কপাল পুড়ল দুই ক্রীড়া সংগঠকের

ক্রীড়াঙ্গনে বাংলাদেশ অত্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছে আজ। এই ব্যস্ততার মধ্যেও ক্রীড়াঙ্গনের নজর ছিল জাতীয় নির্বাচনের দিকেও। গত কয়েকদিন ধরেই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি এবং আওয়ামী লীগের শরীক দলের মধ্যে আসন ভাগাভাগি ছিল আলোচনায়। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েও শেষ পর্যন্ত কারা বাদ পড়বেন এ নিয়ে তুমুল কৌতূহল ছিল ক্রীড়াঙ্গনেও।
আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে বেশ কয়েকটি আসনে ছাড় দিয়েছে। সেই আসনগুলোতে আওয়ামী লীগের মনোনয়নকৃত প্রার্থীদের নাম প্রত্যাহারের চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশনে। প্রত্যাহারের জন্য আওয়ামী লীগের চিঠিতে নাম রয়েছে দুই ক্রীড়া সংগঠকেরও। তারা হলেন-গাইবান্ধা ২ আসনে মাহবুব আরা বেগম গিনি এবং চট্টগ্রাম ৮ আসনে নোমান আল মাহমুদ। তাদের দুই জায়গায় যথাক্রমে নির্বাচন করবেন জাতীয় পার্টির আব্দুর রশিদ শিকদার ও সোলায়মান আলম শেঠ।
মাহবুব আরা বেগম গিনি ক্রীড়াবিদ থেকে সংসদ সদস্য হয়েছেন। সাবেক এই অ্যাথলেট নিজ জেলা গাইবান্ধা থেকে ২০০৮-১৮ পর্যন্ত টানা তিন মেয়াদে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। জাতীয় সংসদে হুইপের দায়িত্বেও ছিলেন। এবারও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে গাইবান্ধা ২ আসনে মনোনয়ন পেয়েছিলেন। জাতীয় পার্টির সঙ্গে কৌশলগত কারণে আসন ছাড়ের ক্ষেত্রে কপাল পুড়ল গিনির।
রাজনীতি অঙ্গনে গেলেও গিনি এখনো সরাসরি সম্পৃক্ত ক্রীড়াঙ্গনের সঙ্গে। বাংলাদেশ মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সভানেত্রী অর্ধ যুগের বেশি সময়। ক্রীড়াঙ্গনের অন্যতম বৃহৎ সংস্থা বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনের দুই মেয়াদে সহ-সভাপতির পদে রয়েছেন। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের নানা কমিটিতেও কাজ করছেন সাবেক এই ক্রীড়াবিদ ও সংগঠক।
গিনির মতোই শেষ মুহূর্তে কপাল পুড়েছে আরেক ক্রীড়া সংগঠক নোমান আল মাহমুদের। তিনি সম্প্রতি উপ নির্বাচনে চট্টগ্রাম ৮ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। আসন্ন নির্বাচনেও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন। শেষ মুহূর্তে জাতীয় পার্টির কাছে আসন ছাড়ায় মনোনয়ন প্রত্যাহার হলো নোমানের।
নোমান আল মাহমুদ জাতীয় ফেডারেশনের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। তবে দেশের অন্যতম শীর্ষ সচল ক্রীড়া সংস্থা চট্টগ্রাম জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সঙ্গে তিনি জড়িত তিন যুগের বেশি সময়। চট্টগ্রাম বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থায় বর্তমানে টানা দুই মেয়াদে কোষাধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে এক মেয়াদে ছিলেন যুগ্ম সম্পাদকও। এর আগে চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থায় নানাভাবে কাজ করেছেন।
ক্রীড়াঙ্গন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি বর্তমান সংসদদের মধ্যে নাইমুর রহমান দুর্জয় ও শামসুল হক চৌধুরি। এবার সেই তালিকায় আরো দু’টি নাম যুক্ত হলো। এরা না থাকলেও ক্রীড়াঙ্গন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রয়েছেন অনেকেই সাবেক ফুটবলার আব্দুস সালাম মুর্শেদী, ফুটবল সংগঠক কাজী নাবিল আহমেদ, জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মতুর্জা, ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন, বিসিবির সাবেক দুই সভাপতি আ হ ম মোস্তফা কামাল, সাবের হোসেন চৌধুরি, আবাহনী ক্লাবের চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান, আবাহনীর পরিচালক শাহরিয়ার আলম, নসরুল হামিদ বিপুসহ আরো বিভিন্ন ক্রীড়াসংস্থার অনেকেই।
আওয়ামী লীগের বাইরে স্বতন্ত্র এবং জাতীয় পার্টি থেকেও ক্রীড়াঙ্গনের অনেকে নির্বাচন করছেন। চট্টগ্রাম পাঁচ আসনে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি ছিলেন। সাবেক তারকা ফুটবলার দেওয়ান শফিউল আরেফিন টুটুল, চট্টগ্রাম আবাহনীর মহাসচিব শামসুল হক চৌধুরী, সাবেক যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়সহ আরো অনেকের স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করার কথা।
এজেড/এফআই