‘ভালো না করলে তো লেগ স্পিনার খেলাবে না’
গত এক দশকে বিশ্ব ক্রিকেটে কব্জি ঘোরানো স্পিনারদের দাপট বাড়ছেই। কিন্তু সেই স্রোতে বাংলাদেশ পায়নি মানসম্মত তেমন কোনো লেগস্পিনার। একটা সময় লেগ স্পিনার খেলানো বাধ্যতামূলক করেছিল বিসিবি। কিন্তু তাতেও কিছুতেই যেন দেখা মিলছে না সেই সোনার হরিণের! তবে সম্প্রতি বিসিবির আশার পালে হাওয়া দিয়েছেন রিশাদ হোসেন। এ ছাড়া আগামী দিনে দেশের ক্রিকেটে লেগস্পিনের শূন্যতা ঘোচাতে পারেন অনূর্ধ্ব-১৯ দলের লেগস্পিনার ওয়াসি সিদ্দিকী।
প্রথমবার যুব এশিয়া কাপ জেতা বাংলাদেশ দলের গর্বিত সদস্য তিনি। যদিও সব মিলিয়ে ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছেন মোটে একটি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেই ম্যাচে ৩ উইকেট নেওয়ার পরও টিম কম্বিনেশনের কারণে একাদশে জায়গা মেলেনি। ছোট্ট ক্যারিয়ারে যুব দল, ঘরোয়া ক্রিকেট এমনকি জাতীয় দলের সঙ্গেও পরিচয় হয়ে গেছে ওয়াসির। ভারতে ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের নেট বোলার হিসেবে দেখা গেছে তাকে। তখন থেকেই ওয়াসি আলোচনায়।
২০২০ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ দল। কিন্তু বয়সভিত্তিক এই বিশ্বকাপের পরবর্তী আসরে একেবারেই সুবিধা করতে পারেনি যুব টাইগাররা। এক আসর বাদে আবারও শিরোপা পুনরুদ্ধারের বড় স্বপ্ন দেখছে মাহফুজুর রহমান রাব্বির দল। কদিন আগে এশিয়া কাপ জয় আত্মবিশ্বাস আরও বাড়িয়েছে ইয়াং টাইগার্সদের।
দক্ষিণ আফ্রিকায় শুরুর অপেক্ষায় থাকা যুব বিশ্বকাপ নিয়ে ঢাকা পোস্টের সঙ্গে কথা বলেছেন ওয়াসি সিদ্দিকী। তার সঙ্গে কথা বলেছেন সাকিব শাওন।
ঢাকা পোস্ট : বাংলাদেশে অনেক লেগ স্পিনার আশা জাগিয়েও হারিয়ে গেছে, এর কারণ কী...
ওয়াসি: সবাই কিন্তু চায় আমিও চাই ভালো করতে। আপনিও চান বাংলাদেশ দল জিতুক দিনশেষে। আসলে লেগ স্পিনাররা যদি ভালো বোলিং না করতে পারে অবশ্যই দল খেলাবে না। আমরা যদি ভালো বোলিং করতে পারি, রিশাদ ভাই ভালো করেছে রিসেন্টলি। এখন আমরা ভালো করছি বলেই আমাদের খেলাচ্ছে। আমরা ভালো করলেই খেলাবে, আমাদের নিজেদের উন্নত করতে পারলেই সামনে সবকিছু পরিবর্তন হতে শুরু করবে ইনশাআল্লাহ।
ঢাকা পোস্ট : যুব এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন হলেও খুব একটা ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি। বিশ্বকাপে লেগ স্পিনার হিসেবে বাড়তি চাপ অনুভব করছেন কি না?
ওয়াসি: না, চাপের কিছু নেই আলহামদুলিল্লাহ। টিম যেটা চাইবে এটার উপরই ডিপেন্ড করবে সবকিছু। আমাকে যদি খেলায় সেরাটা দেওয়ার লক্ষ্যই তো থাকবে।
ঢাকা পোস্ট : আফ্রিকায় পেস বান্ধব উইকেটে চ্যালেঞ্জ কেমন দেখছেন...
ওয়াসি: চ্যালেঞ্জ তো সব জায়গাতেই থাকে। দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেট একটু পেসার ফ্রেন্ডলি হয়। দেখা যাক ইনশাআল্লাহ যারা দলে আছে ভালো করবে। এতটুকুই আশা আছে।
ঢাকা পোস্ট : বিশ্বকাপ একাদশে জায়গা পেতে কতটা আশাবাদী...
ওয়াসি: হ্যাঁ অবশ্যই আমি তো আশাবাদী। এখন বাকিটা সুযোগের অপেক্ষা। যখনই সুযোগ পাই না কেন সেটা কাজে লাগানোটাই বড় লক্ষ্য থাকবে।
ঢাকা পোস্ট : এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে বিশ্বকাপ খেলবেন এটা এগিয়ে রাখবে কি না..
ওয়াসি: অবশ্যই। আমরা তো প্লাস পয়েন্ট হিসেবেই দেখছি। আমাদের সবার অনেক ভালো একটা প্রস্তুতি ছিল এই দেড় বছর। বিশ্বকাপকে ঘিরেই এই প্রস্তুতি। আলহামদুলিল্লাহ আমরা এশিয়া কাপ জিতেছি, বিশ্বকাপেও ভালো কিছু আশা করছি। যাতে করে ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি। বিশ্বকাপের জন্য সবাই এক্সসাইটেড ভালো করার জন্য।
ঢাকা পোস্ট : ভারত বিশ্বকাপে দলের সঙ্গে ছিলেন, কতটা শিখতে পেরেছেন?
ওয়াসি: অবশ্যই অনেক কিছু শিখতে পেরেছি। আমার জীবনের সবথেকে বড় লার্নিং পাট ছিল ওটাই। জাতীয় দল কি রকম হয়, তারা কিভাবে অনুশীলন করে, লেভেলটাই কি ডিমান্ড করে, কিভাবে থাকতে হয়, কিভাবে খেতে হয় সবকিছুই শিখেছি। অনেক কিছুই শিখেছি। যা শিখেছি বিশ্বকাপে এবার কাজে লাগানোর চেষ্টা থাকবে।
ঢাকা পোস্ট : টাইগার কোচ হাথুরু বিশেষ কিছু বলেছিল কী না...
ওয়াসি: আমার ছোটোখাটো যে কাজগুলো রয়েছে স্কিলের সেইগুলো নিয়ে কথা হতোই। আর আলাদা তেমন কিছু বলেনি। আমার স্কিলের যেগুলো দরকার ছিল সেগুলো নিয়েই কথা হতো কোচের সাথে। সবসময় চেষ্টা করতাম শেখার আর কি।
ঢাকা পোস্ট : সাকিব বা মুশফিকরা বোলিং নিয়ে কিছু বলেছিল কি না
ওয়াসি: সবাই ভালো বলেছে। তখন বোলিংটা ভালো হয়েছিল, সাকিব ভাই বলেছিল যে বলের স্পিডটা ভালো আছে, তুমি একটু ছোটো আছো তো নিজেকে আরো উপরে যখন খেলবা তখন আরো ভালো হবে। বোলিং অনেক ভালো করবে।
ঢাকা পোস্ট : বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হবেন এমনটা লক্ষ্য আছে নিশ্চয়...
ওয়াসি: আমাদের অল ওভার টিমের সবার পারফর্ম অনেক ভালো। এশিয়া কাপ থেকে চ্যাম্পিয়নের একটা ফিল রয়েছে সেটা কাজে লাগবে। ইনশাআল্লাহ আমার মনে হয় সবাই অনেক ভালো শেপে আছে। বিশ্বকাপে ভালো কিছুর প্রত্যাশা। প্রথম ম্যাচ ভারতের সাথে তাদের সাথে সবাই আমরা ভালো খেলে আসছি। তো সেই কনফিডেন্ট এই ম্যাচে সবার কাজে লাগবে।
এসএইচ/এফআই