ফাইনালে উঠে আবেগাপ্লুত ডি মারিয়া, যা বললেন শেষ ম্যাচের আগে
দীর্ঘ সময়ের প্রতীক্ষার পর আর্জেন্টাইন ফুটবলে ফের স্বর্ণযুগ শুরু হয়েছে লিওনেল মেসি ও আনহেল ডি মারিয়াদের হাত ধরে। সেই দুই তারকা এখন আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের চূড়ান্ত সময়ে অবস্থান করছেন। অবশ্য ডি মারিয়া আর্জেন্টিনার জার্সিতে অবসর থেকে আর মাত্র এক ম্যাচ দূরে। আগেই জানিয়েছিলেন এবারের কোপা আমেরিকা শেষে তিনি অবসর নেবেন। ফাইনালে জিতে শিরোপা উৎসবে নিজের শেষ ম্যাচটা রাঙাতে চান ‘এল ফিদেও’। তার আগে আজ সেমিফাইনাল জিতে ডি মারিয়া আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছেন।
এদিন (বুধবার) ভোরে কোপার সেমিতে কানাডার বিপক্ষে মেসি-ডি মারিয়াদের জয়টা প্রত্যাশিতই ছিল। মাঠের পারফরম্যান্সেও দেখা গেল দাপুটে আর্জেন্টিনাকে। স্কোরলাইন যদিও বলছে আর্জেন্টিনা ম্যাচ জিতেছে ২-০ গোলের ব্যবধানে। তবে নব্বই মিনিটের খেলায় আলবিসেলেস্তেরা ছিল আরও বেশি পরিণত। কোপা আমেরিকা এবং বিশ্বকাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা খেললেন চ্যাম্পিয়নদের মতোই। তাতে টানা দ্বিতীয়বার এবং শেষ আট কোপায় ষষ্ঠবার ফাইনালে চলে গেল আর্জেন্টিনা।
এমন জয়ের পর নিজের অশ্রু সংবরণ করতে পারেননি ডি মারিয়া। কানাডার বিপক্ষে ম্যাচ শুরুর আগে নিজের কী চিন্তা ছিল তা জানিয়ে ডি মারিয়া বলেন, ‘আমার ধারণা ছিল আমি সামনের দরজা দিয়েই বিদায় নিতে পারব। এজন্য আমি নিজের সর্বোচ্চটুকু করেছি। আমার যা করা সম্ভব ছিল সবই করেছি, আমি শুধুমাত্র নিজের চেষ্টাটাই করে গেছি। সবসময়ই নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা ছিল। এই জার্সির (আর্জেন্টিনার) জন্য আমি নিজের জীবন বাজি রেখেছি। এখানে এমনও সময় গেছে, যা আমার পক্ষে ছিল না। কিছুটা দেরিতে সেই সময়টা শুরু হয়েছে।’
এই ম্যাচের আগেই নাকি দীর্ঘদিনের সতীর্থ ও বন্ধু মেসি তার জন্য ফাইনালে ওঠার জন্য লড়বেন বলে জানিয়েছিলেন। এমন মুহূর্ত তার জন্য অনেক আনন্দ ও গর্বের বলেও উল্লেখ করেন ডি মারিয়া, ‘আমি তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞ, যারা সবসময়ই আমাকে সমর্থন জুগিয়েছে। আমার পরিবার এবং আর্জেন্টিনা দল। আজ মাঠে নামার আগে লিও (মেসি) আমাকে বলেছিল, আমার জন্য সে ফাইনালে পৌঁছাতে চায় এবং এটি আমার বুক গর্বে ভরিয়ে দিয়েছে। শেষ সময়ে যা কিছু অর্জন করা সম্ভব আমি সবই পেয়েছি, সবই সম্ভব হয়েছে তাদের সবার অংশগ্রহণে। তারারই আমার গর্বের উৎস।’
আগামী সোমবার ভোরে (বাংলাদেশ সময়) কোপার ফাইনালে নামবে আর্জেন্টিনা। সেই ম্যাচটিই হতে যাচ্ছে আলবিসেলেস্তে জার্সিতে ডি মারিয়ার শেষ ম্যাচ। মানতে কষ্ট হলেও সেটাই যে তার শেষ ম্যাচ হবে সেটিও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন আবারও। কান্না চাপিয়ে এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার বলছেন, ‘জাতীয় দলের হয়ে শেষ ম্যাচ খেলতে আমি প্রস্তুত নেই, কিন্তু সময় হয়ে গেছে। আমি এভাবেই বিদায় নিতে চেয়েছিলাম এবং সেভাবেই ঘটেছে সব, আরেকটি ফাইনালে পৌঁছে গেছি আমরা।’
আরও পড়ুন
তিনি আরও বলেন, ‘আমার সতীর্থরা সবাই জানে আমার আর ফেরার পথ নেই, সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে। আমার সিদ্ধান্তকে তারাও সমর্থন দিয়েছে। তারা কিছুটা বিরক্ত করেছে এবং তা সত্ত্বেও সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। আর মাত্র একটি ম্যাচ বাকি, স্বপ্নের মতো শেষটা পাচ্ছি এবং এটাই আমি চেয়েছিলাম। যদিও অনুভূতি বলছে আমি আরও চালিয়ে যেতে পারব, তবে এটাই (বিদায়ের) সঠিক সময়। ফেরার সুযোগ নেই। আমি বাছাইপর্বে (২০২৬ বিশ্বকাপ) আর্জেন্টিনার ম্যাচ দেখতে যাব।’
উল্লেখ্য, কোপার দ্বিতীয় সেমিফাইনালে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) ভোরে মুখোমুখি হবে উরুগুয়ে ও কলম্বিয়া। সেই ম্যাচে বিজয়ী দল ফাইনালে মুখোমুখি হবে মেসি-ডি মারিয়াদের। বাংলাদেশ সময় আগামী সোমবার ভোর ৬টায় মায়ামির হার্ড রক স্টেডিয়ামে কোপার ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে।
এএইচএস