মার্টিনেজের ঢাকা সফর : উপেক্ষিত ভক্ত ও গণমাধ্যম
বাংলাদেশের মানুষ ফুটবলপ্রেমী। আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল নিয়ে তুমুল উন্মাদনা। আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জেতানো গোলরক্ষক এমিলিয়েনো মার্টিনেজ ১১ ঘন্টার সংক্ষিপ্ত এক সফরে ঢাকা এসেছেন। সেই সফরে সাধারণ ফুটবলপ্রেমী তো নয়-ই এমনকি গণমাধ্যমেরও কোনো প্রবেশাধিকার ছিল না। এ নিয়ে নানা অঙ্গনে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
মার্টিনেজকে বাংলাদেশে এনেছেন ফান্ডেড নেক্সটের প্রতিষ্ঠান নেক্সট ভেঞ্চার। তারা অর্থ ব্যয় করে আনলেও জনসাধারণ এমনকি মিডিয়ার জন্য কোনো সেশনই ছিল না। এ নিয়ে গতকাল ফান্ডেড নেক্সটের কর্মকর্তারা ব্যাখ্যা দিয়েছেন। আজ সকালে ফান্ডেড নেক্সট কার্যালয়ে মার্টিনেজ পরিদর্শনের সময় আমন্ত্রিত অতিথি হয়ে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ পলক এসেছিলেন। ভক্তদের সম্পৃক্ত না করা নিয়ে তাকেও প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে। এর উত্তরে তিনি বলেন,' ফান্ডেড নেক্সট এর ব্যক্তিগত উদ্যোগে মার্টিনেজ এসেছে। সময় স্বল্পতায় তারা পাবলিক অনুষ্ঠান করতে পারেননি।
পলক তার নিজের আমন্ত্রণ প্রসঙ্গে বলেন, ‘জায়েদ এবং গালিব আমার কাছের ছোট ভাই তারা আইটি সেক্টর নিয়ে কাজ করে। ২৬ জুন এটি কনফার্ম হওয়ার পর তারা আমাকে জানায়। আমিও ৬ বছর বয়স থেকে আর্জেন্টিনার সমর্থক। তাই সপরিবারে এসেছি।’
পলক গণমাধ্যমে তার প্রারম্ভিক বক্তব্যে বলেছিলেন মার্টিনেজের এই সফর ফুটবলারদের অনুপ্রেরণা দেবে। এত বড় ফুটবলার বাংলাদেশে আসলেন সান্নিধ্যে যাওয়ার সুযোগ পাননি কোনো ফুটবলার। অথচ ডাকা হয়েছে একজন সাবেক ক্রিকেট অধিনায়ক মাশরাফি বিন মতুর্জাকে। এ নিয়ে গণমাধ্যমকে উত্তর দিতে হয়েছে পলককে,' আমন্ত্রণের বিষয়টির ব্যাপারে আমি পুরোপুরি উত্তর দেওয়ার অবস্থানে নেই। মাশরাফি নিজেও আর্জেন্টিনার সমর্থক। এখানে আসলে জায়েদ ও গালিবের ঘনিষ্ঠজনরাই আমন্ত্রিত হয়েছে। সুনির্দিষ্ট কোনো ক্রাইটেরিয়া ছিল না।'
আর্জেন্টিনার প্রতি বাংলাদেশের ভালোবাসা প্রকাশ হয়েছে মিডিয়ার মাধ্যমে। মার্টিনেজের সফরে মিডিয়া একেবারেই উপেক্ষিত ছিল। প্রশ্ন করার সুযোগ তো ছিলই না এমনকি চিত্রগ্রহণও ভালোভাবে করা যায়নি। মূল ধারার গণমাধ্যম উপেক্ষিত থাকলেও ইউটিবারদের মার্টিনেজের সাক্ষাৎ করতে দেখা গেছে। এ নিয়ে প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্য,' এখানে যারা এসেছে সবাই জায়েদ ও গালিবের সম্পর্কের মাধ্যমেই। অনেকটা পারিবারিক ও তাদের পরিচিত পরিবেশে অনুষ্ঠানটি হয়েছে। যারা সুযোগ পেয়েছেন, তারাও আমন্ত্রিত ছিলেন।' এ নিয়ে গণমাধ্যমকে দুঃখিত না হওয়ার অনুরোধ জানান পলক।
মার্টিনেজ মূলত ৪-৫ জুলাই কলকাতায় থাকার কথা। তাকে কলকাতা আনছেন কলকাতার ক্রীড়া উদ্যোক্তা শতদ্রু দত্ত। তিনি কলকাতার আগে বাংলাদেশে ঘুরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেন। প্রথমে পরিকল্পনা ছিল পুরো দিনই বাংলাদেশে রাখার। অনেক প্রতিষ্ঠান স্পন্সর করতে এগিয়ে আসার আগ্রহী হলেও ডলার সংকট জটিলতায় সেটি সম্ভব হয়নি। মার্টিনেজ বাংলাদেশে এসেছেন শুভেচ্ছা সফরে। এক পক্ষের বড় আর্থিক সুবিধা না হওয়ায় সমর্থক ও মিডিয়ার সামনে আনা হয়নি মার্টিনেজকে এ নিয়ে কানাঘুষা চলছে। এরপরও শেষ পর্যন্ত মার্টিনেজ এসেছেন ১১ ঘন্টার সংক্ষিপ্ত সফরে। এতেই তৃপ্ত পলক,' বাংলাদেশ সফরটি তার নির্ধারিত সূচিতে ছিল না। এরপরও তিনি এসেছেন এটা বাংলাদেশের জন্যও একটা গর্বের বিষয়।'
এজেড/এফআই