প্যারিস অলিম্পিকে শ্যুটার রবিউল
আরচ্যার সাগর ইসলাম সরাসরি অলিম্পিকে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছেন। সাগরের পর প্যারিস অলিম্পিকে খেলার সুখবর পেয়েছেন শ্যুটার রবিউল ইসলাম। তিনি ওয়াইল্ড কার্ডের মাধ্যমে বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনের সর্বোচ্চ আসরে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন।
বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনের উপ-মহাসচিব ও প্যারিস অলিম্পিকে বাংলাদেশের কন্টিনজেন্টের শেফ দ্য মিশন ইন্তেখাবুল হামিদ অপু মালয়েশিয়া থেকে বলেন, 'আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (আইওসি) রবিউল ইসলামকে ওয়াইল্ড কার্ড বরাদ্দ করেছে। অতি সম্প্রতি আইওসি আমাদের আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি অবহিত করেছে।'
১০ মিটার এয়ার রাইফেলে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা শ্যুটার রবিউল। এই বছর ইন্দোনেশিয়ায় এশিয়ান শ্যুটিং চ্যাম্পিয়নশিপেই তিনি সরাসরি অলিম্পিক খেলার যোগ্যতা অর্জনের কাছাকাছি ছিলেন। মাত্র ০.৩ স্কোরের জন্য চূড়ান্ত পর্বে খেলতে পারেননি। ফাইনাল রাউন্ডে উঠলে তিনিও একটি কোটা প্লেস নিয়ে সরাসরি অলিম্পিকে খেলতে পারতেন।
বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশন ৪ ডিসিপ্লিনের ৬ জন ক্রীড়াবিদের জন্য আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির কাছে ওয়াইল্ড কার্ড চেয়েছিল। এর মধ্যে ছিলেন দুইজন শ্যুটার রবিউল ইসলাম ও শায়েরা আরেফিন। আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি রবিউলকে ওয়াইল্ড কার্ড প্রদান করায় শায়েরার সম্ভাবনা আর সেই অর্থে দেখছেন না শ্যুটিং ফেডারেশনের মহাসচিব ইন্তেখাবুল হামিদ, 'ওয়াইল্ড কার্ডের প্রদান ও বরাদ্দের সম্পূর্ণ এখতিয়ার আইওসির (আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি)। র্যাংকিং, আন্তর্জাতিক পারফরম্যান্স সব কিছু বিচার-বিবেচনা করেই আইওসি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং সেটাই চূড়ান্ত।’
আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি বিভিন্ন খেলার আন্তর্জাতিক ফেডারেশনের সঙ্গে বৈঠক করেই সংশ্লিষ্ট খেলার জন্য বিভিন্ন দেশের ক্রীড়াবিদদের ওয়াইল্ড কার্ড বন্টন করে। ইতোমধ্যে শ্যুটিংয়ের সিদ্ধান্ত হয়ে যাওয়ায় এই ডিসিপ্লিন থেকে আরেকটি কার্ডের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। অলিম্পিকে বাংলাদেশের একজনের বেশি শ্যুটারের অংশগ্রহণের পূর্ব রেকর্ডও নেই।
বাংলাদেশ আরচ্যারি ফেডারেশন ওয়াইল্ড কার্ডের জন্য বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনে পুরুষ রিকার্ভ আরচ্যার আব্দুল হাকিম রুবেলের নাম দিয়েছিল। সাগর ইসলাম সরাসরি অলিম্পিক নিশ্চিত করায় রুবেলের আর ওয়াইল্ড কার্ড পাওয়ার কোনো সম্ভাবনাই নেই। বাংলাদেশ আরচ্যারির জার্মান কোচ মার্টিন ফ্রেডরিক তুরস্ক থেকে বলেন, 'আরচ্যারি ও অলিম্পিকের নিয়ম হচ্ছে যে ইভেন্টে একটি দেশের যে জেন্ডার (লিঙ্গ) সরাসরি কোয়ালিফাই করে সে জেন্ডার আর ওয়াইল্ড কার্ডের জন্য বিবেচ্য হয় না।' এ নিয়মের ফলে রুবেলের কপাল পুড়লেও নারী আরচ্যার দিয়া সিদ্দিকীর মৃদু সম্ভাবনা উকি দিচ্ছে। দিয়াকে চলমান বিশ্বকাপ আরচ্যারিতে অসাধারণ পারফরম্যান্সের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আরচ্যারি ফেডারেশনের সুদৃষ্টি পেতে হবে। কারণ দিয়ার নাম ওয়াইল্ড কার্ডের আবেদনে নেই। আন্তর্জাতিক আরচ্যারি ফেডারেশন আইওসির সঙ্গে যৌথসভায় বাংলাদেশের একজন শীর্ষ নারী আরচ্যারকে ওয়াইল্ড কার্ডের সুপারিশ করলেই কেবল খেলতে পারবে। বিশ্বকাপ আরচ্যারি টুর্নামেন্ট শেষে ২৪ জুন এটি নিশ্চিত হওয়ার কথা রয়েছে।
ওয়াইল্ড কার্ডের জন্য আবেদন করা অন্য তিন ক্রীড়াবিদ হলেন বক্সার সেলিম, গলফার সিদ্দিকুর রহমান ও জামাল হোসেন। এই তিন জনের মধ্যে ওয়াইল্ড কার্ড পাওয়ার সম্ভাবনায় খানিকটা এগিয়ে রয়েছেন বক্সার সেলিম। চার ডিসিপ্লিনে ছয় ক্রীড়াবিদের মধ্যে শুটিংয়ের সিদ্ধান্ত এসেছে বাকি ডিসিপ্লিনগুলো জুনের মধ্যেই আসবে।
গেমসের মূল আকর্ষণ অ্যাথলেটিক্স ও সাঁতার। এই দুই খেলার জন্য ওয়াইল্ড কার্ডের সরাসরি আবেদন প্রয়োজন নেই। দুই খেলার বৈশ্বিক ফেডারেশন সংশ্লিষ্ট দেশের জন্য কোটা বরাদ্দ ও খেলোয়াড়ের নাম চূড়ান্ত করে। এবার প্যারিস অলিম্পিকে অ্যাথলেটিক্স থেকে বাংলাদেশের দ্রুততম মানব ইমরানুর রহমান ও সাতারে রাফিউল ইসলাম এবং সোনিয়ার অংশগ্রহণের সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই সংশ্লিষ্ট দুই ফেডারেশন ও অলিম্পিক এসোসিয়েশন এটি আনুষ্ঠানিকভাবে জানার কথা রয়েছে।
এজেড/এইচজেএস