বিশ্বকাপের ভেন্যু; কালের সাক্ষী ইডেন গার্ডেন্স
শুরু হচ্ছে বিশ্বক্রিকেটের সবচেয়ে বড় ইভেন্ট আইসিসি মেন’স ক্রিকেট বিশ্বকাপ। ভারতের মাটিতে বসবে এবারের আয়োজন। একদিনের ক্রিকেটের এই মেগা ইভেন্টের জন্য প্রস্তুত ভারত। প্রস্তুত ১০ ভেন্যু, প্রস্তুত অংশগ্রহণকারী ১০ দেশের ১৫০ ক্রিকেটার এবং শতাধিক কোচিং-স্টাফরা। একইসঙ্গে আছে সাংবাদিকদের ব্যস্ততা, আছে নিরাপত্তা আর আয়োজনের নানাদিক।
ক্রিকেট বিশ্বকাপ-২০২৩ ঘিরে ঢাকাপোস্টের বিশেষ আয়োজন ‘বিশ্বকাপের মাঠ’। যেখানে থাকবে সব ভেন্যুর খুঁটিনাটি। ৩য় পর্বে থাকছে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্স স্টেডিয়াম। বিখ্যাত এই স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ খেলবে গ্রুপপর্বের দুই ম্যাচ। যেখানে তাদের বিপক্ষে মাঠে নামবে নেদারল্যান্ডস এবং পাকিস্তান।
ইডেন গার্ডেন্স, কলকাতা
১৮৬৪ সাল থেকে ভারতীয় ক্রিকেটের অবিচ্ছেদ্য সঙ্গী কলকাতার ইডেন গার্ডেন্স। এখানেই দেখা গিয়েছিল শোয়েব আখতারের মত পেসারের উত্থান, এখানে রোহিত শর্মা খেলেছেন ওয়ানডে ইতিহাসের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চের ২৬৪ রানের ইনিংস। এই মাঠেই রাহুল দ্রাবিড় আর ভিভিএস লক্ষ্মণ মিলে উপহার দিয়েছিলেন টেস্ট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ম্যাচ।
কত ম্যাচের আয়োজক হচ্ছে?
সবমিলিয়ে এবারের বিশ্বকাপের ৫টি ম্যাচ আয়োজনের দায়িত্ব পাচ্ছে ৬৪ হাজার ধারণক্ষমতার এই স্টেডিয়াম। আছে সেমিফাইনালের মত গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচও। বাংলাদেশ নিশ্চয়ই সেই ম্যাচটা খেলার প্রত্যাশাই করবে। এর আগে অবশ্য এখানে দুইবার মাঠে নামবে বাংলাদেশ। ২৮ অক্টোবর নেদারল্যান্ডস এবং ৩১ অক্টোবর পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলবে টাইগাররা।
কলকাতা এ বারের বিশ্বকাপের তৃতীয় ম্যাচটি পেয়েছে বিরাট কোহলির জন্মদিনে। ৫ নভেম্বর এখানেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলতে নামবেন ভারত। সেই ম্যাচে কোহলিকে ঘিরে থাকবে বাড়তি উন্মাদনা। ইডেনের চতুর্থ ম্যাচ ১২ নভেম্বর। সেই ম্যাচে ইংল্যান্ডের প্রতিপক্ষ বাবর আজমের পাকিস্তান। ১৬ নভেম্বর ইডেনে হবে এ বারের বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনাল। ভারত-পাকিস্তান দুই দল সেমিতে মুখোমুখি হলে, সেক্ষেত্রে এটিই হবে সেই ভেন্যু।
স্কোরিং প্যাটার্ন
ইডেনের উইকেট বেশ অনেক আগে থেকেই রানপ্রসবা বলে পরিচিত। ২৭৫ কিংবা তারচে বেশি রান এখানে হরহামেশাই দেখা যায়। এই মাঠে ৩০০ এর বেশি স্কোর হয়েছে ৯ বার। ২৫০ থেকে ১৯৯ এর মাঝে স্কোর হয়েছে ১৫ বার। ২০০ থেকে ২৫০ এর মাঝে স্কোর হয়েছে ২৪ বার। তবে রান কিছুটা ভাল হলে এই মাঠ থেকে সহজে জয় প্রত্যাশা করা কঠিন।
এখন পর্যন্ত ইডেনের ওয়ানডেতে আগে ব্যাট করে জয় এসেছে ২০ ম্যাচে। পরে ব্যাট করে জয় এসেছে ১৪ ম্যাচে। তাই বলাই বাহুল্য, এখানে ব্যাটে-বলে লড়াইটা জমে সমানে সমানে। অবশ্য আগে ব্যাট করে ভাল স্কোর করার ইতিহাসই বেশি। ১ম ইনিংসের গড় স্কোর যেখানে ২৪১, দ্বিতীয় ইনিংসের গড় নেমে হয়েছে ২০৩।
পিচ কেমন হবে?
বল হাতে কিছুটা সংগ্রাম করতে হবে সেটা স্পষ্ট পরিসংখ্যান থেকে। বোলিং অ্যাভারেজ বলছে, কলকাতার এই মাঠে প্রতি উইকেট পেতে ৩১ এর বেশি রান দিতে হয় বোলারকে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে আইপিএলের ম্যাচ থেকে ধারণা করা হয় এখানের পিচে স্পিনারদের কিছুটা সুবিধা আছে। অন্যদিকে ব্যাটিং এর ক্ষেত্রে ওভারপ্রতি ৫ এর বেশি রান এসেছে অতীতে। সেই হিসেবে কিছুটা ব্যাটিং সহায়ক বলা যেতেই পারে একে।
বাংলাদেশের অতীত
কলকাতার এই মাঠে এখন পর্যন্ত ৩৫টি ওয়ানডে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। যার মাঝে একটিই খেলেছে বাংলাদেশ। ১৯৯০ সালের সেই ম্যাচে বাংলাদেশ হারলেও হয়েছে ইতিহাস। আতহার আলী খানের ৭৮ রানের ইনিংসটি বাংলাদেশের কোন খেলোয়াড়ের জন্য ছিল প্রথম ম্যান অব দ্য ম্যাচ। দীর্ঘ ৩৩ বছর পর সেই ইডেনে আবার ওয়ানডে খেলতে নামবে বাংলাদেশ।
এছাড়া এই মাঠে একবার টেস্ট খেলেছিল বাংলাদেশ। যেখানে তাদের ইনিংস ব্যবধানে হারায় ভারত। আর টি-টোয়েন্টিতে দুইবার মাঠে নেমে দুইবারই হেরেছে টাইগাররা।
জেএ