আইপিএল নিলামে নজরে ফিজ-তাসকিন, সাকিবসহ বাকিদের সম্ভাবনা কতটা?
দু’দিনব্যাপী ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) জমজমাট মেগা নিলাম শুরু হচ্ছে আর কিছুক্ষণ পর। বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টায় সৌদি আরবের জেদ্দায় শুরু হবে নিলাম আয়োজন। খেলোয়াড় দলে ভেড়াতে লড়বে ১০ ফ্র্যাঞ্চাইজি। নিলাম অনুষ্ঠানে চোখ থাকবে বিশ্বের ক্রিকেটপ্রেমীদের। বাংলাদেশি ক্রিকেট ভক্তদের নজরে থাকবে ১২ টাইগার ক্রিকেটারও।
সাধারণত প্রতি তিন বা চার বছর পরপর আইপিএলের মেগা নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। এবার অবশ্য দুই বছর পরই হচ্ছে সেটি। এবারের মেগা নিলামের জন্য নাম নিবন্ধন করেছিলেন ১৫৮৪ ক্রিকেটার। সেখান থেকে ৫৭৪ জন ক্রিকেটারকে চূড়ান্ত করেছে আইপিএল কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে বাংলাদেশের ১২ জন ক্রিকেটার আছেন। অন্য যেকোনো বারের তুলনায় এবারের সংখ্যা কিছুটা বেশি। চূড়ান্ত তালিকায় ভারতের ৩৬৬ জন এবং বিদেশি ক্রিকেটার আছে ২০৮ জন। বিদেশিদের মধ্যে আইসিসির সহযোগী সদস্য দেশগুলো থেকে আছেন ৩ জন।
বাংলাদেশ থেকে ১২ জন হচ্ছেন- সাকিব আল হাসান, মুস্তাফিজুর রহমান, লিটন দাস, তাওহিদ হৃদয়, মেহেদি হাসান মিরাজ, রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, তানজিম হাসান সাকিব, শেখ মাহেদি হাসান, হাসান মাহমুদ ও নাহিদ রানা। এদের মধ্যে আইপিএলে খেলার অভিজ্ঞতা আছে সাকিব, মুস্তাফিজ ও লিটনের। সাকিব ৯, মুস্তাফিজ ৭ এবং লিটন এক মৌসুম আইপিএলে খেলেছেন।
২০১১ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে সাত মৌসুম খেলেছেন সাকিব। এরমধ্যে ২০১২ ও ২০১৪ সালে কলকাতার শিরোপা য়ী দলে সদস্য ছিলেন সাকিব। এ ছাড়া সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে দুই মৌসুম খেলেন তিনি।
আরও পড়ুন
২০১৬ সালে আইপিএলে অভিষেকের পর সানরাইজার্স হায়দরাবাদ, মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স, দিল্লি ক্যাপিটালস ও রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে খেলেছিলেন মুস্তাফিজ। গত বছর সর্বশেষ আসরে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে খেলেছেন ফিজ। ২০২৩ সালে কলকাতার হয়ে খেলেছেন লিটন। মাত্র এক ম্যাচ খেলার পর আর সুযোগ পাননি এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটার।
বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ২ কোটি রুপি ভিত্তিমূল্য ক্যাটাগরিতে আছেন মুস্তাফিজ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভিত্তিমূল্য ১ কোটি রুপির ক্যাটাগরিতে আছেন সাকিব, তাসকিন ও মিরাজ। ভিত্তিমূল্য ৭৫ লাখ রুপির ক্যাটাগরিতে আছেন- লিটন, রিশাদ, হৃদয়, শরিফুল, শেখ মেহেদী, তানজিম, হাসান ও রানা।
বাংলাদেশি ১২ ক্রিকেটারের ভাগ্যে কি আছে?
বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে চর্চায় থাকবেন মুস্তাফিজুর রহমান। সাকিব আল হাসানের পাশাপাশি আইপিএলে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। সর্বশেষ আসরে ছিলেন চেন্নাই সুপার কিংসে। সানরাইজার্সের হয়ে আইপিএল শিরোপা জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। ২০১৬ সালে ১৬ ম্যাচে ১৭টি উইকেট নিয়েছিলেন। চেন্নাইয়ের হয়েও ৯ ম্যাচে ১৪ উইকেট ছিল তার পকেটে। এবার ২ কোটি ভিত্তিমূল্যে আছেন টাইগার এই পেসার। বোলিংয়ে কিছুটা ধার কমলেও কাটার মাস্টারকে নিয়ে আগ্রহ দেখাতে পারে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো।
মুস্তাফিজের তুলনায় সাকিব আল হাসানের ভবিষ্যৎ নিয়ে একটু ধোঁয়াশা থাকছেই। মাঠের বাইরে নানা কর্মকাণ্ডে আলোচিত টাইগার অলরাউন্ডারের ফর্মটা ফিকে হয়ে এসেছে অনেকটাই। অবশ্য চলমান আবুধাবি টি-টেনে বল হাতে ছন্দে ফিরেছেন সাকিব। বাংলাদেশ থেকে এবার দল পাওয়ার একটা সম্ভাবনা আছে পেসার তাসকিন আহমেদের। দেশের সেরা এই গতি তারকা এর আগে বিভিন্ন দল থেকে ডাক পেলেও বিসিবির ছাড়পত্র না পাওয়ায় খেলতে পারেননি। এবার তেমন বাধা নেই বলেই মনে করা হচ্ছে।
এ ছাড়া নবীন স্পিডস্টার নাহিদ রানাকে নিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটেই এখন আগ্রহ তৈরি হয়েছে। তবে সেটা আইপিএলে দল পাওয়ার জন্য যথেষ্ট কি না- বলা মুশকিল। লেগ স্পিনার রিশাদের সম্ভাবনা দেখছেন অনেকে। তবে গত ভারত সফরে রিশাদ মোটেও ভালো করতে পারেননি। ৩ ম্যাচে উইকেট পেয়েছেন ৩টি, রান দিয়েছেন ওভারপ্রতি ১৪.১১ করে।
বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তা আছে আরেক জায়গায়। যেখানে কোনো দলের আগ্রহ না থাকলে নিলামের টেবিলেই ওঠানো হবে না ক্রিকেটারদের নাম। মূলত নতুন ধরণের অ্যাক্সিলারেটেড অকশনের কারণেই হচ্ছে এমন কিছু।
মেগা অকশনে ৫৭৪ জন ক্রিকেটারের নাম থাকলেও তাদের সবাইকে যে উপস্থাপন করা হবে এমনটা নয়। বিষয়টি অনেক বেশি সময়সাপেক্ষ হতে পারে। আর সময়ের ব্যপ্তি কমিয়ে আনতে চায় বিসিসিআই। আর এখানেই কাজে আসবে অ্যাক্সিলারেটেড অকশন। ১১৬ জন ক্রিকেটারের নাম উপস্থাপন করার পর এই প্রক্রিয়াটি ব্যবহার করা হবে।
এফআই