ক্লপ-গার্দিওলার ‘শেষ’ দ্বৈরথে কেউই হারেনি
পেপ গার্দিওলা এবং ইউর্গেন ক্লপ, গত এক যুগে সম্ভবত ফুটবল খেলার সব সংজ্ঞা আর কৌশল দুজনে বদলে দিয়েছেন। স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন ও আর্সেন ওয়েঙ্গারের দ্বৈরথের পর এমন কিছু আর কখনোই দেখেনি ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ। দুই অসাধারণ মেধাবী কোচের শেষ লড়াই হতে পারে এটিই। চলতি মৌসুমের পরই লিভারপুল ছেড়ে যাবেন ক্লপ। এফএ কাপে দেখা না হলে তাই এটিই ক্লপ-গার্দিওলা দ্বৈরথের শেষ ম্যাচ।
আর এমন উত্তাপ ছড়ানো সূচিতে কোন কোচকেই হারের মুখ দেখতে হয়নি। লিভারপুল এবং ম্যানচেস্টার সিটির হাইভোল্টেজ ম্যাচ শেষ হয়েছে ১-১ গোলে। দুই দলের এর আগের সাক্ষাতেও ফলাফল ছিল এমন। এই ম্যাচের পর ৬৪ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে থাকল লিভারপুল। আর ৬৩ পয়েন্ট নিয়ে তিনে ম্যানসিটি।
লিভারপুল ১ - ১ ম্যানচেস্টার সিটি
ম্যাচের হাইলাইটস দেখে নিশ্চিতভাবেই কপাল চাপড়াবেন লুইস দিয়াজ। অল্পদিনেই লিভারপুলের বাম প্রান্তে ভরসা হয়ে উঠেছিলেন। তবে রোববারের এমন উত্তাপ ছড়ানো ম্যাচে দিয়াজই মিস করলেন গুণে গুণে তিনখানা সহজ সুযোগ। তা না হলে হয়ত তিন পয়েন্ট নিয়েই মাঠ ছাড়তে পারতেন ইউর্গেন ক্লপ।
আরও পড়ুন
আর ম্যাচ শেষে স্বস্তিটা সবচেয়ে বেশি পাবেন পেপ গার্দিওলা। ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে রীতিমত আক্রমণের ঝড় বইয়ে দিয়েছিল সিটি ডিফেন্সের ওপর। মোহাম্মদ সালাহ নেমেছিলেন ম্যাচের ৬০ মিনিটে। এসেই ম্যাচের গতিপথ দিয়েছেন বদলে। ম্যানসিটির দুটো শট ফিরে এসেছে গোলবার থেকে। তাই লিভারপুলও যে খুব একটা স্বস্তিতে ছিল তা বলার অবকাশ নেই। সিটিজেন্স গোলরক্ষক এডারসন ইনজুরিতে উঠে যাওয়ার পর তার রেখে জায়গা ভালোভাবেই সামাল দিয়েছেন স্টেফান ওর্তেগা।
ম্যাচের শুরুতেই সিটিজেন্সদের চেপে ধরেছিল লিভারপুল। তবে নিজেদের ফিরে পেতে সময় লাগেনি গার্দিওলা শিষ্যদের। ২৩ মিনিটে কেভিন ডি ব্রুইনার বুদ্ধিদীপ্ত কর্নারে লিড নেয় ম্যানসিটি। স্কোরশিটে নাম লেখান জন স্টোনস। কর্নারের সময় আনমার্কড ছিলেন এই ইংলিশ ম্যান। তারই সুযোগ নিয়েছেন তিনি।
এর আগেই অবশ্য একবার বল জালে জড়ায় লিভারপুল। তবে সে দফায় অফসাইডে ছিলেন ডারউইন নুনিয়েজ। দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য এই নুনিয়েজই অলরেডদের পেনাল্টি পাইয়ে দেন। স্পটকিকে লক্ষ্যভেদ করেন আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার।
ম্যাচের বাকি সময়টায় এককভাবেই ছড়ি ঘুরিয়েছে লিভারপুল। সালাহ বদলি হিসেবে নেমেই ডানপ্রান্তে গতির ঝড় তুলেছেন। তাকে সঙ্গ্ব দিতে বামপ্রান্তে ছিলেন অ্যান্ডি রবার্টসন। সিটির রক্ষণভাগকে শেষ ৪০ মিনিটে মোটেই রেহাই দেয়নি অলরেডরা।
তবে ভাগ্য সহায় ছিল দুই দলের জন্যই। লিভারপুল মিস করেছে অবিশ্বাস্য সহজ সব সুযোগ। আর ম্যানসিটির ফিল ফোডেন এবং জেরেমি ডোকু হতাশ হয়েছেন গোলবারের কল্যাণে।
ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার পর অন্যবারের তুলনায় একটু বেশিই কথা বললেন গার্দিওলা এবং ক্লপ। কে জানে, একে অন্যকে হয়ত ধন্যবাদই জানিয়েছেন দুজন। প্রিমিয়ার লিগ তো বটেই, ফুটবল দুনিয়াকেই যে অসাধারণ মোহনীয়তা তারা দুজন দিয়ে গেলেন, তার জন্য একে অন্যকে ধন্যবাদ দিতেই পারেন।
জেএ