ফিফা ফেয়ারপ্লে অ্যাওয়ার্ড পেল ব্রাজিল
গত কয়েক বছর ধরেই বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন ব্রাজিলের বেশ কয়েকজন ফুটবলার। বিশেষ করে ভিনিসিয়ুস জুনিয়র এ নিয়ে বেশ স্বোচ্ছার। তাকে সমর্থন দিচ্ছে দেশটির ফুটবল ফেডারেশনও। বর্ণবাদের বিরুদ্ধে শক্তিশালি অবস্থানের জন্য এবার ফিফা ফেয়ারপ্লে পুরস্কার পেয়েছে ব্রাজিল জাতীয় দল।
গতকাল সোমবার রাতে লন্ডনে ফিফা দ্য বেস্ট-২০২৩ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ অনুষ্ঠানে ব্রাজিলের পক্ষে ফেয়ারপ্লের পুরস্কারটি নিতে সাবেক সতীর্থদের সঙ্গে মঞ্চে উঠেছিলেন দেশটির কিংবদন্তি রাইটব্যাক কাফু। তিনি বলেছেন, ‘এই পুরস্কারের জন্য (ব্রাজিলের খেলোয়াড়দের) অভিনন্দন। পৃথিবীতে অসমতার কোনো জায়গা নেই। ফুটবল সমাজে সমতা নিয়ে আসতে পারে।’
একইদিনে ঘোষণা করা হয়েছে বর্ষসেরা পুরুষ ফুটবলার, নারী ফুটবলার, বর্ষসেরা পুরুষ ও নারী গোলরক্ষক, বর্ষসেরা নারী ও পুরষ কোচ, ফিফা পুসকাস অ্যাওয়ার্ড, ফিফা স্পেশাল অ্যাওয়ার্ড ও ফিফা ফ্যান অ্যাওয়ার্ড। তবে সব আলো যেন এদিন কেড়ে নিয়েছে বর্ষসেরা পুরুষ ফুটবলের অ্যাওয়ার্ড।
ফিফা দ্য বেস্টের ইতিহাসে এবারই সবচেয়ে বেশি প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ ভোটিং হয়েছে। পুরস্কারের দাবিদার প্রশ্নে ফেবারিট ছিল আর্লিং হালান্ড। তিনি পেয়েছিলেন ৪৮ পয়েন্ট। মেসিও পেয়েছেন ৪৮ পয়েন্ট। দুইজনের টাইয়ের সুবাদে ভাগ্য নির্ধারণ হয় জাতীয় দলের অধিনায়কদের ভোটে। আর এতেই প্রথম পছন্দের তালিকায় এগিয়ে থাকায় মেসির হাতগে উঠেছে বর্ষসেরার পুরস্কার। ফিফার ‘রুলস অব অ্যালোকেশন’ এর ১২ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত।
এদিকে অনুষ্ঠানে মেসি উপস্থিত থাকতে না পারায় তার হয়ে পুরস্কার গ্রহণ করেন ফ্রেঞ্চ কিংবদন্তি এবং মেসির সাবেক সতীর্থ থিয়েরি অঁরি। এ নিয়ে তৃতীয়বার এবং সবশেষ টানা দুইবার ‘ফিফা দ্য বেস্ট’ হলেন লিওনেল মেসি। ২০১৯ ও ২০২২ সালে ফিফা বর্ষসেরা হয়েছিলেন আর্জেন্টিনার অধিনায়ক।
অপরদিকে ফিফা দ্য বেস্ট এ (বর্ষসেরা) নারী ফুটবলারের ক্যাটাগরিতে সেরা হয়েছেন স্পেনের বিশ্বকাপ জয়ী আইতানা বোনমাতি। সংক্ষিপ্ত তালিকায় বাকি দুজন ছিলেন কলম্বিয়ার লিন্ডা কাইসেদো এবং বোনমাতির জাতীয় দল সতীর্থ হেনি হেরমোসো।
এবারের ফিফা দ্য বেস্টের মঞ্চ সাজানো হয়েছিল নারী ফুটবলকে উদ্যাপনের ছায়া ধরে রেখে। আর তাতে আইতানা বোনমাতির মেয়েদের ‘দ্য বেস্ট’ বর্ষসেরা হয়ে কেড়ে নিলেন সব আলো। রুবিয়ালেসের চুমুকাণ্ডের কথা এখনো ভোলেননি বোনমাতি। বক্তব্যের শেষেও দিয়েছেন তারই ইঙ্গিত, ‘আমি সেই শক্তিশালী নারীদের প্রজন্মের একজন, যারা এই খেলার সঙ্গে বিশ্বকেও পাল্টে দিচ্ছে।’
এছাড়া ছেলেদের সেরা কোচ ঘোষণায় যা হওয়ার কথা ছিল তাই হয়েছে। ফিফা ‘দ্য বেস্ট’ কোচের পুরস্কার উঠেছে ‘ট্রেবল’ জেতা স্প্যানিশ কোচ পেপ গার্দিওলার হাতে। প্রতিদ্বন্দ্বী লুসিয়ানো স্প্যালোত্তি কিংবা ফিলিপে ইনজাঘির চেয়ে অনেক বড় ব্যবধানেই এগিয়ে ছিলেন তিনি। সেরা নারী কোচ হয়েছেন ইংল্যান্ড নারী দলের ডাচ কোচ সারিনা ভাইগমান।
সিটির হয়ে ট্রেবলজয়ী ব্রাজিলিয়ান গোলকিপার এদেরসনের হাতে উঠেছে ছেলেদের ‘দ্য বেস্ট’ গোলকিপারের পুরস্কার। সংক্ষিপ্ত তালিকায় তার সঙ্গে ছিলেন মরক্কো ও আল হিলালের গোলরক্ষক ইয়াসিন বোনো। গেলবছর সৌদিতে পা রাখার আগে সেভিয়াকে জিতিয়েছিলেন ইউরোপা লিগের শিরোপা। তৃতীয় হয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদের গোলকিপার থিবো কোর্তোয়া। ইংল্যান্ড ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের গোলকিপার মেরি আর্পস টানা দ্বিতীয়বারের মতো জিতেছেন মেয়েদের ‘দ্য বেস্ট’ গোলকিপারের ট্রফি।
ফিফা দ্য বেস্ট পুরস্কার মূলত লিগ মৌসুমে (আগস্ট-আগস্ট) বছরের সেরা পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে দেওয়া হয়ে থাকে। তবে কাতার বিশ্বকাপের কারণে এবারের পারফরম্যান্সের সময় ধরা হয় ২০২২ সালের ১৯ ডিসেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ২০ আগস্ট পর্যন্ত।
এইচজেএস