হোয়াইটওয়াশ এড়াতে ছোট তবে ‘কঠিন’ লক্ষ্য পেল ভারত
স্পিন ফাঁদ বানিয়ে আগের দুই ম্যাচে সাফল্য পায়নি ভারত। যে কারণে এক যুগ পর ঘরের মাঠে তারা টেস্ট সিরিজ খুইয়েছে। হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর লক্ষ্যেও তারা একই কন্ডিশন বানিয়ে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তৃতীয় টেস্ট খেলতে নামে মুম্বাইয়ে। তাই স্বাভাবিকভাবে তৃতীয় দিনেই ম্যাচটির ফল আসার পথে। তবে ১৪৮ রানের ছোট লক্ষ্য পেলে রহস্যময় পিচ ভারতকে স্বস্তিতে থাকতে দিচ্ছে না!
মুম্বাইয়ের ওয়ানখেড়ে স্টেডিয়ামে গতকাল দ্বিতীয় দিন শেষে নিউজিল্যান্ড ৯ উইকেটে ১৭১ রান তুলেছিল। আজ (রোববার) তৃতীয় দিনে খেলতে নেমে তার খেলেছে কেবল ৮ বল। দিন শুরুর ১৪ মিনিটেই গুটিয়ে যায় সফরকারীদের ইনিংস। ১৭৪ রান তুললেও ভারতের (২৮) লিড পেরিয়ে তাদের পুঁজি দাঁড়িয়েছে ১৪৬ রানের। তবে স্পিন ফাঁদে ভুল করলেই পা ফসকাতে হবে রোহিত শর্মাদের।
কিউইদের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫১ রান করেছেন উইল ইয়াং। যদিও দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করতে নেমেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে টম ল্যাথামের নিউজিল্যান্ড। যার শুরুটা করেছেন অধিনায়ক নিজেই। নিজেদের ইনিংসের পঞ্চম ডেলিভারিতেই আকাশ দ্বীপ তাকে বোল্ড করে প্যাভিলিয়নে ফেরান। তখন দলীয় রান হয়েছিল মাত্র ২, অর্থাৎ ভারতের চেয়ে ২৬ রানে পিছিয়ে। এভাবে ৪৪ রান পর্যন্ত নিয়মিত বিরতিতে আরও ২ উইকেট হারায় সফরকারীরা। ডেভন কনওয়ের (২২) পর রাচিন রবীন্দ্রও (৪) প্রথম ইনিংসের মতোই ব্যর্থ।
চতুর্থ উইকেট জুটিতে উইল ইয়াং ও ড্যারিল মিচেল মিলে দলীয় খাতায় ৫০ রান যোগ করেন। ধারণা করা হচ্ছিল– ভারতকে আরেকটি হতাশা উপহার দিতে যাচ্ছে ইয়াং-মিচেল জুটি। তবে মিচেলের (২১) বিদায়ে ভাঙে সেই আশা। রবীন্দ্র জাদেজাকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ওপরে তুলে দেন এই ডানহাতি ব্যাটার, যা পেছনের দিকে দৌড়ে দারুণ এক ক্যাচে পরিণত করেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। মাঝে গ্লেন ফিলিপ্স ঝোড়ো ইনিংস খেললেও আর কেউ ইয়াংকে যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেননি। ফিলিপ্স ১৪ বলে করেন ২৬ রান। টানা দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যক্তিগত ফিফটি করেছেন ইয়াং। ১০০ বলে ২টি চার ও এক ছক্কায় তিনি ৫১ রান করে বিদায় নেন।
এ নিয়ে দুটি ইনিংসেই ফাইফার নিয়েছেন রবীন্দ্র জাদেজা। যা তার টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথমবার। দুই ইনিংস মিলিয়ে ১২০ রানে নিয়েছেন ১০ উইকেট। যা তার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বোলিং ফিগার। সেরা ফিগার ১১০/১০ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দিল্লিতে। এ ছাড়া দ্বিতীয় ইনিংসে রবিচন্দ্রন অশ্বিন নিয়েছেন ৩ উইকেট।
ভারতের সামনে লক্ষ্যটা ছোট হলেও বেশ কঠিনই হতে পারে। ওয়ানখেড়ে স্টেডিয়ামে টেস্টে এর আগে পাঁচবার রান তাড়া করতে নেমে ভারত জিততে পেরেছে মাত্র একবার। আর হেরেছে তিনবার। ড্র করেছে একটিতে। ১৯৮৪ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়টা এসেছিল আবার মাত্র ৪৮ রানের লক্ষ্য পেরিয়ে। অন্য চারটি ম্যাচেই অবশ্য লক্ষ্যটা ২৪০ রানের বেশি ছিল।
সবমিলিয়ে ওয়ানখেড়ে স্টেডিয়ামেই রানতাড়া করে জয়ের নজির আছে মোটে ৫ বার। তার মাঝে কেবল একবারই ১০০ এর বেশি টার্গেটে ব্যাট করে কোনো দল জয় পেয়েছে। যার অর্থ, জিততে হলে ভারতকে কিছুটা ইতিহাস গড়েই জয় তুলে আনতে হবে।
এএইচএস