নভেম্বরের বেতনই পাননি সাবিনারা, স্টাফরা পেয়েছেন ডিসেম্বরের
নতুন বছরের দু’দিন পার হয়েছে ইতোমধ্যে। কিন্তু এখনও আগের বছরের দুই মাসের বেতন বকেয়া রয়ে গেছে সাবিনা খাতুনদের। গত ১৬ আগস্ট বাফুফে ৩১ নারী ফুটবলারের সঙ্গে চুক্তি করেছিল। সেই চুক্তি অনুযায়ী ১ সেপ্টেম্বর থেকে বর্ধিত হারে বেতন পাওয়ার কথা সাবিনা-মারিয়াদের। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর-ডিসেম্বর চার মাসের মধ্যে মাত্র দুই মাসের বেতন পেয়েছেন তারা।
ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে সিরিজ জিতে বেতন ও ম্যাচ ফি ছাড়াই বাড়িতে গিয়েছিলেন নারী ফুটবলাররা। এরপর তারা অক্টোবর মাসের বেতন পেয়েছিলেন। পনেরো দিনের ছুটি কাটিয়ে মেয়েরা ইতোমধ্যে অনুশীলনে ঘাম ঝরানো শুরু করলেও, এখনও নভেম্বর মাসের বেতনই পাননি।
ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার নারীদের বেতন বকেয়া প্রসঙ্গে বলেন, ‘নভেম্বরের বেতন ও সিঙ্গাপুরের ম্যাচ ফি (যারা খেলেছেন ম্যাচ প্রতি ১০ হাজার আর বেঞ্চে থাকা ফুটবলারদের ৫ হাজার) তারা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই পেয়ে যাবে।’
বাফুফের চেকে স্বাক্ষর করার অধিকার রয়েছে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী ও সহ-সভাপতি কাজী নাবিল আহমেদের। সালাউদ্দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং অন্য দু’জন ব্যস্ত নির্বাচনী এলাকায়। তবে সাবিনাদের বেতনের জন্য সালাম ও নাবিলের নির্বাচনী এলাকায় কাগজপত্র পাঠিয়েছে ফেডারেশন।
সাবিনারা এখনও নভেম্বর মাসের বেতন না পেলেও, ফেডারেশনের বেতনভুক্ত এক্সিকিউটিভরা মাস শেষ হওয়ার আগেই গত ২৮ ডিসেম্বর মাসের বেতন পেয়েছেন। ফেডারেশন অন্য স্টাফরা পেলেও শুধু পিছিয়ে আছেন সাবিনারাই। এর পেছনের সঠিক কারণ বলতে রাজি না হলেও প্রতিকারের আশ্বাস সাধারণ সম্পাদকের কণ্ঠে, ‘মেয়েরা আমাদের চেয়ে এক মাস পিছিয়ে রয়েছে। জানুয়ারির মধ্যে এটা হালনাগাদ হয়ে যাবে আশা করছি।’
মেয়ে ফুটবলাররা বাফুফের কর্মকাণ্ডে বেশ হতাশ। সাফের পর খেলা নেই, এছাড়া আরও অনেক বিষয়েও অভিমানে অনেক ফুটবলার ক্যাম্প ছেড়েছিলেন। আনুষ্ঠানিক চুক্তির পর অন্য মেয়েরা খানিকটা আশা পেলেও বর্তমান কর্মকাণ্ডে আবার তাদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে।
আরও পড়ুন
সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কয়েক মাস পর সাবিনারা বেতন বৃদ্ধির আন্দোলনও করেছিলেন। আর্থিক কারণে মার্চে অলিম্পিক বাছাইয়ে নারী ফুটবল দলকে মিয়ানমার পাঠাননি ফেডারেশন সভাপতি। তবে আশ্চর্যজনকভাবে আগষ্ট মাসেই নারী ফুটবলারদের বেতন কয়েকগুণ বৃদ্ধির ঘোষণা দেন তিনি। আনুষ্ঠানিক চুক্তির সময় ঘোষণা দিয়েছিলেন এসব কিছু পেশাদার আঙ্গিকে চলবে। অথচ, এরপর উল্টো বেতন ভোগান্তিতে পড়েছেন সাবিনারা।
বাফুফের নিয়ম-কানুন প্রায় সব কাগজ-কলমে, বাস্তবে তার ভিন্ন। বাফুফেতে আর্থিক সংকট প্রকট। আর্থিক সংস্থানের যোগান না করেই মেয়েদের বেতন বৃদ্ধি করেছিল ফেডারেশন। বেতন বৃদ্ধি একটি আর্থিক বিষয় হলেও অর্থ এবং নির্বাহী কমিটির অনুমোদনের আগেই মিডিয়ার সামনে চুক্তি অনুষ্ঠান করা হয়। যদিও মিডিয়ার সামনে চুক্তির পর নির্বাহী কমিটির সকলের কাছে মতামতের জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছিল।
এজেড/এএইচএস