৫৯ বছরের ইতিহাস বদলাতে পারবে পাকিস্তান?
অস্ট্রেলিয়ায় শেষ কবে পাকিস্তান টেস্ট জিতেছে? এমন প্রশ্ন করা হলে খানিকটা বিব্রতই হতে হবে দেশটির ক্রিকেট ভক্তদের। ১৯৬৪ থেকে শুরু করে ২০২৩ পর্যন্ত এই ৫৯ বছরে পাকিস্তান অস্ট্রেলিয়াতে টেস্ট খেলতে গিয়েছে ১৪ বার। তাতে অধিনায়ক ছিলেন ১১জন। আর শেষ জয় এসেছে ১৯৯৫ সালের ৩০ নভেম্বর শুরু হওয়া সিডনি টেস্টে।
পাকিস্তানের সেই দলের অধিনায়ক ছিলেন ওয়াসিম আকরাম। দলে আমির সোহেল, ইজাজ আহমেদ, সেলিম মালিক, ওয়াসিম-ওয়াকারদের জায়গা ছিল তখন। এরপর আরও ৬ বারে ১৬ টেস্ট খেলে পাকিস্তান জিততে পারেনি কোন ম্যাচেই। তারচেয়ে বড় কথা, পাকিস্তান বিগত ৫৯ বছরের ইতিহাসে কখন অস্ট্রেলিয়াতে সিরিজই জেতেনি। ড্র হয়েছে ৩ বার। সেটাও ১৯৭৮-৭৯ মৌসুমে। মুশতাক মোহাম্মদ ছিলেন অধিনায়ক। আর দ্য গ্রেট ইমরান খান তখনো পরিণত খেলোয়াড় হয়ে ওঠার অপেক্ষায়।
পরিসংখ্যানের পাতা থেকে দেওয়া এই তথ্যগুলোই হয়ত বলে দেয় অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে পাকিস্তানের নাজুক ইতিহাস। ক্রিকেটের সমৃদ্ধ এক দেশ হলেও অজিদের মাটিতে বরাবরই হোঁচট খেয়েছে পাকিস্তান। আর ভাগ্যটা এমন, বিশ্বকাপ ব্যর্থতার পর এই অস্ট্রেলিয়ার মাটিতেই টেস্ট দিয়ে আবার ক্রিকেটে ফিরতে হচ্ছে পাকিস্তানকে।
কিন্তু দেশ ছাড়ার আগে পাকিস্তানের নতুন টেস্ট অধিনায়ক শান মাসুদ জানালেন, ৬ দশকের এই ইতিহাসটাই তিনি এখন মুছতে চান, ‘যখন আপনি ইতিহাসে কোনো কিছুই অর্জন করতে পারেননি, তখন আপনার সামনে সুযোগ আছে সেটি বদলানোর। আমরা পাকিস্তানের জন্য ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে ইতিবাচক ফল আনার চেষ্টা করব।’
আরও পড়ুন
অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই হতাশা আছে পাকিস্তান ভক্তদের। এবারের সিরিজটায় ভক্তদের মনটাই যেন জয় করতে চান শান, ‘আমরা এমন ক্রিকেট খেলতে চাই, যেটি আমাদের সমর্থকেরা উপভোগ করতে পারে। আমাদের সমর্থকেরা প্রচেষ্টা ও লড়াই চায় আমাদের কাছ থেকে এবং প্রতিদিনের ফলের চেয়ে সেটিই বেশি গ্রহণযোগ্য তাদের কাছে। আমাদের সমর্থকদের চাহিদার সঙ্গে যায় এমন ব্র্যান্ড ও স্টাইলের ক্রিকেট খেলতে চাই। তেমন করতে পারলে ফল আসবে।’
উপমহাদেশের চেয়ে পিচ ভিন্ন, কন্ডিশন ভিন্ন। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে বল খুব দ্রুত আসে, বাউন্সও থাকবে প্রচুর। পাকিস্তানের জন্য বড় সমস্যা সেখানেই। যদিও অধিনায়ক জানিয়েছেন এমন কিছুর জন্যেও তারা প্রস্তুত, ‘আমরা রাওয়ালপিন্ডিতে আমাদের অনুশীলন ক্যাম্পে অস্ট্রেলিয়ান কন্ডিশন অনুকরণ করতে চেয়েছি, যাতে বাউন্সি পিচ ছিল। আমরা ঘাস রেখে দিয়েছিলাম, গতি ও বাউন্স আনতে সে অনুযায়ী রোল করেছি। ম্যাচ পরিস্থিতিতে খেলেছি, ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো করা বোলারদের ডেকেছি।’
বিশ্বকাপের ভরাডুবির পর রীতিমতো পাল্টে ফেলা হয়েছে পাকিস্তানের ক্রিকেটকে। এসেছে নতুন অধিনায়ক। সঙ্গে আছে নতুন কোচ। সব বদলে ফেলা পাকিস্তান এবার অস্ট্রেলিয়ায় ইতিহাস বদলাতে পারে কিনা সেটাই দেখার বিষয়।
জেএ