কাল শুরু ফেডারেশন কাপ, আজ ওঠানো হচ্ছে ক্রিকেট পিচ
আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে ঘরোয়া ফুটবলে গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্ট ফেডারেশন কাপ। কুমিল্লায় শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে বসুন্ধরা কিংস ব্রাদার্স ইউনিয়নের এবং ময়মনসিংহ রফিকউদ্দিন আহমেদ ভূইয়া স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ পুলিশ-ফর্টিজ এফসির মুখোমুখি হবে। কুমিল্লা ভেন্যুতে আজ কেবল ক্রিকেট পিচ উঠানোর কাজ শুরু হয়েছে ফলে আগামীকাল বসুন্ধরা কিংস-ব্রাদার্স ইউনিয়ন ম্যাচ হবে একেবারে অপ্রস্তুত অবস্থাতেই।
কুমিল্লা স্টেডিয়ামে সম্প্রতি স্থানীয় ও প্রীতি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট হয়েছে। ফলে এত দিন বাফুফের পক্ষে পিচ উঠানো সম্ভব হয়নি। তাই আজ থেকে শুরু হয়েছে কাজ। এজন্য ব্রাদার্স ইউনিয়ন ও বসুন্ধরা কিংসের আগামীকাল ম্যাচের ভেন্যু পরিবর্তনের অনুরোধও ছিল ফেডারেশনের পক্ষ থেকে।
ব্রাদার্সের ম্যানেজার আমের খান অবশ্য কুমিল্লাতেই খেলতে অনড় অবস্থানে ছিলেন। তার যুক্তি, ‘মাঠের জন্য ফেডারেশন দেড় মাস মৌসুম পিছিয়েছে। সূচি করেছে কি মাঠ না দেখেই? মাঠ খেলার উপযোগী না থাকলে তাহলে খেলা শুরু হয়েছে কেন? সূচি অনুযায়ী যেখানে খেলা সেখানেই হবে। উভয় দলের জন্য সমান পরিস্থিতি থাকবে।’
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে দশ দল পাঁচটি ভেন্যুতে খেলবে। প্রতি ভেন্যুতে দু’টি ক্লাবের হোম। কুমিল্লার হোম ভেন্যু আবাহনী ও মোহামেডানের। দেশের সবচেয়ে বড় দুই ক্লাবের ভেন্যু এখনো অপ্রস্তুত। বিষয়টি সামগ্রিক অর্থে বিব্রতকরই। পেশাদার লিগের সাধারণ হিসেবে যে দলের ভেন্যু সেই দলের ব্যবস্থাপনাই সব।
মোহামেডানের ম্যানেজার ইমতিয়াজ আহমেদ নকীব খানিকটা ভিন্নই বললেন, ‘আসলে আমরা যারা লিগ খেলি বসুন্ধরা ছাড়া আর কারো নিজস্ব ভেন্যু নেই। ফিফা-এএফসির নিয়মের আনুষ্ঠানিকতার জন্য দেখানো হয় হোম ভেন্যু। আসলে কোনো ক্লাবেরই হোম ভেন্যু নেই, গিয়ে খেলে চলে আসে। মাঠের মূল মালিক জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। তারা বরাদ্দ দেয় ফেডারেশনকে। ফলে স্টেডিয়ামের আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব ও মাঠ প্রস্তুত ফেডারেশনের কর্তব্য। ক্লাবগুলো খেলা চলাকালীন দৈনন্দিন কিছু বিষয় দেখাশোনা করে।’ আবাহনীর কেউ আনুষ্ঠানিক বক্তব্য না দিলেও মোহামেডানের একই সুর পাশাপাশি পিচ উঠানোর দায়িত্ব ফেডারেশনের এটা তাদের স্পষ্ট অবস্থান।
আরও পড়ুন
২০১৮-১৯ মৌসুমের আগে ক্লাবগুলো বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের বাইরে অন্য ভেন্যুতে যাবতীয় কাজই করত। সেই সময় একেক ক্লাবের সামর্থ্য ও ইচ্ছে অনুযায়ী কাজ হতো। ফলে নির্দিষ্ট মান রক্ষা না হওয়ায় বড় ক্লাবগুলো অভিযোগ করত। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮-১৯ মৌসুমের পর থেকে বাফুফে মৌসুম শুরুর আগে সকল ভেন্যু নির্দিষ্ট মানদন্ডে পৌছানোর দায়িত্ব নিজ কাঁধেই নেয়। এরপর খেলা চলাকালে হোম ভেন্যু ক্লাবগুলো প্রয়োজনীয় দায়িত্ব পালন করে।
এবার চলমান মৌসুমে কুমিল্লায় বাফুফে কাজই করতে পারেনি। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বাফুফেকে লিগ ও ফেডারেশনের কাপের জন্য বরাদ্দ দিয়েছে। এর মধ্যে আবার স্থানীয় প্রশাসন ক্রিকেট ম্যাচ পরিচালনা করেছে অনুমতি নিয়েই। বাফুফে সহ-সভাপতি ওয়াহিদ উদ্দিন চৌধুরি হ্যাপি বিষয়টি সমন্বয়ের চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত আজকের আগে পিচ উঠানো যায়নি। ফলে এই মাঠ ফুটবল উপযোগী হতে আরো সময়সাপেক্ষ।
চলমান লিগে কিংস অ্যারেনা ও ময়মনসিংহের রফিকউদ্দিন আহমেদ ভূঁইয়া স্টেডিয়াম ছাড়া অন্য দুই ভেন্যু মুন্সিগঞ্জ, গাজীপুর। দুই ভেন্যুতে ইতোমধ্যে লিগের খেলা শুরু হয়েছে একেবারে অপ্রস্তুত মাঠে। মাঠ প্রস্তুত না করেই মৌসুম শুরু কেন? স্বাভাবিকভাবেই ফুটবলাঙ্গনে প্রশ্ন উঠেছে। এই প্রশ্নের উত্তর ফেডারেশনের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ সরাসরি দেননি।
জানা গেছে, নতুন কমিটি নির্দিষ্ট সূচিতেই খেলা পরিচালনা করতে চেয়েছিল কিন্তু মাঠ প্রস্তুত করতে প্রয়োজনীয় অর্থ ফেডারেশনের ছিল না। শেষ মুহুর্তে সভাপতি তাবিথ আউয়াল অর্থ দেয়ায় সপ্তাহ খানেক আগে মুন্সিগঞ্জ ও গাজীপুর কাজ শুরু হয়। সময় কম থাকায় অপ্রস্তুত অবস্থাতেই খেলা শুরু হয়েছে। এতে বাফুফের নতুন কমিটির পরিকল্পনাহীনতা ও পেশাদারিত্ব শুরুতেই প্রশ্ন উঠছে।
এজেড/জেএ