টানা পঞ্চমবার উইম্বলডনের শেষ চারে জোকোভিচ
উইম্বলডনের এবারের আসরে একের পর এক অঘটন। কোয়ার্টার ফাইনালের লড়াইয়ে নারী শীর্ষ বাছাই ইগা শিয়ানটেক হেরে যাওয়ার পর সেন্টার কোর্টে নেমেছিলেন নোভাক জোকোভিচ। রুশ প্রতিপক্ষ আন্দ্রে রুবলেভের কাছে প্রথম সেট হেরেই শুরু করলেন। টেনিসপ্রেমীদের মনেও তখন ভয় জেঁকে বসেছে। তবে কি এবারের উইম্বলডনের চূড়ান্ত পর্ব তারকাহীন হবে। টেনিসপ্রেমীদের আশঙ্কা দূর করলেন ২৩টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেতাবের মালিক। শেষ আটের লড়াইয়ে সপ্তম বাছাই রুশ প্রতিপক্ষকে হারিয়ে টানা পঞ্চমবারের মতো উইম্বলডনের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করলেন জোকো।
কোয়ার্টার ফাইনালেও মেজাজে ফিরতে কিছুটা সময় নিলেন জোকোভিচ। ততক্ষণে তার হাতছাড়া হয়ে গেল প্রথম সেট। শুরুটা দাপুটে করেছিলেন রুবলেভ। দেখে মনে হচ্ছিল জোকোভিচকে কোর্টে দাঁড়াতেই দেবেন না। নবম গেমে জোকোভিচের সার্ভিস ভেঙে দিলেন রুশ খেলোয়াড়। ৪৫ মিনিটে সেটও জিতলেন। রুবলেভের উইনারের জবাব দিতে পারেননি দ্বিতীয় বাছাই।
প্রথম সেট প্রতিপক্ষ যেখানে শেষ করেছিলেন, দ্বিতীয় সেট যেন সেখান থেকেই শুরু করলেন জোকোভিচ। তার শক্তিশালী সার্ভ এবং ব্যাকহ্যান্ডের সামনে দাঁড়াতে পারলেন না রুবলেভ। দ্বিতীয় গেমেই প্রতিপক্ষের সার্ভিস ভেঙে এগিয়ে যান জোকোভিচ। তৃতীয় গেমে রুবলেভ তীব্র লড়াই করেও কুলিয়ে উঠতে পারেননি। চতুর্থ গেমে আবার রুবলেভের সার্ভিস ভাঙলেন সার্ব তারকা। জোকোভিচকে তখন সেন্টার কোর্টে অপ্রতিরোধ্য দেখাচ্ছিল। পরপর পাঁচটি গেম জিতে ৫-০ ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়ার পর রুশ প্রতিপক্ষের সেট জয়ের আর কোনো আশা ছিল না। ২৮ মিনিট খরচ করে ৬-১ ব্যবধানে দ্বিতীয় সেট জিতে সমতা ফেরান জোকোভিচ। স্বস্তি ফেরে টেনিসপ্রেমীদের মনে।
তৃতীয় সেটে লড়াই হয় হাড্ডাহাড্ডি। পঞ্চম গেমে প্রতিপক্ষের সার্ভিস ভেঙে এগিয়ে যাওয়ার পরেও সেট জিততে রীতিমতো ঘাম ঝরাতে হলো জোকোভিচকে। সেটের দশম গেমে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন রুবলভ। তিনটি ব্রেক পয়েন্ট পেয়েছিলেন তিনি। প্রায় ১০ মিনিটের লড়াইয়ের পর জিতলেন গেম এবং সেট ৬-৪ ব্যবধানে জিতলেন জোকোভিচ। হারলেও জোকারের সঙ্গে সমানে সমানে পাল্লা দিলেন সপ্তম বাছাই। চাপের মুখে সেটের শেষ গেমে একাধিক ভুল করলেন জোকোভিচ। নষ্ট করলেন সহজ সুযোগ। কিন্তু তার সুফল ঘরে তুলতে পারলেন না রুবলেভ।
২-১ ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়ার পর চতুর্থ সেটেও ভালো শুরু করেন জোকোভিচ। তৃতীয় গেমে রুবলেভের সার্ভিস ভেঙে এগিয়ে যান। প্রতিপক্ষকে ক্লান্ত করে দেওয়ার জন্য তাকে কোর্টের একদিক থেকে অন্যদিকে ছুটতে বাধ্য করলেন। নেটের কাছে গিয়ে হালকা ড্রপ শট খেললেন। চেষ্টা করলেন রুবলেভের পাওয়ার টেনিসের ছন্দ নষ্ট করে দেওয়ার। এগিয়ে যাওয়ার ঠান্ডা মাথায় নিজের সার্ভিস ধরে রাখলেন জোকোভিচ। নবম গেমে আবার রুবলেভের সার্ভিস ভাঙলেন জোকার। চাপের মুখে ঠিক মতো সার্ভিস করতেই পারলেন না রুশ খেলোয়াড়। তাতেই এলো কাঙ্ক্ষিত জয়। শুরুটা যতটা কঠিন মনে হচ্ছিল তার থেকেও সহজে ২ ঘণ্টা ৪৭ মিনিটে ম্যাচ জিতে উইম্বলডনের সেমিফাইনালে উঠলেন জোকোভিচ।
এফআই