নিষিদ্ধ সোহাগের বার্তায় বিব্রত ফুটবলাঙ্গন
২০২৩ সালের ১৪ এপ্রিল ফিফা থেকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ হন বাফুফের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ। আসন্ন বাফুফে নির্বাচনে অবশ্য বেশ সরব তিনি। কারণ তার স্ত্রী তাসমিয়া রেজোয়ানা দ্বিতীয় বিভাগের দল বিক্রমপুর কিংস থেকে কাউন্সিলর হয়েছেন। এরপর থেকেই স্ত্রীর জন্য দোয়া, সমর্থন ও সহযোগিতা চেয়ে ফুটবল ও ক্রীড়াঙ্গন সংশ্লিষ্ট অনেককে মেসেজ ও ফোন করছেন নিষিদ্ধ সোহাগ।
জাতীয় দলের সাবেক তারকা ফুটবলার ইমতিয়াজ আহমেদ নকীব মোহামেডানের ম্যানেজার হলেও বাফুফে নির্বাচনে কাউন্সিলর হয়েছেন দ্বিতীয় বিভাগের ক্লাব বাংলাদেশ বয়েজ থেকে। তাসমিয়া রেজোয়ানার জন্য সোহাগের ফোন পেয়েছেন নকীবও। এতে খানিকটা বিব্রতই সাবেক এই ফুটবলার, ‘ফিফা থেকে নিষিদ্ধ একজন আরেকজনের জন্য ভোট চাইছে, বিষয়টি শোভনীয় নয়। যিনি ভোট করছেন তারই ভোটারদের কাছে ভোট চাওয়া উচিৎ।’
বিভিন্ন ফেডারেশনের নির্বাচনে জেলা-বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠকরা জয়-পরাজয়ে বড় ভূমিকা রাখেন। বিগত তিনটি বাফুফে নির্বাচনের অন্যতম প্রভাবক ছিলেন জেলা-বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক পরিষদের মহাসচিব আশিকুর রহমান মিকু। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে তার আগের সেই প্রভাব না থাকলেও নিজ জেলা নড়াইল থেকে অবশ্য বাফুফে নির্বাচনে কাউন্সিলর হয়েছেন। স্ত্রীর নির্বাচনের জন্য সোহাগের তৎপরতা নিয়ে মিকুর প্রতিক্রিয়া, ‘সে আমাকে ফোন করেছিল। সামাজিকতা রক্ষার্থে অবশ্যই কথা বলতে হয়েছে। সে যেহেতু নিষিদ্ধ তার এমন কর্মকাণ্ড নৈতিকতা পরিপন্থি। ফুটবল ফেডারেশনের বিষয়টি খতিয়ে দেখা উচিৎ।’
আরও পড়ুন
ক্রীড়াঙ্গনের প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর কিংবদন্তি ক্রীড়াবিদ কামরুন নাহার ডানা। সোহাগের স্ত্রীর বাফুফে নির্বাচনে সদস্য পদে প্রার্থী হতে যাওয়া এবং সোহাগের তৎপরতা দুটোই বেগতিক মনে হয়েছে তার কাছে, ‘হঠাৎ করে ফুটবল ফেডারেশনের মতো জায়গায় নির্বাচনে সোহাগের স্ত্রীর প্রার্থী হতে যাওয়া বিস্ময়কর। স্ত্রীর জন্য সোহাগের মেসেজ পেয়ে বিব্রতও হয়েছি।’
গতকাল বাফুফে নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী তাবিথ আউয়াল সাবেক ফুটবলারদের নিয়ে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন। সেখানেও হাজির হয়েছিলেন বাফুফের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। যদিও কাল তাকে স্ত্রীর জন্য ভোট চাইতে দেখা যায়নি। তবে তাবিথ আউয়ালের সঙ্গে তোলা ছবি সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে নিজের পাশাপাশি তাবিথ আউয়ালকেও সমালোচনার মধ্যে ফেলেছেন। সভাপতি প্রার্থী আব্দুল্লাহ ফুয়াদ রেদোয়ান তাবিথকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে বলেন, ‘আমরা আগে থেকেই বলে আসছি বাফুফে নির্বাচন নিয়ে তাবিথ আউয়ালের সঙ্গে সালাউদ্দিন-কিরণের সম্পর্ক রয়েছে। ফিফা থেকে নিষিদ্ধ সোহাগের সঙ্গেও তার যোগাযোগ আছে অনুষ্ঠানে উপস্থিতি ও ছবি সেটাই প্রমাণ করে।’
সোহাগের নিষেধাজ্ঞা বাফুফের আনুষ্ঠানিক সকল কার্যক্রমের জন্য প্রযোজ্য। স্ত্রীর জন্য ভোট চাওয়া ও ফুটবলের সামাজিক অনুষ্ঠানে উপস্থিতি অবশ্য সুস্পষ্ট আইনত বাধার মধ্যে না পড়লেও নৈতিকতার প্রশ্নে পড়ে। ফিফা সোহাগকে নিষিদ্ধ করার পেছনে নৈতিকতার কারণ ছিল অন্যতম।
এজেড/এএইচএস