সুপার লিগের পক্ষে আদালতের রায়, হারল ফিফা-উয়েফা
উয়েফার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের আদলে আরেকটি টুর্নামেন্ট চালুর বিশাল পরিকল্পনা নিয়ে নেমেছিলেন রিয়াল মাদ্রিদের সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ। তার পরিকল্পিত সেই ইউরোপিয়ান সুপার লিগকে (ইএসএল) ‘বিদ্রোহী লিগ’ আখ্যা দিয়ে বিপক্ষে দাঁড়িয়েছিল ফিফা ও উয়েফার মতো ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো। তারা ইউরোপিয়ান সুপার লিগকে নিষিদ্ধও করেছিল। যাকে ইউরোপের সর্বোচ্চ আদালত আজ (বৃহস্পতিবার) বেআইনি বলে রায় দিয়েছেন। এর মাধ্যমে দুই জায়ান্ট সংস্থার জালে গোল দিয়ে বসেছেন পেরেজ!
ইউরোপিয়ান কোর্ট অব জাস্টিসের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, ইউরোপিয়ান সুপার লিগে যোগদানে বিরত রাখতে ক্লাবগুলোকে নিষিদ্ধ করার কার্যক্রম বেআইনি। এর মাধ্যমে ফিফা ও উয়েফা ‘‘ক্ষমতার সর্বোচ্চ অপব্যবহার’’ করেছে বলে মনে করছেন আদালত। এ নিয়ে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছিল মূলত ইএসএল ও লিগটির সমর্থকদের দাবির ভিত্তিতে। তারা অভিযোগ তুলেছিল— উয়েফা ও ফিফা কোনো সুনির্দিষ্ট লিগে অংশগ্রহণ থেকে ক্লাবগুলোকে আটকে রেখে প্রতিযোগিতামূলক আইন লঙ্ঘন করেছে।
আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, যখন নতুন কোনো প্রতিযোগিতা বাজারে প্রবেশ করবে, তখন ফিফা এবং উয়েফাকে অবশ্যই তাদের ‘স্বচ্ছ’, ‘উদ্দেশ্যমূলক’, ‘বৈষম্যহীন’ এবং ‘আনুপাতিক’ হতে হবে। সুপার লিগের ক্ষেত্রে ফিফা এবং উয়েফার ক্ষমতা এই জাতীয় কোনো মানদণ্ডের অধীন নয়। অর্থাৎ তারা (ফিফা ও উয়েফা) একটি প্রভাবশালী অবস্থানের অপব্যবহার করছে। স্বেচ্ছাচারী প্রকৃতির পরিপ্রেক্ষিতে নিষেধাজ্ঞার নিয়মগুলোকে অবশ্যই স্বাধীনতার ওপর অযৌক্তিক সীমাবদ্ধতা হিসেবে ধরে রাখতে হবে। এর মানে এই নয় যে, সুপার লিগ প্রকল্পের মতো একটি প্রতিযোগিতা অবশ্যই অনুমোদিত হতে হবে। আদালত তার রায়ে সেই নির্দিষ্ট প্রকল্প নিয়ে কোনো ধরনের মন্তব্য করছে না।
— EU Court of Justice (@EUCourtPress) December 21, 2023
এর আগে ২০২১ সালের এপ্রিলে ইএসএলে যোগদানের ব্যাপারে ১২টি ক্লাব ঘোষণা দিয়েছিল। পরবর্তীতে নানামুখী সমালোচনা ও সমর্থকদের আন্দোলনের মুখে তারা সেই ঘোষণা প্রত্যাহার করে নেয়। তাদের মধ্যে কেবল স্প্যানিশ জায়ান্ট বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদ সুপার লিগটিতে খেলার বিষয়ে অনড়। যা আদালতের নতুন রায়ের মাধ্যমে নতুন করে উজ্জ্বীবিত হতে পারে।
সুপার লিগের পরিকল্পনাকারী প্রতিষ্ঠান এ২২ স্পোর্টস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই রায়ে আনন্দ প্রকাশ করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। যেখানে ‘প্রতিযোগিতা করার অধিকার জয়ী’ বলে উল্লেখ করে তারা।
আরও পড়ুন
এর মাধ্যমে সুপার লিগ প্রতিযোগিতার বাজারে আত্মপ্রকাশের সুযোগ পেয়ে গেল। তবে সমর্থকদের বিশাল একটা অংশ এখনও এই রায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। যেখানে সক্রিয় অংশগ্রহণ করছেন লিভারপুল কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপও। আজকের রায়ের পরও ইউরোপিয়ান সুপার লিগের পরিকল্পনার বিপক্ষে থাকার ঘোষণা দেন তিনি।
এএইচএস