপে পুড়েছেন। ব্যক্তিগত ফিফটি মিসের দিনে ৪১ বলে ৪৯ রানে আউট হন তিনি। এদিন সুবিধা করতে পারেননি নিগার সুলতানা জ্যোতিও।
৭ রানের ব্যবধানে তিন উইকেট হারিয়ে হঠাৎই ব্যাকফুটে চলে যায় বাংলাদেশ। এরপর আরও বেশ কয়েকটি উইকেটের পতন হলে হারের শঙ্কা প্রবল হতে থাকে। মিডল অর্ডারের ব্যর্থতার পর জয়ের জন্য শেষ ৬ বলে প্রয়োজন ছিল ১৮ রান। ৫ রানের বেশি নিতে পারেনি স্বাগতিক ব্যাটাররা। ১৩ বলে ২৩ রানে অপরাজিত থাকা শারমিন আক্তার সুপ্তা হারেরই যেন সাক্ষী হয়ে থাকলেন।
এর আগে টস জিতে শুরুতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন আইরিশ অধিনায়ক গ্যাবি লুইস। শুরুটা যদিও তেমন ভালো হয়নি সফরকারীদের। ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই অ্যামি হান্টারকে শিকারে পরিণত করে প্রথম ব্রেকথ্রু এনে দিয়েছিলেন টাইগ্রেস পেসার জাহানারা আলম।
অন্যপ্রান্তে গ্যাবি লুইস দলের হাল ধরেন। দ্বিতীয় উইকেটে ওর্লা প্রেন্ডারগাস্টকে নিয়ে ৩০ রানের জুটি গড়েন আইরিশ কাপ্তান। ওর্লাকে শিকার করে জুটি ভাঙেন জান্নাতুল ফেরদৌস।
তারপর তৃতীয় উইকেটে লিয়াহ পলকে নিয়ে রেকর্ড জুটি গড়েন গ্যাবি লুইস। তাদের জুটি থেকে আসে ৬৪ বলে ১০৭ রান। যা টি-টোয়েন্টিতে আইরিশ মেয়েদের তৃতীয় উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি। ফারিহা তৃষ্ণার শিকার হয়ে লুইস ফিরলে ভাঙে বড় এই জুটি। সাজঘরে ফেরার আগে সাত চার ও দুই ছক্কার মারে ৪২ বলে ৬০ রান করেন গ্যাবি লুইস।
আইরিশ কাপ্তানের বিদায়ের পর দ্রুত কয়েকটি উইকেট হারিয়ে রানের গতি কিছুটা কমে যায় সফরকারীদের। শেষপর্যন্ত ২০ ওভারে আয়ারল্যান্ড সংগ্রহ করে ১৬৯ রান। দলের হয়ে ৪৫ বলে সর্বোচ্চ ৭৯ রানের ইনিংস খেলেন লিয়াহ পল। তার ইনিংসটি সাজানো ছিল ১০টি চার ও দুইটি ছক্কার মারে।
এফআই