নিশাঙ্কার সেঞ্চুরিতে সিরিজ জয়ের অপেক্ষা বাড়ল বাংলাদেশের
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের দ্বিতীয়বারের মতো সিরিজ জয়ের অপেক্ষা আরও বাড়ল। অথচ মাত্র ৪৩ রানেই লঙ্কানরা ৩ উইকেট হারানোয় কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য পূরণের স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিল টাইগার ক্রিকেটভক্তরা। ওয়ানডেতে লঙ্কানদের চতুর্থ উইকেট জুটিতে পাথুম নিশাঙ্কা ও চারিথ আসালাঙ্কা মিলে গড়লেন সর্বোচ্চ ১৮৫ রানের জুটি। আর তাতেই স্বপ্নচ্ছেদ টাইগারদের, তবে এখনও সিরিজের এক ম্যাচ বাকি। এদিন ম্যাচের শেষদিকে কিছুটা উত্তেজনা ছড়ালেও লঙ্কানরা ম্যাচ জিতেছে ৩ উইকেটে।
এই জয়ে সিরিজে ১-১ ব্যবধানে সমতা ফেরাল শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের বিপক্ষে চতুর্থ উইকেট জুটিতে রেকর্ড গড়ার পথে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন ওপেনার নিশাঙ্কা। তাকে দারুণ সঙ্গ দেওয়া আসালাঙ্কাও ছিলেন একই পথে। তবে ৯১ রানে থাকাবস্থায় তাকে মুশফিকুর রহিমের তালুবন্দী বানান পেসার তাসকিন আহমেদ। এর আগে আসালাঙ্কা-নিশাঙ্কার জুটি ভাঙেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে ততক্ষণে লঙ্কানরা জয়ের পথটা সহজ করে নিয়েছে।
বাংলাদেশের দেওয়া ২৮৭ রানের লক্ষ্য তাড়ায় শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেছে শ্রীলঙ্কা। তবে দ্রুত উইকেট তুলে নিয়ে তাদের চাপে ফেলে দেন শরিফুল–তাসকিনরা। রানের খাতা খোলার আগেই ওপেনার আভিষ্কা ফার্নান্দোকে ফেরান শরিফুল ইসলাম। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৪২ রান যোগ করেন নিশাঙ্কা ও কুশল মেন্ডিস। আরও আগ্রাসী হয়ে ওঠার আগে তাসকিন সফরকারী অধিনায়ক মেন্ডিসকে ১৬ রানে ফেরান। তার পরপরই শরিফুলের বলে সাদিরা সামারাবিক্রমা (১) ফিরলে বাংলাদেশের আশার পালে দোলা লাগে।
স্বাগতিকদের সেই আশা গুড়েবালি হতে বেশি সময় লাগেনি। প্রথমে ধীরে ধীরে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেন নিশাঙ্কা–আসালাঙ্কা। দুজনে সিঙ্গেল রান ও সুবিধামতো বাউন্ডারি বের করেছেন। পাশাপাশি ঠিক রেখেছেন প্রয়োজনীয় রানরেটও। এতে বেশ আগেই ম্যাচ ফসকে ফেলে নাজমুল হোসেন শান্ত’র দল। নিশাঙ্কা–আসালাঙ্কার জুটি ভেঙে দেয় প্রায় ২৭ বছর আগের রেকর্ড। ১৯৯৭ সালে অর্জুনা রানাতুঙ্গা ও রোশান মহানামার চতুর্থ উইকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সর্বোচ্চ ১৭১ রানের জুটি বেধেছিলেন।
একপর্যায়ে নিশাঙ্কা সেঞ্চুরিও পেয়েছেন, তবে আসালাঙ্কা থামেন ম্যাজিক ফিগার থেকে ৯ রান দূরত্বে। ৭ রানের মধ্যে দুজনকে ফিরিয়ে লড়াইয়ে ফেরার আভাস দেয় বাংলাদেশ। এরপর জানিত লিয়ানাগেকেও ফেরান তানজিম হাসান সাকিব, জয় থেকে শ্রীলঙ্কার দূরত্ব তখন ৩৬ রান। তবে এর পরের উইকেট যতটা দ্রুত দরকার ছিল বাংলাদেশের, ততটা দ্রুত মেলেনি। লঙ্কানদের পুরো ইনিংসে সহায়তা করেছে শিশির। পিচ থেকে বলে তেমন সহায়তা পাননি টাইগার বোলাররা। চাপে পড়ে লাইন–লেংথও তারা ঠিক রাখতে পারেননি।
এদিকে, শেষদিকে দুনিথ ভেল্লালাগে ও ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ঝুঁকি নেননি, সুবিধামতো বাউন্ডারি হাঁকিয়ে বাকি কাজ সেরেছেন হাসারাঙ্গা। ১৬ বলে ২৫ রান করে তিনি যখন আউট, তখন জয় থেকে মাত্র ২ রান দূরে লঙ্কানরা। তবে আরেকপ্রান্তে ১৫ রানে অপরাজিত ছিলেন ভেল্লালাগে। আর ৪৭.১ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে জয় নিশ্চিত করে শ্রীলঙ্কা।
বাংলাদেশের হয়ে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন শরিফুল ও তাসকিন। এছাড়া তানজিম সাকিব, তাইজুল ও মিরাজ একটি করে উইকেট শিকার করেন।
এএইচএস