গতিশীলতা ও স্বচ্ছতায় জোর
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ গতকাল নয়টি ফেডারেশনের বিদ্যামন কমিটি ভেঙে অ্যাডহক কমিটি গঠন করেছে। ফুটবল, ক্রিকেট বাদে দেশের বাকি সকল ফেডারেশন মূলত সাধারণ সম্পাদক নির্ভর। গতকাল ঘোষিত নয়টি ফেডারেশনে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কয়েকজন আছেন প্রথমবারের মতো আবার কয়েকজন দীর্ঘবিরতির পর দায়িত্ব পেয়েছেন। নতুন-পুরাতন সবার বক্তব্য প্রায় একই, ‘স্বচ্ছতার সঙ্গে কর্মকান্ড চলমান রেখে খেলার সামগ্রিক মান উন্নয়ন।’
মাদার অফ অল ডিসিপ্লিন হিসেবে খ্যাত অ্যাথলেটিক্স। সাবেক দ্রুততম মানব ও কোচ শাহ আলম আবার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন। পুনরায় অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের গুরুত্বপূর্ণ চেয়ারে বসে সাবেক এই তারকা অ্যাথলেট বলেন, ‘গত তিন মাস অ্যাথলেটিক্স একেবারে স্থবির। আমাদের প্রথম লক্ষ্য থাকবে জাতীয় অ্যাথলেটিক্স আয়োজন করা। সেই প্রতিযোগিতা থেকে মেধাবীদের নিয়ে দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণ।’
ক্রিকেট ছাড়া দেশের অন্য কোনো ফেডারেশনই স্বচ্ছল নয়। আর্থিক অনটন অনেক। বুদ্ধিনির্ভর খেলা দাবার সাধারণ সম্পাদক ফিদে মাস্টার তৈয়বুর রহমান সুমন। সরকারের এই যুগ্ম সচিবের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের চেয়ে চিন্তা অর্থ সংস্থান নিয়ে, ‘দাবা উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা এবং সেটা কিভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে এটা আমাদের অনেকেরই জানা। সমস্যাটা হচ্ছে অর্থের সংস্থান নিয়ে।’
সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সেই চ্যালেঞ্জটা এখন নিজের কাঁধেই নিলেন, ‘আমার যোগাযোগ ও সামর্থ্যরে মাধ্যমে দাবায় অর্থ আনার চেষ্টা করব। কমিটির সবাই মিলে কাজ করলে আশা করি দাবায় সুন্দর একটি পরিবেশ হবে। দাবা ফেডারেশনে দাবাড়ু–রাই প্রাধান্য পাবে।’
বাংলাদেশের দাবার অন্যতম সেরা সংগঠক সৈয়দ সুজাউদ্দিন আহমেদ। তার আমলেই বাংলাদেশের চার গ্র্যান্ডমাস্টারের সৃষ্টি। গত দেড় যুগ তিনি দাবা ফেডারেশন থেকে দূরে ছিলেন। সত্তর উর্ধ্ব বয়সে আবার ফেডারেশনের সভাপতির দায়িত্ব নিতে হয়েছে, ‘সরকার আবার দায়িত্ব দিল। চেষ্টা থাকবে খেলা সচল রেখে যতটুকু মান উন্নয়ন সম্ভব হয়। ’
বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় খেলা হলেও বাংলাদেশে টেনিস তেমন আলোচিত নয়। টেনিস ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসতিয়াক আহমেদ কারেন পুনরায় সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। টেনিসের আদি-অন্ত জানা এই সংগঠকের লক্ষ্য, ‘টেনিস কোর্টে সার্বক্ষণিক খেলা রাখার পাশাপাশি তৃণমূল পর্যায় থেকে খেলোয়াড় তুলে আনা। জাতীয় দল বা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দল প্রেরণের ক্ষেত্রে বাছাইয়ের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা অনুসরণ করার চেষ্টাও থাকবে।’
বিলিয়ার্ড ও স্নুকার্স খেলা ব্যক্তিগত পর্যায়ে বেশ জনপ্রিয় হলেও ফেডারেশন এই খেলাটি তেমন প্রচার-প্রসার ঘটাতে পারেনি। এই ফেডারেশনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বিলিয়ার্ড অনুরাগী ও ব্যবসায়ী রিয়াসাত করিম ভূইয়াকে। নিজ উদ্যোগে রিয়াসাত অনেক দিন থেকেই বিলিয়ার্ড খেলোয়াড়দের সাহায্য-সহযোগিতা করে আসছেন। এবার আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব পাওয়ায় তার স্বপ্নের পরিধিও বেড়েছে, ‘বিলিয়ার্ড-স্নুকার্স আমার ধ্যানজ্ঞান। বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে চাই। ঢাকার বাইরেও অনেক জেলায় বিলিয়ার্ডের সংস্কৃতি রয়েছে। সেগুলো বিকশিত করে নিয়মিত টুর্নামেন্ট করার ইচ্ছে রয়েছে।’
ব্রিজ, বাস্কেটবল, কাবাডি ও হকি এই চার ফেডারেশনে প্রথমবারের মতো সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন মনোনীতরা। স্কোয়াশ ফেডারশেনে সাধারণ সম্পাদক পদে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম রয়েছেন। স্কোয়াশ ফেডারেশনের লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিক নিয়ে ভাবনা আগেই ছিল। নতুন কমিটির মাধ্যমে সেই ভাবনা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে চান।
এজেড/জেএ