৭৭ রানে অলআউট হয়ে আয়োজকদের ওপর ক্ষোভ ঝাড়লেন লঙ্কান তারকা
নিজেদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বনিম্ন সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছে শ্রীলঙ্কা। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলতে নেমে ৭৭ রানেই গুটিয়ে গিয়েছে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার দল। বিপরীতে দক্ষিণ আফ্রিকা ধীরগতির এক ইনিংস খেললেও তাতে জয় পেতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি তাদের। এমন বাজে পারফরম্যান্সের পর লঙ্কান খেলোয়াড়দের মাঝে হতাশা কাজ করাই স্বাভাবিক।
তবে ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে আসা লংকান স্পিনার মাহিশ থিকসানার কণ্ঠে হতাশার চেয়ে ক্ষোভের প্রকাশই দেখা গেল বেশি। সেই ক্ষোভটাও নিজ দলের ব্যাটারদের ওপর না, বরং আয়োজকদের ওপর। নিউইয়র্কের হোটেল, সূচি আর যাতায়াত নিয়েই এমন ক্ষোভ জানালেন এই স্পিনার।
শ্রীলঙ্কার প্রতি অবিচার হয়েছে উল্লেখ করে থিকশানা বলেন, ‘প্রতিদিনই ম্যাচের পর আমাদের বেরুতে হচ্ছে, কারণ আমাদের চারটি ভিন্ন ভিন্ন ভেন্যুতে খেলতে হচ্ছে। এটা অবিচার। আমরা ফ্লোরিডা থেকে ফ্লাইট নিলাম, এরপর মিয়ামি থেকে। বিমানবন্দরে আমাদের ৮ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে ফ্লাইটের জন্য। সকাল ৮টায় আমাদের যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ফ্লাইট পেয়েছি ভোর পাঁচটায়। আমাদের সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে, যদিও যখন আপনি মাঠে খেলতে নামেন, তখন আর এসব বিবেচনায় থাকে না।’
নিউইয়র্কে যে হোটেলে শ্রীলঙ্কা ছিল, সেখান থেকে ম্যাচের ভেন্যু প্রায় ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিটের পথ। সকাল ১০ টায় ম্যাচ হওয়ার সুবাদে বেশ ভোরেই বের হতে হয়েছিল তাদের। থিকশানা অভিযোগ করেছেন হোটেলের এমন ব্যবস্থাপনা নিয়েও, ‘আমি নাম বলব না। তবে এমন দল আছে যারা এরকম জায়গায় থাকার সুযোগ পেয়েছে, কিন্তু মাঠ থেকে হোটেলের দূরত্ব মোটে ১৪ মিনিটের। আর আমাদেরটা প্রায় ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট।’
এরপরেই তিনি জানান মাঠ দূরে থাকায় একটি প্র্যাকটিস সেশনও বাদ দিয়েছে তার দল, ‘এমনকি হোটেল থেকে ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট দূরে থাকায়, আজকেও এখানে আসতে আমাদের ভোর ৫টায় ঘুম থেকে উঠতে হয়েছে।’
শ্রীলঙ্কা এবং নেদারল্যান্ডস বিশ্বকাপের দুই দল যারা চারটি ভিন্ন ভিন্ন ভেন্যুতে ম্যাচ খেলছে। নাসাউ কাউন্টিতে ম্যাচের পর শ্রীলঙ্কা পরের ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলবে ডালাসের প্রেইরি ভিউ স্টেডিয়ামে। নেপালের বিপক্ষে তাদের ম্যাচ লডারহিলে। আর নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে তাদের শেষ ম্যাচের ভেন্যু সেইন্ট লুসিয়াতে।
দক্ষিণ আফ্রিকা নিউইয়র্কেই আরও দুই ম্যাচ খেলবে। প্রোটিয়ারা মোট ৩ ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে এখানে। একইরকম সুযোগ পাবে ভারতও। নিউইয়র্কে তিনটি ম্যাচ তাদের। শেষ ম্যাচ খেলতে তারা যাবে ফ্লোরিডায়। বাংলাদেশ অবশ্য চার ম্যাচ খেলবে দুইটি আলাদা ভেন্যুতে।
ভারতের নাম না নিলেও ঠিকই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মাহিশ থিকশানা। বিশেষ করে বিশ্বকাপের তিন ম্যাচের পাশাপাশি নিজেদের একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচও নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়ামে খেলেছে ভারত। সেদিকে ইঙ্গিত করে থিকশানার বক্তব্য, ‘আমি সেই দলের নাম উচ্চারণ করতে পারব না যারা কিনা একই ভেন্যুতে খেলে যাচ্ছে। তাই ওরা জানে কন্ডিশন কেমন। ওরা একই মাঠে প্রস্তুতি ম্যাচও খেলেছে। আর কেউ এই সুযোগ পাচ্ছে না। আমাদের প্রস্তুতি ম্যাচ ছিল ফ্লোরিডায়। এরপর তৃতীয় ম্যাচ হবে সেখানে।’
শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা অবশ্য এত অভিযোগ করেননি। তবে একেবারেই উড়িয়েও দেননি বিষয়টিকে, ‘আমরা এই কথা বলতে পারি না এটা (লম্বা ভ্রমণ এবং ভেন্যু জটিলতা) প্রভাব ফেলেছে। তবে আমাদের সময়টা কঠিন ছিল। বিশেষ করে শেষ কয়েকটা দিন। খেলার দিন সকালেও আমরা ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট ভ্রমণ করেছি। আর আমাদের প্রথম রাউন্ডের চার ম্যাচ, চারটা আলাদা ভেন্যুতে।’
জেএ