আইপিএলের নিলামে টাকার ঝড়, যার যত লাভ-ক্ষতি
অর্থ আর আয়োজনের জৌলুসে ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টগুলোর প্রতিযোগিতায় ঢের এগিয়ে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)। আসন্ন অষ্টাদশ আসরের আগে মেগা নিলামে সেটাই প্রমাণ পেল আরেকবার। যদিও এখনও বাকি একদিনের নিলাম। তবে প্রথম দিনেই প্রায় সব বড় অঙ্কের খরচ করে ফেলেছে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। নিলামে ৫৭৭ ক্রিকেটার থাকলেও, কেবল ৮৪ জনের নাম তুলতেই খরচ ৪৬৭.৯৫ কোটি রুপি। আর বাকি ১৭৩.৫৫ কোটি।
নিলামের প্রথমদিন ৮৪ জনের নাম ডাকা হলেও, এর মধ্যে দল পান ৭২ জন। অর্থাৎ, ১২ জন অবিক্রিত থেকে গেছেন, এর মধ্যে ডেভিড ওয়ার্নার এবং জনি বেয়ারস্টোর মতো বড় নামও রয়েছে। প্রথম দিনই দলগুলো তাদের চাহিদায় থাকা প্রায় সব বড় ক্রিকেটারদের কিনে ফেলেছে। দ্বিতীয় দিন স্বাভাবিকভাবেই ক্রিকেটারদের সেভাবে দাম দেওয়ার সুযোগ নেই। তবে প্রথমদিন টাকার ঝড়ে অনেকের দাম আগের চেয়ে বেশ ওঠা-নামা করেছে।
তুমুল দাম বেড়েছে দুই ভারতীয় তারকা ব্যাটার ঋষভ পান্ত এবং শ্রেয়স আইয়ারের। দুজনই ইতিহাস গড়ে ফেলেছেন গতকাল। মার্কি ক্রিকেটারদের তালিকা থেকে প্রথমে পাঞ্জাব কিংস ২৬.৭৫ কোটিতে কিনে নেয় শ্রেয়াশ আইয়ারকে। যা আইপিএল ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দাম। এর আগে ২০২২ সালে কলকাতা নাইট রাইডার্স তাকে ১২.২৫ কোটিতে কিনেছিল। অর্থাৎ, আগের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি মূল্য বেড়েছে শ্রেয়াসের। অন্যদিকে, খানিক বাদেই তাকে পেছনে ফেলে ইতিহাস গড়েন পান্ত। দিল্লিতে ১৬ কোটি রুপিতে খেলা এই বাঁ-হাতির দাম এবার ২৭ কোটি রুপি। পান্তকে নিয়েছে লখনৌ সুপার জায়ান্টস।
আইপিএলের গত আসরে মিনি নিলামেই ঝড় তুলে ইতিহাসের সর্বোচ্চ ২৪.৭৫ কোটি রুপিতে অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্ককে দলে ভেড়ায় কলকাতা। এবার এই বাঁ-হাতি পেসারকে দিল্লি ক্যাপিটালস ১১.৭৫ কোটি রুপিতে কিনেছে। অর্থাৎ গতবারের চেয়ে ১৩ কোটি টাকা কমে বিক্রি হলেন স্টার্ক। তার দাম করলেও, ভারতীয় পেসার শামির দাম বাড়ল তুলনামূলক। ২০২২ সালের নিলামে ৬.২৫ কোটি রুপি পারিশ্রমিক পাওয়া এই ডানহাতি পেসারের এবার দাম উঠল ১০ কোটি রুপি। শামিকে কিনেছে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ।
একইভাবে দাম বেড়েছে বেঙ্কটেশ আইয়ার ও জস বাটলারদের। ২০২১ সালে কলকাতা তাকে মাত্র ২০ লাখ রুপিতে কিনেছিল। পরের বছর ৮ কোটি রুপি দিয়ে তাকে শাহরুখ খানের দলটি ধরে রাখে। এবারও কলকাতাই তার দাম নিলামে বাড়াতে বাড়াতে ২৩.৭৫ কোটিতে গিয়ে থেমেছে। যা রিটেনশনে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুতে থেকে যাওয়া বিরাট কোহলির (২১ কোটি) চেয়েও বেশি। রাজস্থান রয়্যালসে গত আসরে ১০ কোটি রুপিতে খেলা ইংল্যান্ড অধিনায়ক বাটলারকে এবার গুজরাট টাইটান্স ১৫.৭৫ কোটি রুপতে কিনেছে।
আরও পড়ুন
সতীর্থদের দাম বৃদ্ধির অঙ্ক দেখতে গিয়ে নিজের পারিশ্রমিক কমে গেছে লোকেশ রাহুল ও ঈশান কিষাণের। লখনৌকে গত আসরে নেতৃত্ব দেওয়া রাহুলের আগের মূল্য ছিল ১৭ কোটি, এবার তাকে ১৪ কোটি রুপিতে কিনেছে দিল্লি ক্যাপিটালস। ২০২২ সালের নিলামে সবচেয়ে বেশি টাকা পেয়েছিলেন ঈশান। ১৫.২০ কোটি রুপি দিয়ে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স কিনেছিল তাকে। সেই উইকেটরক্ষক ব্যাটারকে এবার হায়দরাবাদ ১১.২৫ কোটি রুপিতে কিনেছে।
ভারতীয় পেসারদের মধ্যে দাম বেড়েছে আর্শদীপ সিংয়ের। মাত্র ৪ কোটি টাকায় তাকে কিনেছিল পাঞ্জাব কিংস। এবারও সেই দলই তাকে ১৮ কোটি রুপিতে (রাইট টু ম্যাচ নিয়মে) ফিরিয়ে নিয়েছে। দাম বেড়েছে পেসার মোহাম্মদ শামিরও। ২০২২ সালে ৬.২৫ কোটিতে গুজরাটের হয়ে খেলা এই পেসারকে এবার হায়দরাবাদ কিনেছে ১০ কোটি রুপি দিয়ে। আরেক ভারতীয় পেসার মোহাম্মদ সিরাজেরও দাম বেড়েছে। ৭ কোটি রুপিতে তাকে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু কিনেছিল ২০২২ সালে। এবার গুজরাট কিনলো ১২.২৫ রুপির বিনিময়ে।
এএইচএস