মুশফিককে নিয়ে তামিমের বিস্ফোরক অভিযোগ, নেপথ্যে কী?
এক সময়ের অন্তরঙ্গ বন্ধু সাকিব আল হাসান আর তামিম ইকবালের দ্বন্দ্বের কথা এখন বিশ্ব জানে। এর মধ্যেই ক্রিকেট দুনিয়ায় শোরগোল ফেলে দিয়েছে দুই ঘনিষ্ঠ বন্ধু তামিম ও মুশফিকুর রহিমের মনোমালিন্যের খবর। অন্তত তেমনটাই জানা গেল সম্প্রতি ফাঁস হওয়া তামিম ও মেহেদী হাসান মিরাজের এক ফোনালাপে।
এই ফোনালাপে তামিম পরিষ্কার বলেছেন, মুশফিককে ছোটবেলা থেকে বিশ্বাস করার কোনো প্রতিদান তিনি পাননি। যদিও আগামী মৌসুমেও তাদের এক দলে খেলার কথা ছিল। কিন্তু তামিমকে কিছু না জানিয়েই মুশফিক আলাদা দল করার উদ্যোগ নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তামিম। পুরো বিষয়টা জাতির সামনে পরিষ্কার করার জন্য আজ (বুধবার) সন্ধ্যা ৭টায় তামিম ফেসবুক লাইভে আসবেন বলে জানান।
এদিকে, আজ আবার তামিম ইকবালের জন্মদিন। বিশেষ এই দিনটাতেই এমন বিড়ম্বনা ছড়িয়ে পড়াতে নিশ্চয়ই বিব্রত জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক। ফলে আজই তিনি সব খোলাসা করে দিতে চান।
তামিম ইকবাল আর মুশফিকের অন্তরঙ্গতার কথা কারও অজানা নয়। সদ্য সমাপ্ত বিপিএলেই দু’জন এক দলে (ফরচুন বরিশাল) খেলেছেন। বিপিএলে শিরোপা জয়ের পর তামিম বড় কৃতিত্ব দিয়েছেন মুশফিককেই। এরপর তামিম বলেছিলেন, তারা প্রায় এরকম দল নিয়েই পরের বছর খেলতে চান। কিন্তু মুশফিক সেই কথার ওপর আস্থা না রেখে নিজেই দল করতে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন তামিম। সাকিব-তামিমের মতো এবার মুশফিক-তামিমের মধ্যেও চরম দ্বন্দ্ব দেখা যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ফোনালাপে তামিম বলেন, গত বিপিএলে তাদের যেমন দল ছিল, তিনি প্রায় সেরকম দলই পরের বছর রাখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মুশফিক কথা রাখেননি– ‘মুশফিক এটা কোনো কাজ করছে রে মিরাজ? ফাইনালের পরে আমাদের মিটিংয়ে কী কথা হইছে? আমি তোরে ওই সময় একটা কথা বলছিলাম না যে আমরা চেষ্টা করব যে ৭০ থেকে ৮০ পারসেন্ট আমরা যেন সেইম টিম থাকতে পারি। ঠিক আছে? আর এই কথায় আমার বেইসই ছিল তুই মুশফিক সবাই–সহ। ঠিক না?’
তামিম অভিমান করে বলেছেন, তিনি জাতীয় দলে থাকলে বা অধিনায়ক হিসেবে থাকলে তার সঙ্গে কেউ এরকম ব্যবহার করতো না। আজ সবাই সুযোগ নিচ্ছে, ‘যদি ক্যাপ্টেন থাকতাম তাহলে তো তোরা এটা করতে পারতি না। এখন আমার দাম নাই, তাই তোরা এসব করছো। অসুবিধা নাই মিরাজ, সময় আমারও তো আসবে। একটা কথা শোন- পৃথিবীটা গোল তুই ওই সাইডে আমি এই সাইডে, কালকে আমি ওই সাইডে বসবো তুই এই সাইডে আসবি। বিষয়টা ভুলে যাইসনা, তোর বড়ভাইকেও বলে দিস।’
তামিম সবচেয়ে দুঃখ পেয়েছেন, মুশফিক তাকে একেবারেই কিছু না জানিয়ে আলাদা দল করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায়। সেটা না লুকিয়েই তিনি বলেছেন, ‘ছোটবেলা থেকে ও আমার ফ্রেন্ড। ও একবার আমাকে অ্যাটলিস্ট বলত, চলে যাওয়ার আগে। অ্যাটলিস্ট তখন তো আমার একটু শান্তি হইতো যে, বলে গেছে। অসুবিধা নাই মিরাজ। সময় আমারও তো আসবে। এখন তো ন্যাশনাল টিমে খেলি না, তাতে অনেকের ভাব বেড়ে গেছে।’
নেপথ্য কী?
ফোনালাপটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। নেটিজেনদের অনেকেই বিষয়টি কোনো প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনী প্রচারণা বলে উল্লেখ করতে থাকেন। নইলে এমন ফোনালাপ ফাঁস হয় কীভাবে সেই প্রশ্নও তোলেন তারা। এর আগেও তামিম ও সাকিব আল হাসানের মধ্যকার দ্বন্দ্ব একপাশে রেখে দুজনকে একত্রে দেখা যায়। পরবর্তীতে জানা যায় সেটি ছিল একটি বিজ্ঞাপন দৃশ্যের অংশ। এবারও তেমন কিছুই ঘটতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে! বাকি বিষয় হয়তো তামিমের লাইভের পরই পুরোপুরি পরিস্কার হওয়া যাবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি