লড়াইয়ের ভেতরেও আছে অন্য লড়াই
বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান। এশিয়া কাপের সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচ। বড় ম্যাচ হয়ে ওঠার যতখানি রসদ দরকার, তার সবটাই মজুদ আছে দুই দলের স্কোয়াডে। একদিনের ক্রিকেটে বাংলাদেশ এখন বড় এক নাম। আর পাকিস্তান তো র্যাঙ্কিং শীর্ষে থাকা দল। দুই দলের লড়াইটাও বেশ জমাট হবে এমনটা আশা করাই যায়।
এশিয়া কাপে বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের লড়াইটা কেবল দলগত ক্রিকেটেই থেমে থাকবে না। এর মাঝেও আছে অন্য সব লড়াই। যেখানে আলাদা করে নজরে থাকবেন পাকিস্তানের বাবর আজম, মোহাম্মদ রিজওয়ান কিংবা ইফতিখার আহমেদের মত ব্যাটাররা। আবার বাংলাদেশের লিটন দাস, তাওহীদ হৃদয়ের উপরেও থাকবে স্পটলাইট। তবে ম্যাচের বড় পার্থক্য যে পেসাররা, সেটা নিশ্চিতভাবেই বলা চলে।
ব্যাটিং স্বর্গে পেসারদের দাপট
দুই দলের পেস বোলিং ইউনিটের একটি তুলনামূলক চিত্র উপস্থাপন করা যাক। পাকিস্তানের বোলিং বিভাগের নেতৃত্ব থাকবে তিন পেসারের হাতে। শাহীন আফ্রিদি, নাসিম শাহ শুরুতেই আক্রমণে আসবেন। আর পুরাতন বলে ঝড় তুলবেন হারিস রউফ।
বাংলাদেশের বেলায় চিত্রটা প্রায় একই। তাসকিন আহমেদ আর শরীফুলের গতি দিয়ে শুরু। এরপর আছে নিরীহদর্শন হাসান মাসুদের বৈচিত্র্যময় বোলিং কারুকার্য। লাহোরের রানপ্রসবা উইকেটে এই ছয় পেসার যে ব্যাটারদের উপর ছড়ি ঘোরাতে চাইবেন এটা স্পষ্ট। তাদের সেই সক্ষমতাও আছে।
আরও পড়ুন>> পরিসংখ্যানের খাতায় বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান
পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের এই ম্যাচে তাই আলাদা করে নজর থাকবে সময়ের সেরা দুই পেস বোলিং ইউনিটের উপর। পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৯ বিশ্বকাপের পর থেকে সারাবিশ্বের সবচেয়ে কার্যকরী পেস আক্রমণ এই দুই দেশেই। ২৯ ম্যাচে ২৭ গড়ে ১৬৩ উইকেট নিয়ে পাকিস্তান আছে সবার উপরে। আর ৪৫ ম্যাচে ২৮ এর বেশি গড়ে ১৮৯ উইকেট নেওয়া বাংলাদেশি পেসাররা আছেন দ্বিতীয় স্থানে।
পাকিস্তানের টপ অর্ডার-বাংলাদেশের মিডল অর্ডার
পাকিস্তানের ব্যাটিং শক্তিকে টপঅর্ডার নির্ভর বললে খুব একটা অত্যুক্তি হয়না। ওপেনার ইমাম-উল হক, ওয়ানডাউনে বাবর আজম, চারে থাকা মোহাম্মদ রিজওয়ান পাক ব্যাটিং লাইনআপের সবচেয়ে বড় শক্তির জায়গা। বাবর বর্তমানে ওয়ানডে ফরম্যাটের বিশ্বের সেরা ব্যাটার। ইমাম উল হকও আছেন দারুণ ছন্দে। বাংলাদেশের বোলিং লাইনআপের যে চূড়ান্ত পরীক্ষা তারা নেবেন, এটা বলাই যায়।
আরও পড়ুন >> এশিয়া কাপের সুপার ফোর, কার খেলা কবে
মিডল অর্ডারও একেবারেই ফেলনা নয়। বিশেষ করে শাদাব খান এবং ইফতিখার আহমেদ দুজনেই পার্থক্য গড়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। তাদের ঝড়ো গতির ব্যাটিং শেষের দশ ওভারে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। শাদাব খানের সঙ্গে অলরাউন্ডার হিসেবে পাল্লা দিতে পারেন সাকিব আল হাসানও। দুই দলের সেরা দুই অলরাউন্ডারই দলের জয়ে মুখ্য ভূমিকা রাখতে পারেন।
পাকিস্তানের শক্তির জায়গা টপঅর্ডার, আর কাকতালীয়ভাবে বাংলাদেশের দূর্বলতাও টপঅর্ডারকে কেন্দ্র করে। লিটন দাস দলে যোগ দিলেও শান্তর ছিটকে যাওয়া দলের জন্য বড় ধাক্কা। বিশেষত এই টুর্নামেন্টে শান্ত যেহেতু ছন্দে ছিলেন। এর সঙ্গে চারে নামা তাওহীদ হৃদয়ের পরপর দুই ম্যাচে ডাক বাংলাদেশের দুশ্চিন্তার কারণ।
তবে মিডল অর্ডারে বেশ শক্তপোক্ত অবস্থানেই থাকবে বাংলাদেশ। দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার সাকিব আল হাসান এবং মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে থাকবেন আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান মেহেদী হাসান মিরাজ। সাকিব-মুশফিক দুজনেই পাকিস্তানের বিপক্ষে এর আগেও বড় ইনিংস খেলেছেন। শেষ ম্যাচে দুজনেই খেলেছেন ঝড়ো গতির ইনিংস। টপঅর্ডারে লিটনের পর তাই মিডল অর্ডার ঘিরেও বড় স্বপ্ন দেখতেই পারে টাইগার ভক্তরা।
জেএ