অর্থের লোভেই ক্লাবগুলোর সুপার লিগ-ফন্দি, মন্তব্য জেমি ডে’র
ইউরোপিয়ান ফুটবলে বাজছে বিদ্রোহের সুর। ইংল্যান্ড, স্পেন ও ইতালির শীর্ষ ক্লাবগুলো উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বেরিয়ে নিজেরাই মহাদেশীয় টুর্নামেন্ট আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে। ম্যানেচস্টার, চেলসি, রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনার এই ঘোষণাকে স্রেফ আর্থিক কারণ হিসেবেই দেখছেন বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের ব্রিটিশ কোচ জেমি ডে ও বসুন্ধরা কিংসের স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজন।
জাতীয় দলের ব্রিটিশ কোচ জেমি ডে ছুটি কাটাতে এখন লন্ডনে রয়েছেন। নিজ দেশের শীর্ষ ক্লাবগুলোর এই ঘোষণায় বিস্মিত সাবেক এই ইংলিশ ফুটবলার, ‘বিদ্যমান চ্যাম্পিয়ন্স লিগই সেরা ইউরোপের জন্য। বড় ক্লাবগুলো আর্থিক দিক বিবেচনা করে হয়তো এটি ভাবছে।’ ইংল্যান্ডে করোনা পরিস্থিতি নাজুক হলেও জেমির সঙ্গে যাদের ফুটবল নিয়ে আলোচনা হচ্ছে তাদের প্রায় সবাই ম্যানইউ, চেলসি, আর্সেনালের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করছেন বলে জানিয়েছেন।
ইউরোপের শীর্ষ ক্লাবগুলো এই ঘোষণা দিলেও শেষ পর্যন্ত এর বাস্তবায়ন হবে না বলে মনে করেন জেমি ডে। জেমির সঙ্গে একমত স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজনও। তিনি মনে করেন টিভি স্বত্ত্ব ও স্পন্সরশিপের অর্থের জন্যই শীর্ষ ক্লাবগুলোর এই অবস্থান, ‘২০২৪ সাল থেকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ বড় আঙ্গিকে হবে। ২০২৪ সাল থেকে অনেক ছোট ক্লাবও চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার সুযোগ পাবে। সেই ছোট ক্লাবগুলোও আর্থিকভাবে উপকৃত হবে। উয়েফার এই অবস্থানের জন্যই শীর্ষ ক্লাবগুলো এই ঘোষণা দিয়েছে। তারা মনে করছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দলের সংখ্যা বাড়লে তাদের টিভি রাইটস ও স্পন্সরশিপ অর্থ কমে যাবে। বড় ক্লাবগুলোর শেয়ার বা লাভ আরও বেশি হওয়া উচিত।’
রিয়াল, বার্সা, ম্যানইউয়ের আলাদা টুর্নামেন্ট করার পরিকল্পনা সফল হওয়ার কোনো রাস্তা দেখছেন না অস্কার, ‘আদতে তাদের এই আয়োজন সম্ভব হবে না। ইতোমধ্যে ওই দেশগুলোর জাতীয় ফেডারেশন এর বিপক্ষে। উয়েফা তাদের অবস্থান ব্যক্ত করেছে। এমনকি এই প্রতিযোগিতায় খেলা ফুটবলাররাও জাতীয় দলের হয়ে খেলার সুযোগ হারাতে পারে।’ অস্কারের এই মন্তব্যের সঙ্গে পুরোপুরি একমত জেমিও।
ইংলিশ এফএ, স্পেনিশ ফেডারেশনের শক্ত অবস্থানের পরও দুই দেশের শীর্ষ ক্লাবগুলোর অনড় অবস্থানকে স্রেফ দর কষাকষির জন্য বিবেচনা করছেন জেমি ও অস্কার, দুই পক্ষই তাদের অবস্থানে অনড়। ফেডারেশন, ফিফা উয়েফার পক্ষে থাকায় শেষ পর্যন্ত বড় ক্লাবগুলো তাদের শেয়ার, টিভি রাইট , মার্কেটিং এই বিষয়গুলো নিয়ে দর কষাকষি করবে শেষ পর্যন্ত।’
এখন চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ৩২টি ক্লাব খেলে। ২০২৪ সাল থেকে সেই সংখ্যা দাড়াবে ৩৬ এ। নতুন এই ফরম্যাটে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ চ্যাম্পিয়ন দলকে ১৭ টি ম্যাচ খেলতে হবে টুর্নামেন্টে। ৩৬ টি দলই প্রাথমিক পর্বে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে পদ্ধতিতে ন্যূনতম দশটি করে ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে। যেখানে এখন পাচ্ছে মাত্র ছয়টি।
উয়েফার নতুন এই পরিকল্পনায় ইংল্যান্ড, স্পেন ও ইতালির শীর্ষ ক্লাবগুলো ভাবছে তাদের খরচ বাড়লেও আয় সেই অর্থে থাকবে না। পাশাপাশি নতুন ও ছোট ক্লাবগুলোও আর্থিকভাবে উপকৃত হবে যতটা না তারা তত লাভবান হবে।
এজেড/এটি