অবসরে যাচ্ছেন ম্যাথিউসকে টাইমড আউট দেওয়া আম্পায়ার
মাত্র দু’দিন আগেই নিজের ৬০তম জন্মদিন পালন করেছেন আইসিসির তিনবারের বর্ষসেরা আম্পায়ার মারাইস ইরাসমাস। যদিও তখন তিনি জন্মভূমি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে সাড়ে ১১ হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিলেন। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চলমান টেস্ট সিরিজে দায়িত্ব পালন করছেন ইরাসমাস। যার মাধ্যমে এই প্রোটিয়া আম্পায়ারিং ক্যারিয়ারের ইতি টানার ঘোষণা দিয়েছেন।
২০০৬ সাল থেকে আন্তর্জাতিক ম্যাচ পরিচালনা করে আসা এই আম্পায়ার ক্রিকেটের আলোচিত অনেক ঘটনার সাক্ষী। তার মধ্যে সাম্প্রতিক অতীতে অনেক আলোচনার জন্ম দেওয়া ইরাসমাসের একটি সিদ্ধান্ত ছিল অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের ‘টাইমড আউট’। সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার ম্যাচে এই অলরাউন্ডার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ক্রিজে এসে বল মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত ছিলেন না। ফলে তৎকালীন টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের আবেদনে সাড়া দিয়ে ম্যাথিউসকে টাইমড আউট দেন ইরাসমাস।
গতকাল (বুধবার) নিজের আম্পায়ারিং ক্যারিয়ার থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন এই প্রোটিয়া। এ নিয়ে ক্রিকবাজকে দেওয়া মন্তব্যে ইরাসমাস বলেন, ‘আমি অনেক সুবিধা ও ভ্রমণের সুযোগ মিস করতে যাচ্ছি। তবে নিজের কম্ফোর্ট জোন থেকে দূরে থাকার অভিজ্ঞতা আমার আছে। আশা করছি আমার জন্য বিরক্তিকর জীবন অপেক্ষা করছে। তবে আম্পায়ারিং ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি গত বছরের অক্টোবরে। আইসিসিকেও আগামী এপ্রিল থেকে নিজের চুক্তি শেষ করার কথা জানিয়ে দিয়েছি।’
— (@TelfordVice) February 28, 2024
দক্ষিণ আফ্রিকার এই এলিট প্যানেলের আম্পায়ার ২০১৬, ২০১৭ ও ২০২১ সালে আইসিসি বর্ষসেরা আম্পায়ারের পুরস্কার (ডেভিড শেফার্ড ট্রফি) জেতেন। ইরাসমাসের অবসরে আইসিসি এলিট প্যানেলে আম্পায়ারের সংখ্যা কমে হলো ১১। একমাত্র দক্ষিণ আফ্রিকান হিসেবে রয়ে গেলেন অ্যাড্রিয়ান হোল্ডস্টক। পেশাটা কতটা চ্যালেঞ্জিং, তা জানাতে গিয়ে ইরাসমাস বলেছেন, ‘এ কাজ করতে গিয়ে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয় সঠিক সিদ্ধান্ত জানানোর মুহূর্তে। এটা সব সময় কঠিন এবং বিশেষ ব্যাপার। কাজটা ঠিকভাবে করতে পারলে আনন্দ লাগে।’
আরও পড়ুন
আম্পায়ারিং শুরুর আগে পুরোদস্তুর খেলোয়াড় ছিলেন ইরাসমাস। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাদেশিক দল বোল্যান্ডের হয়ে খেলেছেন ৫৩টি প্রথম শ্রেণির ও ৫৪টি লিস্ট ‘এ’ ম্যাচ। আন্তর্জাতিক আম্পায়ারিং শুরুর চার বছর পর ২০১০ সালে তিনি আইসিসির এলিট প্যানেলে অন্তর্ভূক্ত হন। সবমিলিয়ে চারটি বিশ্বকাপে দায়িত্ব পালন করা এই ম্যাচ পরিচালক এখনই ক্রিকেটকে বিদায় বলছেন না। ঘরোয়া ক্রিকেটের সঙ্গে কাজ করার কথা জানিয়ে ইরাসমাস বলেন, ‘প্রথম দুই মাস আমি শীতকালীন ছুটি কাটাব। আমরা দেশের মধ্যেই ভ্রমণের পরিকল্পনা করে রেখেছি। সেপ্টেম্বর থেকে আমি ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকার (সিএসএ) অধীনে চলে যাব। তারা আমাকে কীভাবে ব্যবহার করবে, সেটা চূড়ান্ত করতে হবে। পরবর্তী মৌসুমে আমি ঘরোয়া ক্রিকেটে আম্পায়ারিং করব এবং একইসঙ্গে পরামর্শকের ভূমিকা পালন করব।’
উল্লেখ্য, ইরাসমাসের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আম্পায়ারিংয়ের অভিষেক হয় ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জোহানেসবার্গে অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ আফ্রিকা টি-টোয়েন্টি ম্যাচ দিয়ে। গত দেড় যুগে তিন সংস্করণ মিলিয়ে ৩৭৮ ম্যাচ (১২৫ টেস্ট, ১৯২ ওয়ানডে, ৬১ টি-টোয়েন্টি) পরিচালনা করেছেন তিনি। মেয়েদের ম্যাচ পরিচালনা করেছেন ৭৯টি। ২০১০ সালে স্বদেশি আম্পায়ার রুডি কোয়ের্তজেন অবসর নিলে তার জায়গায় আইসিসির এলিট প্যানেলভুক্ত হন।
এএইচএস