অস্ট্রেলিয়ার রানের পাহাড়, শাহিনের পাঁচ উইকেট
নিজের পঞ্চম উইকেট তুলে নেওয়ার পর সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বরূপ জমিনে মাথা ঠেকালেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। বেঙ্গালুরুর রানপ্রসবা এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে অস্ট্রেলিয়ার রানবন্যার ম্যাচে বড় বাধা হয়ে দাঁড়ান জ্বরে ভোগা পাক এই পেসার। একই ম্যাচে দুই দুই বার হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগালেন। একসময় ছুটতে থাকা অস্ট্রেলিয়ার রান চারশ’ করতে না দেওয়ার পেছনে বড় কৃতিত্ব এই শাহিনের।
২৫৯ রানের মাথায় প্রথম উইকেট পতনের পর ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। শেষ ৩৭ রানে পাঁচ উইকেট হারায় প্যাট কামিন্সরা। অবশ্য শাহিনের পাল্টা আঘাতের আগে নিজেদের কাজটা সেরে ফেলেছে অস্ট্রেলিয়া। দুই ওপেনার মিচেল মার্শ আর ডেভিড ওয়ার্নারের বিধ্বংসী সেঞ্চুরিতে নির্ধারিত ওভার শেষে ৯ উইকেটে ৩৬৭ রানের বড় পুঁজি পেয়েছে তারা। বিশ্বকাপে পঞ্চম সর্বোচ্চ সংগ্রহ এটি তাদের।
আজ (শুক্রবার) বিশ্বকাপের চতুর্থ রাউন্ডের ম্যাচে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই ঝড় তোলেন অস্ট্রেলিয়ার দুই উদ্বোধনী ব্যাটার। প্রথম পাওয়ার প্লেতেই স্কোরবোর্ডে জমা করেন ৮২ রান। মাত্র ১২ দশমিক ৩ ওভারে দলীয় ১০০ রান পূরণ করে অস্ট্রেলিয়া। এরপর কেবল রানের গতি বেড়েছে। ২৯.২ ওভারে চলতি বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো দুইশ রানের জুটি গড়ে কোনো দল।
অবশ্য অজিদের শুরু এতোটা ভালো নাও হতে পারতো। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে ডেভিড ওয়ার্নারের সহজ ক্যাচ ফেলে দেন ভাইস ক্যাপ্টেন শাদাব খানের বদলে পাকিস্তানের একাদশে জায়গা পাওয়া লেগ স্পিনার উসামা মীর। ক্যাচ ফেলার মাশুল ভালোভাবেই দিতে হয়েছে পাকিস্তানকে। শেষমেশ এ দুজনের জুটি থামে ২৫৯ রানে শাহিন আফ্রিদির বলে মিচেল মার্শ উসামা মিরের হাতে ক্যাচ দিলে। ১০ চার ও ৯ ছক্কায় ১০৮ বলে ১২১ রান করে ফেরেন মার্শ। পরের বলে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে শূন্য রানে ফিরিয়ে দুই বলে দুই উইকেট নেন শাহিন শাহ আফ্রিদি।
পরপর উইকেট ফেললেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে পাকিস্তানের। রেকর্ডবুক তোলপাড় করেছেন দুই অজি ওপেনার। বিশ্বকাপে আজকের আগে উদ্বোধনী জুটিতে অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ রান ছিল ১৮৩। ২০১১ বিশ্বকাপে কানাডার বিপক্ষে। তা ছাড়া বিশ্বকাপের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডও এটি (২৫৯)।
অস্ট্রেলিয়ার জন্য রান করা ডালভাত মনে হলেও শাহিনের জোড়া ধাক্কায় ধাক্কা খায় তারা। শাহিনের পর আঘাত হানেন ওয়ার্নারকে জীবন দেওয়া উসামা মীর। স্টিভেন স্মিথকে সেট হওয়ার আগেই সাজঘরে ফেরান তিনি। এরপর আজকের দিনে বেশ খরুচে বোলার হারিস রউফ আউট করেন বিধ্বংসী ওয়ার্নারকে। ১৪ চার ও ৯ ছক্কায় ১২৪ বলে ১৬৩ রানের দানবীয় ইনিংস খেলে আউট হয়েছেন তিনি।
ওয়ার্নারের বিদায়ের পর যেন মড়ক লাগে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং অর্ডারে। স্টয়নিস আর জশ ইংলিশ ছাড়া আর কেউই দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত চারশ’র আগেই থেমেছে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস।
পাকিস্তানি বোলারদের ১০ ওভারে ৫৪ রানে ৫ উইকেট তুলে ইনিংসের সেরা বোলার শাহিন আফ্রিদি। খরুচে বোলিং করলেও শেষদিকে ৩ উইকেট নিয়েছেন হারিস রউফ।
এফআই