ফাইনালে হারের পর ভারতীয় গণমাধ্যমে সমালোচনার ঝড়
ছিল ব্যাপক প্রস্তুতি। সঙ্গে ছিল হাজারো আয়োজন। নিজ দেশের মাটিতে বিশ্বকাপ জিতবে ভারত, সেই প্রত্যাশা বুঁদ হয়ে ছিল পুরো ভারত। কিন্তু কিসের কী। ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে একাই ম্যাচ টেনে নিলেন ট্রাভিস হেড। ১৩৭ রানের ম্যারাথন ইনিংসে আরও একবার স্বপ্নভঙ্গ হয় ভারতের। প্যাট কামিন্স আগেই বলেছিলেন, পুরো স্টেডিয়াম স্তব্ধ করতে চান তিনি। তবে এদিন যেন চুপ হয়ে গেছে পুরো দেশটাই।
ভারতের এমন হারের পর যেমন গ্যালারিতে নেমেছে নীরবতা, তেমনি সরব হয়েছে ভারতের গণমাধ্যম। ভারতীয় গণমাধ্যমে অনেকেই দোষারোপ করেছেন সাদামাটা বোলিংকে। কেউ দোষ দিচ্ছেন বাজে ফিল্ডিংয়ের। আবার ব্যাট হাতে লোকেশ রাহুল বা বিরাট কোহলির ধীরগতির ইনিংসের সমালচোনাও হচ্ছে। সমালোচনা থেকে বাদ যাননি অধিনায়ক রোহিত শর্মাও।
পশ্চিমবঙ্গের গণমাধ্যম আনন্দবাজার ম্যাচ হারের পেছনে দায়ী করেছে ৫ ক্রিকেটারকে। অধিনায়ক রোহিত শর্মা কেন অশ্বিনকে খেলাননি সেই প্রশ্ন তুলেছে তারা। এছাড়া যেভাবে তিনি আউট হয়েছেন তার সমালোচনাও করেছে পত্রিকাটি। কাঠগড়ায় তুলেছে লোকেশ রাহুল আর শ্রেয়াশ আইয়ারকেও। রাহুল খেলেছেন ধীরগতির ইনিংস আর ফাইনালে অল্পেই আউট হয়েছেন আইয়ার।
ভারতের হয়ে এদিন সবচেয়ে বেশি ৬৬ রান করেছেন রাহুল। কিন্তু তার জন্য ১০৭ বল খেলেছেন তিনি। মাত্র একটি চার মেরেছেন। মাঝের ওভারে রাহুলের জন্যই রানের গতি কমে গিয়েছিল ভারতের। একই কথা উঠে এসেছে টাইমস অব ইন্ডিয়ার লেখাতেও। মাঝের ওভারে বাউন্ডারি বের করে না আনায় কড়া সমালোচনা করেছে ভারতীয় ব্যাটারদের।
এনডিটিভিও তাদের প্রতিবেদনে খানিকটা দায় চাপিয়েছে অধিনায়ক রোহিতের উপরেই। ওয়ানডেতে টানা ব্যর্থতার পরেও সূর্যকুমার যাদবকে কেন সমর্থন দেয়া হচ্ছে, তা উঠে এসেছে তাদের আলোচনায়। আবার মোহাম্মদ সিরাজকে বাদ দিয়ে নতুন বলে মোহাম্মদ শামিকে আনার সমালোচনাও করেছে তারা। এবারের বিশ্বকাপে শামি সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী হলেও সেটা ছিল পুরাতন বলের কল্যাণে। কিন্তু, ফাইনালে কেন তাকে নতুন বলে আনা হলো সেই সমালোচনায় মুখর হয়েছে তারা।
আবার অনেক গণমাধ্যম এসব সমালোচনার বাইরে কেবল নিজস্ব প্রতিবেদনেই শেষ করেছে কাজ। পুরো দেশের নীরবতা যেন ভর করেছে ভারতের আরও কিছু গণমাধ্যমে। ওনেক প্রভাবশালী পত্রিকাতেই ছিল না কোন ম্যাচের পরিপূর্ণ বিশ্লেষণ।
টাইমস অব ইন্ডিয়া অবশ্য তাদের প্রতিবেদনে অজি ক্রিকেটারদের সাফল্য নিয়েই নিজেদের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ট্রাভিস হেডের দুর্দান্ত ইনিংস। অস্ট্রেলিয়ান ফিল্ডার এবং বোলারদের সাফল্যই প্রাধান্য পেয়েছে তাদের প্রকাশিত প্রতিবেদনে। পুরো লেখায় ভারতের গল্পটা যেন ম্লান হয়ে ছিল। শুধু বিরাট কোহলি আর রাহুলের ধীরগতির মাঝের ওভার নিয়ে আলোচনায় ছিল ভারতের অন্যতম শীর্ষ এই পত্রিকাটি।
এছাড়া ৭ম ওভারের পর ভারতের বোলাররা আর কোনপ্রকারের প্রভাব বিস্তার করতে পারেননি। বোলারদের উপরেও সেই দায় চাপিয়েছে ভারতের গণমাধ্যম। পুরো বিশ্বকাপে ভাল খেললেও ফাইনালের এমন নখদন্তহীন বোলিংয়ের জন্য সমালোচনা সইতে হচ্ছে শামি-বুমরাহদের।
জেএ