৬ ঘণ্টা ধরে রোহিত-গম্ভীরকে ‘জিজ্ঞাসাবাদ’
এক মাস আগেও ছবিটা অন্য রকম ছিল। মাঠের ক্রিকেটে দোর্দণ্ড প্রতাপে যেন উড়ছিল ভারত। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষস্থানে নিজেদের জায়গা পাকাপোক্ত করেছিল রোহিত শর্মার দল। দ্বিতীয় স্থানে থাকা অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ব্যবধান ক্রমেই বাড়ছিল। ঘরের মাটিতে কদিন আগে বাংলাদেশকে সিরিজ হারিয়ে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের ফাইনালের দুয়ারে ছিল ভারত।
কিন্তু নিউজিল্যান্ড সিরিজটাই যেন ভারতের সব অঙ্ক বদলে দিলো। ঘরের মাঠে কিউইদের কাছে তিন ম্যাচ সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে স্বাগতিকরা। সেই সঙ্গে ২৪ বছর পর নিজেদের দুর্গে টেস্ট সিরিজে ধবলধোলাইয়ের স্বাদ পায় টিম ইন্ডিয়া।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে অপ্রত্যাশিত হোয়াইটওয়াশ ভারতীয় ক্রিকেটকে বেশ ভালোরকম নাড়িয়ে দিয়েছে। সেটা স্পষ্ট দেশটির ক্রিকেট বোর্ড কর্মকর্তাদের মনোভাবেও। ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, কিউই সিরিজে ভরাডুবির ময়নাতদন্তে নেমেছে বোর্ড। সম্প্রতি কোচ গৌতম গম্ভীর এবং অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে তলব করা হয়েছিল। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচক কমিটির প্রধান অজিত আগারকর, বোর্ড সচিব জয় শাহ ও প্রেসিডেন্ট রজার বিনি।
ম্যারাথন বৈঠকে একের পর এক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে রোহিত-গম্ভীরদের। দ্রাবিড়ীয় দর্শন ভুলে গম্ভীর যুগে পা রাখা ভারতীয় দলের শুরুটা মোটেই ভালো হয়নি। আর সেটার জন্য অনেকেই দায়ী করছেন গুরু গম্ভীরের ‘একগুয়েমি’কে। সূত্রের খবর, গম্ভীরের নেওয়া বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে ওই বৈঠকে প্রশ্ন তুলেছেন বোর্ড কর্মকর্তারা।
বোর্ড কর্তাদের প্রশ্ন, সিরিজে ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ার পরও কেন মুম্বাই টেস্ট জসপ্রীত বুমরাহকে বিশ্রাম দেওয়া হলো? পুণেতে স্পিনের সামনে ধরাশায়ী হওয়ার পরও কেন মুম্বাইয়ে স্পিন সহায়ক পিচ তৈরি করা হলো কেন? পিচ নিয়ে গম্ভীরের ‘ফরমায়েশ’ করার প্রবণতা নিয়েও বোর্ড কর্তারা প্রশ্ন তুলেছেন বলে সূত্রের দাবি।
সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বোর্ডের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ‘ছয় ঘণ্টার ম্যারাথন বৈঠক হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া সফরের আগে ভারতীয় দলকে ত্রুটিমুক্ত করার বিষয় নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়। দল কীভাবে আবার ছন্দে ফিরতে পারে, তা জানতে চাওয়া হয় কোচ এবং অধিনায়কের কাছে।’
বুমরাহকে বিশ্রাম দেওয়া নিয়ে ওই কর্মকর্তা বলছেন, ‘হতে পারে বাড়তি ঝুঁকি না নিতেই বুমরাহকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল, তবে বৈঠকে সেই প্রসঙ্গ নিয়েও আলোচনা হয়েছে। উইকেটের চরিত্র বদল নিয়েও কথাবার্তা হয়েছে।’
বৈঠকে নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান, কোচ এবং অধিনায়কের কাছে জানতে চাওয়া হয়, এই ব্যর্থতার ধাক্কা সামলে কীভাবে দল ঘুরে দাঁড়াতে পারে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে। শোনা গিয়েছে, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বিশেষজ্ঞ নীতীশ কুমার রেড্ডি এবং হার্ষিত রানার মতো ক্রিকেটার রঞ্জি ট্রফিতে মাত্র দশটি ম্যাচ খেলে কী করে টেস্ট দলে ঢোকেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
এফআই