সিলেট স্ট্রাইকার্স থেকে মাশরাফিকে বাদ দিতে আল্টিমেটাম
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) আসন্ন একাদশ আসরেও সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাকে দলে ভিড়িয়েছে সিলেট স্ট্রাইকার্স। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের সংসদ সদস্য হওয়ার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণের ঘটনায় নীরব থাকায় তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছে। সিলেটের সেই বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা তাকে দল থেকে বাদ দিতে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজিটিকে।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে সিলেট নগরীর রিকাবিবাজার জেলা স্টেডিয়ামের গেইটের সামনে ‘সিলেটের শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে মাশরাফি বিন মুর্তজার জার্সি ও কুশপুত্তলিকায় আগুন দেন শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে বিপিএলে যেন সিলেটের জার্সিতে তাকে খেলতে না দেওয়া হয় এই দাবিতে আল্টিমেটাম ঘোষণা করা হয়েছে।
এ সময় সিলেট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও শিক্ষার্থীরা জানান, মাশরাফি বিন মর্তুজা ছিল বাংলাদেশের মানুষের কাছে ভালোবাসা ও আবেগের জায়গা। কিন্তু যখন খুনি হাসিনা আমাদের ভাই-বোনদের গুলি করে নির্বিচারে হত্যা করেছে, তখন তার প্রতিবাদ না করে নীরব ভূমিকা পালন করেছে। খুনি হাসিনাকে সমর্থন দিয়েছে। যা আমাদের ও দেশের ওপর অবিচার। তার এই বিশ্বাসঘাতকতা আমরা কোনোভাবে মেনে নেব না। হুঁশিয়ারি করে বলে দিতে চাই আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সিলেট স্ট্রাইকার্স দল থেকে মাশরাফিকে বাদ না দিলে আমরা কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলব। সেই সাথে সিলেট স্ট্রাইকার্সকেও বয়কট করা হবে।
আরও পড়ুন
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েরর শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলেনর সমন্বয়ক হাফিজুল ইসলাম বলেন, মাশরাফি বিন মর্তুজা ক্রিকেটার থাকাকালে আমরা তাকে সম্মান করতাম ও ভালবাসতাম। কিন্তু যখন মানুষ দেশের স্বার্থে মাঠে নেমে আসে, তখন মাশরাফি আমাদের পক্ষে থাকেননি। তিনি ফ্যাসিস্টদের সহযোগী হয়ে আমাদের বিরুদ্ধে অবস্থান করেছেন। দেশের মানুষ তাকে ভালবাসতো, কিন্তু তিনি ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিরুদ্ধে ও ফ্যাসিস্টদের পক্ষ নিয়েছে। হাজার হাজার ভাই-বোনদের রক্তের বিনিময়ে আমরা দ্বিতীয়বার স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আমাদের এই স্বাধীন দেশে ফ্যাসিস্টদের কোনো দোসর থাকতে পারবে না।
তিনি আরও বলেন, আমারা ঘোষণা করতে চাই যে, মাশরাফি সিলেটে আসতে পারবেন না। শাহজালালের পূণ্যভূমিতে আওয়ামী লীগের কোনো দোসরদের ঢুকতে দেওয়া হবে না। সিলেট স্ট্রাইকার্সকে আমরা হুঁশিয়ার করে দিচ্ছি তারা যেন আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মাশরাফিকে সরিয়ে দল পুনর্গঠন করে।
প্রসঙ্গত, আগামী ২৮ ডিসেম্বর বিপিএলের একাদশ আসর অনুষ্ঠিত হবে। তার আগে ১৪ অক্টোবর অনুষ্ঠিত প্লেয়ার্স ড্রাফটে ‘বি’ ক্যাটাগরি থেকে মাশরাফিকে দলে নেয় সিলেট। ওই ক্যাটাগরিতে ক্রিকেটারদের মূল্য ধরা হয়েছে ৪০ লাখ টাকা করে। মাশরাফিকে দলে নেওয়ার যুক্তি হিসেবে সিলেট স্ট্রাইকার্সের মালিক মামুনুল হক বলেন, ‘মাশরাফির ব্যাপারে আগে থেকেই আমাদের পরিকল্পনা ছিল। আমরা সেভাবেই তাকে নিয়েছি। মাশরাফি অনেক বছর ধরে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গেও জড়িত। গত বছর হয়তো সেভাবে সময় দিতে পারেনি। কিন্তু আগের বছর সে ভালো করেছে। এবারও আশাকরি ভালো কিছু করবে।’
মাসুদ আহমদ রনি/এএইচএস