লায়নের রেকর্ডে ১৭২ রানে হার কিউইদের
নিউজিল্যান্ডের সিমিং পিচও আচমকা স্পিনের জন্য কার্যকরী হয়ে উঠল। আগেরদিন প্রথম (গত ১৬ বছরে) কোনো কিউই স্পিনার হিসেবে তাদের মাটিতে টেস্টে পাঁচ উইকেট শিকার করেছিলেন গ্লেন ফিলিপস। বোঝাই যাচ্ছিল— পরদিন অস্ট্রেলিয়ান অভিজ্ঞ স্পিনার নাথান লায়ন রাজ করতে যাচ্ছেন। সেটাই ঘটল ওয়েলিংটনে। লায়নের ৬ শিকারে মাত্র ১৯৬ রানে অলআউট স্বাগতিক কিউইরা। সিরিজের প্রথম ম্যাচে তারা ১৭২ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে।
সিরিজে লিড নেওয়ার ম্যাচে নাথান দুই ইনিংস মিলে ১০ উইকেট নিয়েছেন। যা ২০০৬ সালের ডিসেম্বরের পর নিউজিল্যান্ডে প্রথম কোনো স্পিনার হিসেবে টেস্টে দশ উইকেট শিকার। প্রথম ইনিংসে ৪৩ রানে ৪ উইকেট নিয়ে পরেরটিতে শিকার করেন ৬৫ রানে ৬ উইকেট। ফলে ঘরের মাঠে আর রেকর্ড গড়ে জেতা হলো না কেইন উইলিয়ামসনদের।
প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৭৯ রানেই গুটিয়ে গিয়েছিল কিউইরা, ফলে শুরুতে ৩৮৩ রান করা অজিরা লিড পেয়ে যায় ২০৪ রানের। দ্বিতীয় ইনিংসে যদিও ফিলিপসের ঘূর্ণিতে সফরকারীরা বেশিদূর আগাতে পারেনি। তবুও তারা যখন ১৬৪ রানে অলআউট, আগের লিডসহ তাদের পুঁজি দাঁড়ায় ৩৬৮ রানে। সেই লক্ষ্য পেরোতে গেলে ঘরের মাঠে টেস্টে সর্বোচ্চ রান তাড়ার পাশাপাশি নিজেদের ইতিহাসেও রেকর্ড লক্ষ্য তাড়া করতে হতো নিউজিল্যান্ডকে।
এর আগে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে সর্বোচ্চ ৩৪৫ রান তাড়া করার রেকর্ড ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ১৯৬৯ সালে অকল্যান্ড টেস্টে গ্যারি সোবার্স-ক্লাইভ লয়েডদের পরাক্রমশালী দল সেই লক্ষ্য টপকে জিতেছিল। তবে ঘরের মাঠে আরও কিছুটা কম লক্ষ্য তাড়া করে জেতার রেকর্ড ছিল কিউইদের। ১৯৯৪ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ক্রাইস্টচার্চে ৩২৪ রান তাড়া করে টেস্ট জিতেছিল। এছাড়া ২০১৭ সালে উইলিয়ামসন-রস টেলররা বাংলাদেশের দেওয়া ২১৭ রানের লক্ষ্য স্পর্শ করেন।
কিন্তু এবার লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটাই নড়বড়ে ছিল কিউইদের। কাল দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমে দ্রুতই তারা ৩ উইকেট হারায়। তবে রাচিন রবীন্দ্র ও ড্যারিল মিচেল চতুর্থ উইকেট জুটিতে ৫২ রান তুলে দিন পার করেন। আগেরদিন ৫৬ রানে অপরাজিত থাকা রবীন্দ্রকে আজ উইকেট পতন শুরু হয়। ৫৯ রান করে তিনি লায়নের বলে ক্যামেরন গ্রিনকে ক্যাচ দেন। এর পরপরই বিদায় নেন টম ব্লান্ডেল (০) এবং ফিলিপস (১)। ১২৮ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে প্রায় হার ধরে নিয়েছিল কিউইরা।
তবে তখনও ক্রিজে ছিলেন মিচেল। তাই হয়তো কিছুটা হলেও তাদের আশা ছিল। সপ্তম উইকেট জুটিতে মিচেল ও স্কট কুগেলাইন ৩৬ রান যোগ করেন। তবে ২৮ বলে ২৬ রান করা কুগেলাইন গ্রিনের লাফিয়ে ওঠা বলে আউট হতেই কিঞ্চিৎ সেই আশাও উবে যায়। এরপর অল্প সময়ের ব্যবধানে বিদায় নেন ম্যাট হেনরি ও অধিনায়ক টিম সাউদি। সাউদিকে ফিরিয়ে লায়ন এক টেস্টে পঞ্চমবারের মতো ১০ উইকেট পূর্ণ করেন।
সতীর্থদের একের পর এক বিদায়ে হাল ছেড়ে দেন মিচেলও। ৩৮ রান করা অবস্থায় মিচেল হ্যাজলউডের বলে তাকেই ক্যাচ দিয়ে আউট হন। আর এর মাধ্যমে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টানা ষষ্ঠ টেস্ট জিতে নিলো অস্ট্রেলিয়া। দ্বিতীয় ইনিংসে হ্যাজলউডও দুই উইকেট নেন। তবে প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ ১৭৯* রান পাওয়া গ্রিন, পরের ইনিংসের ৩৪ রান এবং ১ উইকেট নিয়ে হয়েছেন ম্যাচসেরা।
এএইচএস