ফিফার নতুন র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা-বাংলাদেশ কততম
ফুটবলের চেয়ে সংক্ষিপ্ত সংস্করণের খেলা ফুটসাল। বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ইনডোরে অনুষ্ঠিত এই খেলা। এখন পর্যন্ত ফুটসালের নয়টি বিশ্বকাপও আয়োজন হয়েছে। চলতি বছরেই উজবেকিস্তানে বসছে টুর্নামেন্টটির দশম আসর। এরই মাঝে প্রথমবারের মতো এই খেলার র্যাঙ্কিং প্রকাশ করেছে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। যেখানে নারী ও পুরুষ উভয় বিভাগেই র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে আছে ব্রাজিল।
ফুটবলের এই ফরম্যাটে প্রতি দলে পাঁচজন করে খেলোয়াড় থাকেন। থাকেন একজন গোলরক্ষক। সর্বোচ্চ ১২ জন পর্যন্ত খেলোয়াড় ব্যবহার করা যায় এই খেলায়। এখানে ইচ্ছেমতো খেলোয়াড় বদলি করা যায়। ফুটসালের সঙ্গে ফুটবলের আরেকটা বড় পার্থক্য হচ্ছে– মাঠের আকার। ফুটবল মাঠের চেয়ে স্বভাবতই দৈর্ঘ্যে ও প্রস্থে অনেক ছোট হয় ফুটসালের মাঠ। এতে খেলার সময়ও থাকে কম, ২০ মিনিট করে দুই অর্ধ মিলিয়ে ৪০ মিনিট। খেলার নিয়মেও বেশ কিছু পার্থক্য আছে ফুটবলের সঙ্গে।
এ বছর হতে যাওয়া বিশ্বকাপের ড্র বা সূচি ঘোষণায় ব্যবহৃত হবে ফুটসালের নতুন এই র্যাঙ্কিং। এছাড়া পরের বিশ্বকাপের দল নির্বাচনও করা হবে র্যাঙ্কিং অনুযায়ী। ১৯৮৯ সাল থেকে ফিফা ফুটসাল বিশ্বকাপ আয়োজন করে আসলেও, এবারই প্রথম তারা অংশগ্রহণকারী দলগুলোর র্যাঙ্কিং তৈরি করেছে। এর আগে ফুটবল বিশ্বকাপও অনেক আগে থেকে হয়ে আসলেও, ছেলেদের প্রথম র্যাঙ্কিং করা হয় ১৯৯২ সালের ডিসেম্বরে। ২০০৩ সালে মেয়েদের র্যাঙ্কিংটাও চালু হয়।
ছেলেদের ফুটসাল র্যাঙ্কিংয়েও নম্বর ওয়ান টিম ব্রাজিল। সেলেসাওরা বিশ্বকাপ ফুটবলের মতো বিশ্বকাপ ফুটসালেও পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এ তালিকার দুইয়ে অবস্থান পর্তুগালের। স্পেন তিনে, এশিয়ার দেশ ইরান চারে ও আর্জেন্টিনা আছে পাঁচে। ফুটসালের প্রথম এই র্যাঙ্কিংয়ে পুরুষ বিভাগের হিসাবটা করা হয়েছে ৪৬০০টি ফিফা ‘এ’ ম্যাচের ফলের ভিত্তিতে। ফিফার সদস্য দেশগুলোর মূল জাতীয় দল মুখোমুখি হলেই আন্তর্জাতিক ‘এ’ ম্যাচের মর্যাদা পায়।
ফুটসালে ছেলেদের প্রথম ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে আছে ১৩৯টি দল। যদিও ১৩৯ দেশের মধ্যে নেই বাংলাদেশের নাম। বাংলাদেশের প্রতিবেশী ভারত আছে ১৩৫ নম্বরে। দক্ষিণ এশিয়ার আরও দুটি দেশ আছে র্যাঙ্কিংয়ে—মালদ্বীপ ১১০ নম্বরে ও নেপাল ১২১ নম্বরে। অন্যদিকে, মেয়েদের র্যাঙ্কিংয়ে মোট দল ৬৯টি। এদের মধ্যে বাংলাদেশ ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার আর কোনো দল নেই।
বাংলাদেশের মেয়েদের ফুটসাল দল প্রথম র্যাঙ্কিংয়ে জায়গা পেয়েছে ৪৪ নম্বরে। এই ৬৯ দলের মধ্যে সবার ওপরে ব্রাজিল। ব্রাজিলের পরেই দুইয়ে স্পেন। পর্তুগাল, আর্জেন্টিনা ও কলম্বিয়া আছে তিন, চার ও পাঁচে।
চলতি বছেরের অক্টোবরে উজবেকিস্তানে হবে ফুটসাল বিশ্বকাপ। যেখানে স্বাগতিক দেশটিসহ র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ পাঁচ দল ব্রাজিল, পর্তুগাল, স্পেন, ইরান ও আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপের ড্র-তে এক নম্বর পটে থাকবে। দ্বিতীয় পটে থাকবে পরবর্তী ছয় অবস্থানে থাকা দল– মরক্কো, কাজাখস্তান, থাইল্যান্ড, ফ্রান্স, ইউক্রেন ও প্যারাগুয়ে।
ফুটসালের আগের ৯ আসরে ব্রাজিল পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দু’বার চ্যাম্পিয়ন স্পেন। ২০১৬ আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল আর্জেন্টিনা, পরবর্তী ২০২১ আসরেও তারা ফাইনাল খেলে। কিন্তু পর্তুগাল তাদের হারিয়ে শিরোপা জিতে নেয়।
উল্লেখ্য, সাধারণ ফুটবলে পিছিয়ে পড়া অনেক দেশ দুই ধরনের ফুটবলে (বিচ ও ফুটসাল) বেশ সফল। এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনও নানা টুর্নামেন্ট আয়োজন করে। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) অবশ্য বিচ ও ফুটসাল জাতীয় কোনো টুর্নামেন্টে দল পাঠায় না। কাজী সালাউদ্দিন ২০০৮ সালে সভাপতি হওয়ার পর একটি ফুটসাল টুর্নামেন্ট হয়েছিল। যেখানে ব্রাদার্স ইউনিয়ন চ্যাম্পিয়ন হয়। বাফুফে বিচ ফুটবল আয়োজন না করলেও বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আই প্রায় প্রতিবছরই করে এমন টুর্নামেন্ট।
২০১০ সালে শ্রীলঙ্কায় দক্ষিণ এশিয়া বিচ টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। এরপর গত এক যুগেরও বেশি সময় বিচ ও ফুটসালে বাফুফের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিত্ব নেই (সাবিনা, সুমাইয়া মালদ্বীপে ব্যক্তিগত উদ্যোগে খেলেছেন)।
এএইচএস