চীনে বিচিত্র ঈদ শাটলারদের, থাইল্যান্ডে ভিন্ন অভিজ্ঞতা দাবাড়ুদের
ক্রীড়াবিদদের জীবন বেশ বৈচিত্র্যপূর্ণ। দেশ ও পেশাদারিত্বের খাতিরে নানা সময়ে বিশ্বের নানা প্রান্তে যাতায়াত করতে হয়। তাই অনেক সময় ঈদও করতে হয় পরিবারের বাইরে। এবারের রমজানের ঈদ ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়রা করেছেন চীনে আর দাবাড়ুরা থাইল্যান্ডে।
বাংলাদেশে আজ ঈদ হলেও চীনে ঈদ হয়েছে গতকাল। চীনের ঈদ ন্যূনতম কোনো আমেজই নেই। বাংলাদেশের শাটলাররা ঈদের নামাজও পড়তে পারেননি। চীনের নিনবো থেকে বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার কাম কোচ ওয়াহিদুজ্জামান রাজু বলেন, ‘এখানে ঈদের কোনো আমেজই নেই। নামাজ পড়ার চেষ্টা করেছি, কিন্তু সেই রকম কোনো সন্ধান পাইনি। তাই নামাজ পড়া হয়নি।’
মজার ও বিশেষ খাবার ঈদের অন্যতম উপলক্ষ্য। চীনে সেই ভাগ্যও জোটেনি শাটলারদের। সুদূর চীন থেকে দুঃখ নিয়ে বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার বলেন, ‘এখানে খাবার একেবারে ভিন্ন রকম আমাদের থেকে। আইটেম, স্বাদ সব কিছুতেই ভিন্নতা। খাবারও আমাদের জন্য খানিকটা কষ্টকর। সব মিলিয়ে আমাদের সবারই বিচিত্র ঈদ অভিজ্ঞতা হয়েছে।’
চীনে ঈদের দিনই খেলা ছিল বাংলাদেশের। ব্যক্তিগত, দ্বৈত ও মিশ্র সব ইভেন্টেই হেরেছে বাংলাদেশ। তাই সব দিক থেকেই ঈদের দিনটি বেশ কষ্টেরই গেছে শাটলারদের। পুরুষ ও নারী ব্যক্তিগত ইভেন্টে আব্দুস সোয়াদ ও নাসিমা খাতুন তেমন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেনি বাংলাদেশ। পুরুষ দ্বৈতে নাজমুল ও নিশান ও মিশ্র দ্বৈতে জুমার ও উর্মি ভারতের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও শেষ পর্যন্ত হেরেই কোর্ট ছাড়তে হয়েছে। বাংলাদেশের খেলা গতকাল শেষ হলেও ফিরতি টিকিট আরও পরে হওয়ায় এই কয়েকদিন চীনেই থাকবেন শাটলাররা।
এশিয়ান ব্যাডমিন্টনে বিশ্বের সেরা শাটলাররা খেলেন। সেই শাটলারদের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতার চেয়ে অংশগ্রহণ করে অভিজ্ঞতা অর্জনই বড় বাংলাদেশের জন্য। এশিয়ান ব্যাডমিন্টনের মতো বড় আসরে বাংলাদেশ অংশগ্রহণের সিদ্ধান্তও হয় সপ্তাহ দু’য়েক আগে। সেখানে শাটলারদের কাছে প্রতিদ্বন্দ্বিতা আশা করা বাহুল্য।
আন্তর্জাতিক মাস্টার আবু সুফিয়ান শাকিল, ফিদে মাস্টার তৈয়বুর রহমান সুমন, মনন রেজা নীড় ও নাইমা হক থাইল্যান্ড রয়েছেন রমজানের তৃতীয় সপ্তাহ থেকেই। একটি টুর্নামেন্ট খেলে ১৩ এপ্রিল থেকে ব্যাংকক ওপেন টুর্নামেন্ট খেলার অপেক্ষায় তাঁরা। যেখানে বেশ কয়েকজন গ্র্যান্ডমাস্টার, আন্তর্জাতিক মাস্টাররা অংশ নেবেন।
বাংলাদেশের মতো থাইল্যান্ডে ঈদ উদযাপন হচ্ছে আজ। চীনে শাটলারদের মতোই থাইল্যান্ডে ঈদের কোনো আমেজ পাননি দাবাড়ুরা। ব্যাংককে ঈদের নামাজের খোঁজখবর নিয়েও দুরত্ব ও নানা কারণে শেষ পর্যন্ত পড়া হয়নি। খেলা না থাকায় ঈদের দিন ব্যাংকক ঘুরেই সময় কাটবে দাবাড়ুদের। চীনের মতো থাইল্যান্ডে খাবার নিয়ে তেমন সমস্যা না হওয়ায় খানিকটা স্বস্তিতেই আছেন দাবাড়ুরা।
আন্তর্জাতিক মাস্টার আবু সুফিয়ান শাকিলের ঈদের সময় বাইরে খেলার অভিজ্ঞতা থাকলেও ফিদে মাস্টার তৈয়বুর রহমানের এই প্রথম। দাবাড়ু তৈয়ব বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের কর্মকর্তাও। তিনি বলেন, ‘উচ্চ শিক্ষার্থে বিদেশে ঈদ করেছি। দাবা খেলার জন্য এবারই প্রথম ঈদের সময় বাইরে। এজন্য পরিবার নিয়ে এসেছি।’ ফিদে মাস্টার সুমন গ্র্যান্ডমাস্টার এনামুল হোসেন রাজীবের আত্মীয়।
এজেড/এফআই