সৌম্যের ম্যারাথন ইনিংসেও আক্ষেপ বাংলাদেশের
দীর্ঘ ৫ বছর পর সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন সৌম্য সরকার। সবশেষ ২০১৮ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছিলেন এই টাইগার ক্রিকেটার। ফিফটি পেয়েছিলেন শেষ ২০১৯ সালে। এরপর থেকে বিভিন্ন সময় দলের প্রয়োজনে বা কোচের পছন্দে দলে এলেও ভাল কিছু করা হয়নি তার। তবে এবার যেন সবাইকে কিছুটা স্বস্তিই দিলেন সৌম্য। সেইসঙ্গে স্বস্তি পেয়েছেন তিনি নিজেও।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে নেলসনে নিজের ক্যারিয়ার সেরা ১৬৯ রান করেছেন ওপেনার সৌম্য। একইসঙ্গে দেশের ক্রিকেটে ওয়ানডে ইতিহাসে যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান। তবে এমন দিনেও দলীয় রানের বিচারে হইয়ত খানিক অতৃপ্তি থেকেই যাবে বাংলাদেশের। শেষ ওভারে দ্রুত উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ থেমেছে ২৯১ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে ৩০০ রান করতে না পারার আক্ষেপটাই হয়ত বড় হতে পাড়ে চন্ডিকা হাথুরুসিংহের শিষ্যদের জন্য।
নেলসনের সাক্সটন ওভালে টসে জিতে বাংলাদেশকে আগে ব্যাট করতে পাঠায় নিউজিল্যান্ড। সিদ্ধান্তটা কাজে আসে খানিক পরেই। ইনিংসে সাবধানী শুরু করেও নিজের স্কোর দুইয়ের বেশি টানতে পারেননি এনামুল হক বিজয়। দলীয় ১১ রানে বিজয়ের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। অ্যাডাম মিলনের লেন্থ বল খেলতে গিয়ে সেকেন্ড স্লিপে ক্যাচ দেন বিজয়। তা সহজেই তালুবন্দি করেন সেখানে থাকা কিউই অধিনায়ক টম লাথাম।
বড় স্কোর করা হয়নি অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তরও। ব্যক্তিগত ৬ রানে আউট হন টাইগার অধিনায়ক। জ্যাকব ডাফির দিনের প্রথম শিকার তিনি। শর্ট লেন্থের বল লেগ সাইডে ফ্লিক করতে চেয়েছিলেন শান্ত। তবে বল কানায় লেগে চলে যায় হেনরি নিকোলসের হাতে।
আরও পড়ুন
বিপদটা আরও বাড়িয়েছেন লিটন দাস। বিশ্বকাপের বাজে ফর্মটা এদিন নিউজিল্যান্ডেও টেনে এনেছিলেন তিনি। জ্যাকব ডাফির অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বল খেলতে গিয়ে কাভার পয়েন্টে থাকা উইল ইয়ংয়ের হাতে ক্যাচ দেন লিটন। ফেরার আগে মাত্র ৬ রান করে যান। ৪৪ রানে বাংলাদেশের নেই ৩ উইকেট।
এরপর তাওহিদ হৃদয়কে নিয়ে কিছুটা ইনিংস গুছিয়েছেন সৌম্য। তবে, দুর্ভাগ্যজনক এক রানআউটে থামতে হয় হৃদয়কে। বোলার পায়ে লেগে বল আঘাত হানে উইকেটে। নন-স্ট্রাইকে থাকা হৃদয়ের কিছুই করার ছিল না। দলের স্কোর তখন ৮০ রানে ৪ উইকেট। মুশফিকুর রহিম ক্রিজে এসে সৌম্যকে সঙ্গ দিয়েছেন অনেকটা সময়। দেখেশুনে খেলে নিজের আর দলের স্কোর বাড়িয়েছেন।
৩৫তম ওভারের পঞ্চম বলে দলীয় ১৭১ রানে আউট হন মুশফিক। জ্যাকব ডাফির অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বল খেলতে গেলে এজড হয়ে উইকেটরক্ষক টম ব্লান্ডেলের হাতে চলে যান। তা তালুবন্দি করতে ভুল করেননি ব্লান্ডেলের। ব্যক্তিগত ইনিংসে ৪৫ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন তিনি। ডাফির তৃতীয় শিকার হয়ে তাকেও ফিরতে হয় বড় স্কোর করার আগে।
মুশফিকের সঙ্গে ৯১ রানের জুটিতে থাকা অবস্থাতেই নিজের অর্ধশতকের দেখা পেয়েছেন সৌম্য। এরপর মিরাজকে নিয়ে গড়েছেন ৬১ রানের জুটি। ব্যক্তিগত ১১৬ বলে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন তিনি। এরপরের গল্পটা বলতে গেলে কেবল সৌম্যর একার। মাঝে মিরাজের ১৯ আর তানজিম সাকিবের ১৩ রানের ক্যামিও তাকে সঙ্গ দিয়েছে। মিরাজের পর জুনিয়র সাকিবের সঙ্গে তার জুটি ৪০ রানের।
তানজিম সাকিবের পরেই এসেছিলেন রিশাদ। নিজের অভিষেকে প্রথম বলেই ছয় মেরেছেন। যদিও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বর্ণিল শুরুটা আর বড় করা হয়নি। আর শেষ ওভারে তিন উইকেট হারিয়ে ২৯১ রানেই থামতে হয়েছে বাংলাদেশকে।
জেএ