আছে স্বীকৃতি, নেই পরিকল্পনা, কোয়ান্টাম স্কুলই ভরসা
বাংলাদেশে বৃহৎ বাঙালি জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি রয়েছে অনেক ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বসবাস। দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের মতো ক্রীড়াঙ্গনেও রয়েছে তাদের বিচরণ। ক্রীড়াক্ষেত্রে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের নিয়ে ঢাকা পোস্টের সিনিয়র স্পোর্টস রিপোর্টার আরাফাত জোবায়ের ধারাবাহিক প্রতিবেদনের চতুর্থ ও শেষ পর্বে তুলে ধরেছেন ক্রীড়াঙ্গনে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জাতীয় স্বীকৃতি থাকলেও তাদের জন্য নেই কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা। কোয়ান্টাম স্কুলের মাধ্যমে অনেক নৃ-গোষ্ঠী জাতীয় ক্রীড়াঙ্গনে উঠে আসছেন।
৬ জনের ক্রীড়া পুরস্কার
ক্রীড়াঙ্গনের অবদানের সর্বোচ্চ স্বীকৃতি জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় দেশের ক্রীড়াঙ্গনে অবদান রাখার জন্য জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার প্রদান করে। ১৯৭৬ সালে শুরু হওয়া এই পুরস্কার পেয়েছেন এখন পর্যন্ত প্রায় দুই শ ক্রীড়াবিদ,সংগঠক। এদের মধ্যে রয়েছেন ৬ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর। ১৯৮১ সালে কিংবদন্তী ফুটবলার মারী চৌধুরি প্রথম ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ক্রীড়াবিদ হিসেবে এই পুরস্কার পান। মারীর পর এই পুরস্কার পান কৃতি অ্যাথলেট শর্মিল রায়। তিনিও রাঙামাটি থেকে উঠে আসা ক্রীড়াবিদ।
কিংবদন্তী হকি খেলোয়াড় জুম্মন লুসাই জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার পেলেও নিজ হাতে গ্রহণ করতে পারেননি। ক্রীড়া পুরস্কার অনুষ্ঠান হওয়ার আগেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন। জুম্মন লুসাই যেমন হকির কিংবদন্তী তেমনি তার চাচাতো ভাই রামা লুসাই ফুটবল-হকি উভয় কিংবদন্তী। খেলোয়াড়ি জীবন শেষ করে ভারত চলে যাওয়ায় তিনি আলোচনার বাইরে। পুরস্কার পাওয়ার যোগ্যতা থাকলেও তিনি আর পুরস্কার পাননি।
গত বছর আট বছরের জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার একবারে দেয়া হয়েছে। আশির অধিক ক্রীড়া ব্যক্তিত্বকে পুরস্কার প্রদানের মধ্যে ছিলেন জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার বরুন বিকাশ দেওয়ান ও অ্যাথলেটিক্স সংগঠক অরুণ চাকমা।
আশির দশকে জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারের পাশাপাশি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কারও চালু ছিল। এই পুরস্কারটি মূলত সেই সময় বর্তমান খেলোয়াড়দের দেওয়া হতো। গাজী আশরাফ হোসেন লিপু, জুম্মন লুসাই, আশরাফউদ্দিন আহমেদ চুন্নুরা জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারের মতো এই পুরস্কারও পেয়েছেন খেলোয়াড়ি জীবনেই। অনেক দিন বন্ধ থাকা এই পুরস্কার ২০২১ সাল থেকে শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার হিসেবে পুনরায় চালু হয়েছে। খেলোয়াড়দের পাশাাপশি সংগঠক, পৃষ্ঠপোষক, সাংবাদিক নানা ক্যাটাগরিতে পুরস্কার প্রদান করা হচ্ছে। জাতীয় ক্রীড়া ফেডারেশনে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রথম সাধারণ সম্পাদক কারাতে ফেডারেশনের ক্য শৈ হ্ল সংগঠক হিসেবে এই পুরস্কার পেয়েছেন।
মশাল প্রজ্বলন ,পতাকা বহন ও স্টেডিয়াম নামকরণ
বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন দেশের অন্যতম শীর্ষ ক্রীড়া সংস্থা। ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আসরে নানা ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের সম্মানিত করেছে এই সংস্থাটি। বাংলাদেশের অলিম্পিক হিসেবে খ্যাত বাংলাদেশ গেমস। ২০০২ সালের পর ১১ বছর বিরতি দিয়ে ২০১৩ সালে বাংলাদেশ গেমস অনুষ্ঠিত হয়। ঘরোয়া খেলাধুলায় সর্ববৃহৎ মিলনমেলা ও সর্বোচ্চ খেলার মশাল প্রজ্বলন করেছিল জুম্মন লুসাই। বিশিষ্ট ক্রীড়া ব্যক্তিত্বরা জাতীয় আন্তর্জাতিক পর্যায়ের গেমসে মশাল প্রজ্বলন করেন। বাংলাদেশের হকির অন্যতম কিংবদন্তী জুম্মন লুসাইকে মশাল প্রজ্বলনের জন্য নির্বাচিত করে সম্মান প্রদান করে বিওএ।
ঘরোয়া গেমসে মশাল প্রজ্বলনের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক গেমসে বাংলাদেশের পতাকা বহনের কৃতিত্ব রয়েছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর। ২০২২ বার্মিংহাম কমনওয়েলথ গেমসে বাংলাদেশের পতাকা বহন করেছিলেন সুর কৃষ্ণ চাকমা। অলিম্পিকের পর কমনওয়েলথ বৈশ্বিক দ্বিতীয় বড় গেমস। সেই গেমসে অ্যাথলেট মার্চ পাস্টে বাংলাদেশের পতাকা বহন করাও বড় গৌরবের। বিওএ সম্প্রতি অ্যাথলেট কমিশন গঠন করেছে। কৃতি অ্যাথলেটরা ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়নের জন্য বিওএ কমিটিকে নানা সুপারিশ করতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ এই কমিটির সদস্য মনোনীত হয়েছেন সুর কৃষ্ণ।
বিশ্বের অনেক স্টেডিয়ামের নাম কৃতি ক্রীড়াবিদদের নামে। বাংলাদেশে অবশ্য এই সংস্কৃতি খুব একটা নেই। রাজধানী ঢাকায় যত স্টেডিয়াম প্রায় সবই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের নামে। জেলা স্টেডিয়ামগুলোর নামকরণও বেশিরভাগ রাজনৈতিক ব্যক্তির নামেই। হাতে গোণা কয়েকটি ব্যতিক্রমও রয়েছে। ২০১২ সালে মারীর মৃত্যুর পর রাঙামাটি জেলা স্টেডিয়ামের নামকরণ হয় মারীর নামে।
নেই বিশেষ পরিকল্পনা
বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর রয়েছে বিশেষ অবদান। নানা প্রতিবন্ধকতা ও সংকটের মধ্যেও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর অনেকে ক্রীড়াঙ্গনে সর্বোচ্চ শিখরে উঠেছেন। কয়েকটি খেলা রীতিমতো ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী নির্ভর। অনেক খেলায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সম্পৃক্ততা আরো বাড়লে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বাংলাদেশের সম্ভাবনা বাড়ে। এজন্য সরকার, ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং ফেডারেশন কোনো পক্ষেরই নেই বিশেষ পরিকল্পনা।
স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের জন্য ক্রীড়াঙ্গনে বিশেষ কোনো নীতিমালা বা সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিতে নেই তেমন কোনো উদ্যোগ। চট্টগ্রাম বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সিরাজউদ্দিন মো. আলমগীর পার্বত্য তিন জেলা নিয়ে বিশেষ ক্রীড়ার পরিকল্পনা প্রয়োজনের কথা বললেন, ‘এই বছর অনুষ্ঠিত যুব গেমসে চট্টগ্রাম বিভাগ ৪৯ স্বর্ণদপক পেয়েছে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ৪৯ স্বর্ণের মধ্যে ৩১ টি স্বর্ণ পার্বত্য অঞ্চলের খেলোয়াড়রা এনেছেন। এদের বিশেষ পরিচর্যা করলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও পদক পাওয়া সম্ভব। ’
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ এমনকি ফেডারেশন উদ্যোগ না নিলেও চট্টগ্রাম বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা একটি উদ্যোগ নিয়েছে। বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সভায় পার্বত্য অঞ্চলে গুরুত্ব আরোপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছি। তিন পার্বত্য জেলা মিলে একটি স্পোর্টস এক্সিলেন্স সেন্টার অথবা বিকেএসপির শাখা খোলার আহ্বান জানানো হয়েছে।’ ৯ অক্টোবর ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিবকে পাঠানো চিঠিটি অবশ্য তেমন কার্যকারিতা এখনো পরিলক্ষিত হয়নি।
ক্রিকেট ছাড়া অন্য সকল খেলায় ভারতের বিশেষ অবদান রয়েছেন সেভেন সিস্টার্সের। তুলনামূলক কম উন্নত সাত রাজ্যের খেলোয়াড়দের নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা থাকে ভারতের। এর ফল ভারত পেয়েছে অলিম্পিকেও। টোকিও অলিম্পিকে ভারোত্তোলক মীরাবাঈ পদক জিতেছিলেন। জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত ফুটবলার ও রাঙামাটি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক বরুন বিকাশ দেওয়ান বেশ আক্ষেপের সুরেই বলেন, ‘পাহাড়ে অনেক মেধা রয়েছে এদের দিকে সেভাবে তাকানো হচ্ছে না। জেলা ক্রীড়া সংস্থার পক্ষে সব কিছু সম্ভব নয়। ফেডারেশন, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ও মন্ত্রণালয় একসঙ্গে পরিকল্পনা করলে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীরা ক্রীড়াঙ্গনে আরো অনেক কিছু দিতে পারবে।’
আরও পড়ুন
পার্বত্য বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর নিজেও ক্রীড়াঙ্গনের লোক। নিজে রেফারি ছিলেন ফুটবল ফেডারেশনের সহ-সভাপতিও ছিলেন। পার্বত্য অঞ্চল ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ক্রীড়ায় তিনি তেমন উন্নত ভূমিকা রাখতে পারেননি বলে মন্তব্য ক্রীড়া সংশ্লিষ্টদের।
কারাতে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ক্য শ্ল হ্লা বান্দরবান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। বাকি ৬১ জেলার চেয়ে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের ক্ষমতা ও পদমর্যাদা বেশি। তিনি পার্বত্য ক্রীড়াঙ্গন নিয়ে বলেন, ‘জেলা পরিষদ ও পার্বত্য মন্ত্রণালয় তিন জেলার অনেক রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক দায়িত্ব পালনেই ব্যস্ত থাকে। এই অঞ্চলে ক্রীড়াঙ্গনে অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সম্ভাবনা বাস্তবে রূপ দিতে পরিকল্পনা প্রয়োজন ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের। এরপর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মাধ্যমে জেলা ক্রীড়া সংস্থাগুলোর।’
নেই তাদের কোনো সংগঠন-সমিতি
ক্রীড়াঙ্গনে রয়েছে অনেক সংগঠন-সমিতি। খেলোয়াড়দের অধিকার আদায়ের জন্য অনেক খেলায় খেলোয়াড় কল্যাণ সমিতি, সংগঠকদের জেলা ও ক্লাব ভেদে আছে নানা সংগঠন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিক রয়েছে অনেক ক্রীড়া সংগঠন। অন্য সব ক্ষেত্রের মতো ক্রীড়াঙ্গনেও রয়েছে দেশের দুই রাজনৈতিক দলের সমমনা সংগঠকদের সংগঠন। এত সংগঠন - সমিতি সংস্থা থাকলেও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ক্রীড়াবিদদের নেই কোনো সংগঠন-সমিতি।
দীর্ঘদিন ক্রীড়াঙ্গনের সঙ্গে জড়িত সিলেট জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদিকা লুসাই নৃগোষ্ঠীর মারিয়াম চৌধুরি বলেন, ‘জাতীয় পর্যায়ে যারা আমাদের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ক্রীড়াবিদ সংগঠক রয়েছে তাদের একটা সমিতি বা সংগঠন হলে ক্রীড়াঙ্গনে আমাদের কমন কিছু বিষয়ে কাজ করা যেত। আসলে এ রকম উদ্যোগ কখনো নেয়া হয়নি।’
ব্যাডমিন্টনের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন মণিপুরি নৃ-গোষ্ঠীর গৌরব সিংহ এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘আসলে আমরা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ক্রীড়াঙ্গনেও সংখ্যায় ক্ষুদ্র। সবাই যার যার ডিসিপ্লিন নিয়ে ব্যস্ত। এটা সাবেকরা উদ্যোগ নিলে কার্যকর হতে পারে।’
পার্বত্য বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর নিজেও ক্রীড়াঙ্গনের লোক। নিজে রেফারি ছিলেন ফুটবল ফেডারেশনের সহ-সভাপতিও ছিলেন। পার্বত্য অঞ্চল ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ক্রীড়ায় তিনি তেমন উন্নত ভূমিকা রাখতে পারেননি বলে মন্তব্য ক্রীড়া সংশ্লিষ্টদের।
বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি ও আরো অনেক ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী কোটা রয়েছে। মূলত পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীদের সামনে আনতেই এই উদ্যোগ। ফেডারেশনের কমিটি, বিকেএসপিতে ভর্তি, কোচ নিয়োগসহ অনেক ক্ষেত্রে ক্রীড়াঙ্গনেও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী কোটা প্রয়োজন বলে মনে করেন অনেকে। এ সকল অধিকার আদায়ের জন্য ক্রীড়াঙ্গনে এখনো কোনো সংগঠন - সমিতি গড়ে তুলতে পারেনি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ক্রীড়াবিদ - সংগঠকেরা।
কোয়ান্টামই ভরসা
বান্দরবানের লামায় কোয়ান্টাম কসমো স্কুল প্রতিষ্ঠিত। এই স্কুল শুধু পড়াশোনা নয়, খেলাধুলাতেও যথেষ্ট অবদান রাখছে। গত আট বছর জাতীয় স্কুল ও মাদ্রাসা খেলাধুলায় টানা চ্যাম্পিয়ন। এই স্কুলে বাঙালির পাশাপাশি অনেক ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পড়াশোনা করে। সমাজে পিছিয়ে পড়া ও আর্থিকভাবে দরিদ্রদের পড়াশোনা ও খেলার আলোতে আনে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল। কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে পরিচালিত হয় এই স্কুলের শিক্ষা ও খেলাধুলার কার্যক্রম।
জাতীয় জিমন্যাস্ট শাঙ্খে খুমি কোয়ান্টাম কসমো স্কুল সম্পর্কে বলেন , ‘আমার বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ ঘটে যখন আমি ছোট। কোয়ান্টামের কসমো স্কুলই আমাকে বড় করে তুলেছে। আজ আমি জাতীয় জিমন্যাস্ট ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছি এর পেছনে মূল অবদান কোয়ান্টাম কসমো স্কুলের।’
টেবিল টেনিসের বিস্ময় রামহিম লিয়ান বম। এই বছর একই সঙ্গে জুনিয়র ও সিনিয়র জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অসাধারণ কীর্তি গড়েছেন রামহিম। সেই রামহিমের বেড়ে উঠাও কসমো স্কুলে, ‘টেবিল টেনিসে আমার হাতে খড়ি কসমো স্কুলেই। সেখান থেকেই আমার টিটি খেলোয়াড় হওয়ার স্বপ্ন এবং পথচলা শুরু।’
বাংলাদেশের জিমন্যাস্টিক্স ফেডারেশন আর কসমো স্কুল এখন ওতপ্রোত সম্পর্ক। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান জামিল বলেন,‘ বাংলাদেশের জিমন্যাস্টিক্সের অন্যতম যোগান দাতা কসমো স্কুল। তাদের অসাধারণ উদ্যোগের ফলে আমরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানের জিমন্যাস্ট পাচ্ছি।
কসমো স্কুলের শিক্ষা বিভাগের প্রধান সালেহ আহমেদ তাদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে বলেন, ‘শিক্ষার পাশাপাশি খেলাধূলাতেও আমরা সমান জোর দেই। জিমন্যাস্টিক্স , টিটি, বাস্কেটবল,হ্যান্ডবল, সহ আটটি ডিসিপ্লিনে আমাদের এখানে প্রতিনিয়ত অনুশীলন হয়। ঢাকা থেকে জাতীয় মানের প্রশিক্ষক আমাদের এখানে অনুশীলন করায়। অনুশীলনের ব্যবস্থাও দারুণ।’
কোয়ান্টাম আগে অনেক খেলায় অংশগ্রহণ করলেও সাম্প্রতিক সময়ে হ্যান্ডবলে জাতীয় পর্যায়ে খেলছে না। এতে প্রভাব পড়ছে জাতীয় হ্যান্ডবলে। কোয়ান্টামের পাশাপাশি সরকারকে এগিয়ে আসার আহ্বান চট্টগ্রাম বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদকের, ‘কোয়ান্টাম স্কুলের মাধ্যমে ক্রীড়াঙ্গনে প্রভাব আমরা এর মধ্যে টের পেয়েছি। তারা বেসরকারিভাবে করছে ফলে এখন কিছু ডিসিপ্লিন স্থগিতও করেছে তাদের পরিকল্পনা মতো। সরকার থেকে এমন উদ্যোগ নেয়া হলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশকে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর অনেকেই ভালো কিছু উপহার দিতে পারবে।’
এজেড/জেএ