ওসাসুনাকে পেয়ে ঝাল মেটাল রিয়াল, ভিনিসিয়ুসের হ্যাটট্রিক
রিয়াল মাদ্রিদ ৪ : ০ ওসাসুনা
ঘরের মাঠে পরপর দুই ম্যাচে রীতিমত বিধ্বস্ত হয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। বার্সেলোনার কাছে ৪-০ গোলের হারের ক্ষত না শুকোতেই এসি মিলানের কাছে ৩-১ গোলের পরাজয়। রিয়াল মাদ্রিদের কোচের পদে কার্লো অ্যানচেলত্তি থাকবেন না এমন গুঞ্জনে সয়লাব ছিল ইউরোপের প্রভাবশালী দৈনিকগুলো।
এমন এক বিপর্যস্ত অবস্থা থেকে উঠে আসতে রিয়াল মাদ্রিদের দরকার ছিল বিশেষ কিছু। রিয়াল যেন তেঁতে ছিল এই ম্যাচের আগে। তাদের সেই আগ্রাসী মনোভাবে পুড়ে ছাই হয়েছে ওসাসুনা। লা লিগার ম্যাচে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের হ্যাটট্রিকের সুবাদে রিয়াল জয় পেয়েছে ৪-০ গোলের বড় ব্যবধানে। ম্যাচে অন্য গোল পেয়েছেন জ্যুড বেলিংহাম।
রিয়ালের চার গোল আর ভিনি জুনিয়রের হ্যাটট্রিক ছাড়াও রিয়াল মাদ্রিদ এই ম্যাচে দেখেছে তিন ইনজুরি। ম্যাচের ২০ মিনিটের মাথায় হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে পড়েন ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার রদ্রিগো। এই ম্যাচের মধ্যে দিয়েই কামব্যাক করেছিলেন। সেটার স্থায়ীত্ব থাকল কেবল ২০ মিনিট। ব্রাহিম দিয়াজকে এরপরেই নামিয়েছিল রিয়াল।
আরও পড়ুন
এরপরেই আরও বিপর্যস্ত অবস্থা। এবারে ইনজুরিতে পড়লেন রিয়ালের ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার এদের মিলিতাও। তাকে অবশ্য মাঠ ছাড়তে হয়েছে স্ট্রেচারে শুয়ে। মাঠ ছাড়ার সময়েই জার্সিতে মুখ ঢেকে রেখেছিলেন। হাঁটুর এসিএল ইনজুরিতে আক্রান্ত বলেই ধারণা করা হচ্ছে। এই দুই ইনজুরির পরেই অবশ্য শুরু রিয়ালের গোল উৎসবের।
প্রথম গোল ভিনিসিয়ুসের। চলতি মৌসুমে নিজেকে হারিয়ে খুঁজছিলেন গত মৌসুমে লা লিগার সেরা খেলোয়াড় বেলিংহাম। ইংলিশ এই মিডফিল্ডারের বুদ্ধিদীপ্ত পাস থেকে বামপ্রান্তে দুই ডিফেন্ডারকে পরাস্ত করে কাছের পোস্টে শট নেন ভিনি। ব্রাজিলিয়ান এই স্ট্রাইকারের প্রথম গোলটা এলো সহজেই।
৪২ মিনিটে বেলিংহাম পেলেন মৌসুমে নিজের প্রথম গোল। মিলিতাওয়ের বদলি নামা রাউল অ্যাসেন্সিও ডিফেন্স থেকে দিয়েছেন দারুণ এক থ্রু পাস। অসাধারণ এক রান দিয়েছিলেন বেলিংহাম। এগিয়ে আসা গোলরক্ষককে পরাস্ত করতে দরকার ছিল একটা টাচ। দারুণ এক চিপে ইংলিশ মিডফিল্ডার আনন্দে ভাসালেন সান্তিয়াগো বার্নাব্যু স্টেডিয়ামকে।
বিরতির পরে লুকাস ভাস্কেজকে ইনজুরির কারণে মাঠে নামাননি কোচ অ্যানচেলত্তি। নামলেন লুকা মদ্রিচ। কামাভিঙ্গাকে রাইটব্যাকে শিফট করে ফেদে ভালভার্দেকে করা হলো ডিপ লায়িং মিডফিল্ডার। রিয়ালের মাঝমাঠ তাতে হলো আরও শক্ত। ওসাসুনার ম্যাচে ফেরার উপায়টাই ছিল না আর।
৬১ মিনিটে গোলরক্ষক আন্দ্রেই লুনিনের বুদ্ধিদীপ্ত পাস। ভিনিসিয়ুস দৌড়ে বল রিসিভ করলেন। পাশ কাটালেন ওসাসুনা গোলরক্ষককে। এরপর ‘নো লুক শট’ থেকে পেলেন নিজের দ্বিতীয় গোল। খানিক পরেই এমবাপের বাড়ানো বলে দুর্বল শট ভিনির। সেটা থেকে গোল আসেনি। ৬৮ মিনিটে ভালভার্দের দুর্দান্ত শট ফিরিয়ে দিয়েছিলেন ওসাসুনা গোলরক্ষক হেরেরা। তবে পরের মিনিটেই গোল হজম করতে হয় তাকে। ব্রাহিম দিয়াজের নিঃস্বার্থ পাস থেকে গোল করে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন ভিনি জুনিয়র।
গত কয়েক ম্যাচে এন্ড্রিক এবং আর্দা গুলারকে সুযোগ না দিয়ে সমালোচনার শিকার হয়েছিলেন কোচ অ্যানচেলত্তি। আজ মাঠে নামালেন দুজনকেই। তাদের কেউ গোল না পেলেও অবশ্য সমস্যা হয়নি রিয়ালের। পুরো ম্যাচেই নিষ্প্রভ ছিল ওসাসুনা। শেষে এসেও ভাগ্য বদল হয়নি তাদের। ৪-০ গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে লা লিগার দুইয়ে থাকা রিয়াল মাদ্রিদ।
জেএ