স্বর্ণের লড়াইয়ে ভারত, বাংলাদেশের ব্রোঞ্জের
বারবার ভারতেই আটকে যাচ্ছে বাংলাদেশ। চলমান এশিয়ান গেমস নারী ক্রিকেটে ভারতের কাছে সেমিফাইনালে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল বাংলাদেশের মেয়েদের। এবার পুরুষ ক্রিকেটেও একই প্রতিপক্ষের কাছে হেরে সোনার স্বপ্ন শেষ। বাংলাদেশকে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়ে ফাইনালে চলে গেল ভারত।
আজ (শুক্রবার) জিজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের ইনিংস থামে মাত্র ৯৬ রানে। যে রান তুলতে কোনো অসুবিধাই হয়নি ভারতের। মাত্র ৯.২ ওভারে জয় নিশ্চিত করে তারা।
সেমিফাইনালে হেরে সোনা জয়ের স্বপ্নভঙ্গ হলেও তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে আগামীকাল সকালে ব্রোঞ্জ পদকের লক্ষ্যে খেলবে সাইফ হাসানের দল। যেখানে প্রতিপক্ষ হিসেবে থাকবে আজ দ্বিতীয় সেমিফাইনালের পরাজিত দল- পাকিস্তান অথবা আফগানিস্তান।
মিনিট পনেরোর মধ্যেই বদলে গেল দৃশ্যপট। যে উইকেটে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা রীতিমতো ধুঁকছিলেন। সেই উইকেটেই ভারতের ব্যাটসম্যানরা টর্নেডো গতিতে ব্যাটিং করেছেন। ৯৭ রানের টার্গেট মাত্র দশ ওভারের মধ্যেই করেছে।
ভারতের ইনিংসের শুরুটা হয়েছিল অবশ্য বিনা রানেই উইকেট হারিয়ে। প্রথম ওভারের চতুর্থ বলেই রিপন মন্ডলের বলে মৃত্যুঞ্জয়কে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন জয়সওয়াল। বাংলাদেশকে এটি খানিকটা আশার সঞ্চার করলেও এরপরই হতাশার পর্ব। গাইকোয়ার্ড ও তিলক ভার্মা দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন।
তিলক ভার্মা উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি ব্যাট হাতেও ফিফটি করেছেন। ২৬ বলে ৫৫ রানের ইনিংসে ৬ টি ছক্কা ও দুই চার ছিল। তাকে সঙ্গ দেওয়া গাইকোয়ার্ড কম যাননি। তার ৪০ রানের ইনিংসে তিন ছক্কা আর চারটি চার। বাংলাদেশের বোলাররা ছিলেন তাদের কাছে রীতিমতো অসহায়। ম্যাচটি সমাপ্তির যেন ছিল শুধুই সময়ের অপেক্ষা।
অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহেই হাংজুতে শীতের আবহ। এর মধ্যে আবার মেঘলা আবহাওয়া। নানা প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে জিজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয়য়ে এসেছিলেন কয়েকজন বাংলাদেশি প্রবাসী। চার-ছক্কা খেলা ক্রিকেটে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে যারপরনাই হতাশই হয়েছেন তারা।
টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ নির্ধারিত ওভারে মাত্র ৯৬ রান করে। ভারতের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের চেয়ে বাংলাদেশের ব্যাটসমানদের ব্যর্থতাই বরং বেশি দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আউট হওয়া নয় ব্যাটসম্যানই ফিল্ডাদের যেন ক্যাচ প্র্যাকটিস করাচ্ছিলেন। উইকেট টেকিং ডেলিভারি ছাড়াও বাজে শট খেলে আউট হয়েছেন অনেকে। এর মধ্যে অভিজ্ঞ আফিফ হোসেন ধ্রুব ও অধিনায়ক সাইফ হাসানও আছেন।
পাওয়ার প্লেতে মাত্র ২১ রান করে বাংলাদেশ বিনিময়ে ৩ উইকেট দেয়। পাওয়ার প্লে’র পরও রানের গতি বাড়েনি। প্রথম দশ ওভারে মাত্র ৪০ রান ছিল ৪ উইকেটে। প্রথম ৬০ বলে বাংলাদেশ কোনো বাউন্ডারি হাঁকাতে পারেনি। ওপেনার পারভেজ ইমন দুই ছক্কা মেরেছিল।
ইনিংসের ১২ তম ওভারে প্রথম চার হয়, এটা কোনো ব্যাটসম্যানের ব্যাটে নয় বাই রান। ১৭ তম ওভারে রাকিবুল হাসান দুই চার হাঁকান। সেই ওভারেই তিনি আউট হন। বাংলাদেশ পুরো ২০ ওভার খেলেছে এটাই তৃপ্তির বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। সেটা হয়েছে জাকের আলী অনিকের ব্যাটিংয়ের জন্য। ২৪ রানে অপরাজিত থাকা জাকেরই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক।
বাংলাদেশের পতন হওয়া নয় উইকেটের মধ্যে সাত উইকেটই ভারতীয় স্পিনারদের বলে। ভারতীয় বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ তিন উইকেট সাই কিশোরের। ওয়াশিংটন সুন্দর দুই; তিলক ভার্মা শাহবাজ, রবি, আর্শদীপ সিং একটি করে উইকেট নেন।
এজেড/এফআই