এখানেই কোচিং ক্যারিয়ারের ইতি– আভাস দিলেন ক্লপ নিজেই
জার্মান ক্লাব মাইঞ্জের সামনে অবনমন এড়ানোর লড়াই। দ্বিতীয় বিভাগে টিকে থাকতে শেষ কয়েক ম্যাচে জয় ভিন্ন পথ নেই। ক্লাবটি এই দৈন্যদশায় আস্থা রেখেছিল নিজেদেরই এক খেলোয়াড়ের ওপর। নাম ইউর্গেন নোবার্ট ক্লপ। ডিফেন্সিভ এই মিডফিল্ডার অবসর নিলেন। পরদিনই হলেন দলের কোচ। এরপরের গল্পটা একজন সাধারণ খেলোয়াড়ের অসাধারণ কোচ হয়ে ওঠার।
মাইঞ্জে ছিলেন ৭ বছর। এরপর জার্মানিতে বিশ্বকাপ চলাকালে হয়েছিলেন ফুটবল বিশ্লেষক। সেখান থেকে বুরুশিয়া ডর্টমুন্ডে। প্রায় মাঝারি মানের ক্লাবকে নিয়ে গেলেন অন্য এক উচ্চতায়। বায়ার্ন আধিপত্য ভেঙে বুন্দেসলিগায় পরপর দুই বছর জিতলেন লিগ শিরোপা। সেখানেও ছিলেন ৭ বছর।
এরপর ইংলিশ ক্লাব লিভারপুলে এলেন ‘দ্য নরমাল ওয়ান’ হয়ে। দীর্ঘদিনের শিরোপাখরায় থাকা দলকে প্রতিশ্রুতি দিলেন ৪ বছরের মধ্যে অন্তত একটি শিরোপা তিনি এনে দেবেন। ২০১৫ থেকে ২০২৩… লিভারপুলকে জেতালেন ক্লাব ফুটবলের সম্ভাব্য সব শিরোপা। ৯ বছর ধরে লিভারপুলে ছিলেন। এরপর বিদায় জানালেন। বিদায় বেলায় বললেন, ‘আমি ক্লান্ত। এখনই আর কোনো কোচের চাকরিতে যাচ্ছি না।’
জার্মানি কোচেস কংগ্রেসে ইউর্গেন ক্লপ অবশ্য দিলেন আরও বড় দুঃসংবাদ। হয়ত আর কখনোই ডাগআউটে দেখা যাবে না জার্মান এই ট্যাকটিশিয়ানকে। ক্লপের এজেন্ট মার্ক কোসিস্কি কেমন প্রস্তাব আনছেন আজকাল এমন প্রশ্নের উত্তরেই ক্লপ জানালেন এমন সম্ভাবনার কথা, ‘কিছুই না। চাকরির কথা বলতে গেলে, কোনো কিছুই না (প্রস্তাব আসছে না)। কোনো ক্লাব না, কোনো দেশ না। কিছু লোক নিশ্চয়ই এই বিষয়টা বুঝতে চাইছে না।’
আরও পড়ুন
‘আজকের দিনের কথা বলতে গেলে, কোচ হিসেবে এখানেই আমার ইতি। আমি শুধুশুধু ছেড়ে আসিনি। তবে এটা একটা সাধারণ সিদ্ধান্তের মতোই। আমি বিশ্বের সেরা ক্লাবগুলোকে কোচিং করিয়েছি। হয়ত আরও কয়েক মাস পর এসব নিয়ে (কোচিং-এ ফেরা) আবার কথা বলতে পারি। আমি এখনো ফুটবল নিয়ে কাজ করতে চাই আর মানুষকে আমার অভিজ্ঞতা দিয়ে সাহায্য করতে আগ্রহী। দেখা যাক আমার জন্য সামনে কি আছে।’
ইংল্যান্ডের হেডকোচের পদ খালি আছে কদিন ধরেই। ইউরোর ফাইনালে হারের দুদিন পর কোচের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন গ্যারেথ সাউথগেট। ইংল্যান্ড দলের কোচ কি হবেন ক্লপ? এমন প্রশ্নের উত্তরে জার্মান কোচের বক্তব্য, ‘ইংল্যান্ড? যদি আমি বলি আপনাদের (ইংলিশদের) জন্য ব্যতিক্রম কিছু করব, তবে সেটা ফুটবল ইতিহাসেরই সবচেয়ে বড় লজ্জা হবে।’
এরপরেই কোচ হিসেবে না ফেরার কথায় আরও একবার জোর দিলেন ক্লপ, ‘আমি কিছু কাজ করব। প্যাডেল টেনিস আর নাতি সামলানোর সাপেক্ষে আমার বয়স এখনো কমই বলা চলে। কোচ হব? এই মুহূর্তে সেই কথা আমি আসলে উড়িয়ে দিচ্ছি। দেখা যাক আগামী কয়েক মাসে কী হয়, তবে এখন কিছুই হচ্ছে না।’
গত মৌসুমের মাঝপথেই মৌসুম শেষে লিভারপুল ছাড়ার কথা জানিয়ে দেন ক্লপ। ‘ক্লান্তি’র কথা জানিয়েই মূলত অনির্দিষ্টকালের জন্য ফুটবল থেকে বিরতিতে যান। বিদায়বেলায় লিভারপুল ক্লাব ও সমর্থকেরা রাজসিক বিদায়ও দেন ক্লপকে। এর আগেই অবশ্য তিনি জানিয়ে দেন, ইংল্যান্ডে লিভারপুল ছাড়ার পর আর কোনো ক্লাবের কোচ হয়ে ভবিষ্যতে কাজ করবেন না।
মাঝে যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবল দলের পক্ষ থেকে প্রস্তাব এলেও তা ফিরিয়ে দেন ক্লপ। তবে এবারের কথায় আরও বড় কিছুর আভাস মিলল।
জেএ