বাছাইপর্বের ইতিহাসে সবচেয়ে বাজে অবস্থান, যা বললেন ব্রাজিল কোচ
২০২৬ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে সুবিধাজনক অবস্থানে আগে থেকেই ছিল না ব্রাজিল। কিন্তু পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দলটির কোচ দরিভাল জুনিয়র বাছাইপর্ব টপকানোর আগেই বিশ্বকাপ ফাইনালে খেলার নিশ্চয়তা দিয়েছেন একদিন আগে। আর তারপরই আজ (বুধবার) তুলনামূলক দুর্বল প্রতিপক্ষ প্যারাগুয়ের কাছে ১-০ গোলে হার। পরিসংখ্যান বলছে, জয় পরাজয়ের নিরিখে এটাই বাছাইপর্বে ব্রাজিলের সবচেয়ে বাজে ফলাফল।
২০০৩ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ৭১ ম্যাচ খেলে মাত্র ৫টিতে হেরেছিল ব্রাজিল। কিন্তু এবার ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ৮ ম্যাচ খেলেই ৪ হার। বোঝাই যাচ্ছে দোরিভাল জুনিয়রের সামনের সময়টা খুব একটা সহজ নয়। বাছাইপর্বে ব্রাজিল এই মুহূর্তে ৮ ম্যাচ শেষ করে আছে ৫ম স্থানে। ৮ ম্যাচে ৪ হারের সঙ্গে আছে ৩ জয় আর ১ ড্র। সংগ্রহে ১০ পয়েন্ট। প্যারাগুয়ে ম্যাচে ২০ মিনিটে গোলে হজম করে ব্রাজিল, এরপর পুরো ম্যাচে তারা আর গোল শোধ করার পথ খুঁজে পায়নি।
পরবর্তীতে দলের এমন পারফরম্যান্সের দায় নিজের কাঁধে নিয়েছেন ব্রাজিল কোচ দরিভাল। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় সবার আকাঙ্ক্ষা খুবই ইতিবাচক ছিল যে, আমরা আরও ধারাবাহিক ও শান্তভাবে ম্যাচ খেলব। যা (প্যারাগুয়ের বিপক্ষে) প্রথম গোল হওয়ার আগপর্যন্তও ছিল, তবে সেই পরিস্থিতি বদলাতে আমরা চেষ্টা করেছি। আপনি সবসময়ই চাইবেন নিজেদের সেরা খেলাটা উপহার দিতে এবং সেটি সবসময় সম্ভব হবেও না। এটি কেবল ভিনির (ভিনিসিয়ুস জুনিয়র) ক্ষেত্রেই নয়, প্রথমার্ধ থেকেই আমাদের অনেক দুর্বলতা ছিল, এর জন্য দায় আমার।’
তিনি আরও বলেন, ‘এজন্য আমি কোনো ফুটবলারকেই শাস্তি দিতে চাই না। কিন্তু আমাদের আরও কাজ করতে হবে এবং কাঙ্ক্ষিত জায়গায় পৌঁছাতে যে আমাদের আরও অনেক প্রচেষ্টা দরকার এই মুহূর্তে সেটি বুঝতে হবে। যেকোনো মূল্যে আমাদের এটি করতে হবে। যদিও তা কোনো সহজ কিংবা স্বাভাবিক কাজ নয়, অনেক কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সম্ভব। ম্যাচে আমরা যখনই গোল হজম করি, তখন পথ হারিয়ে ফেলি। তবে প্রথমার্ধের শেষ পর্যন্ত আমরা চেষ্টা করে গেছি, যদিও এরপর হাল ছেড়েছি বারবারই। এটাই সবচেয়ে বাজে মুহূর্ত এবং সেটাই শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ফল হয়ে এসেছে।’
বেশ কয়েকজন ফুটবলারের না থাকার অজুহাতও দিয়েছেন ব্রাজিল কোচ, ‘প্রয়োজনীয়তা অনুসারে আমরা দলে কিছু পরিবর্তন এনেছি। আমরা প্রথম ম্যাচের জন্য রাফিনিয়াকে পাইনি (তাই পরের ম্যাচেও রাখা হয়নি তাকে), এরপর স্যাভিও এবং পেদ্রোকেও হারিয়ে ফেলি। কিছু খেলোয়াড় আগে থেকেই ছিল, পরের তাদের সঙ্গে নতুন করে কয়েকজন যুক্ত হয়। কিন্তু যেই আসুক আমাদের আরও বেশি দায়িত্বশীলতা নিয়ে খেলার পাশাপাশি ম্যাচের ফল নির্ধারণী মুহূর্তও তৈরি করতে হবে। গোল হজম করার আগপর্যন্ত ম্যাচের নিয়ন্ত্রণও আমাদের হাতেই ছিল। পরে আমরা বল হাতছাড়া করেছি এবং গোল ঠেকানোর মানসিকতা দেখাতে পারিনি। যার পরে ৩০-৩৫ মিনিট আক্রমণও সেভাবে তৈরি করা যায়নি।’
আরও পড়ুন
একপর্যায়ে দরিভালের সামনে দীর্ঘদিন দলের বাইরে থাকা নেইমার জুনিয়রের প্রসঙ্গও উঠে আসে। গত বছরের অক্টোবর থেকে চোটের কারণে মাঠের বাইরে আছেন তিনি। ব্রাজিলের সর্বোচ্চ এই গোলদাতার দলে ফেরার প্রসঙ্গে দরিভাল বলেন, ‘সবার আগে তাকে ক্লাবের (আল হিলাল) দলে ফিরতে হবে। তার আগপর্যন্ত আমরা কিছুই করতে পারব না। সব সময়ই যোগাযোগ হচ্ছে, আমরা নেইমারের পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করছি। সুস্থতার আশায় আছি। কিন্তু সে জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।’
এএইচএস