‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ অ্যাশেজেও প্রতিপক্ষের বন্ধু হতে নারাজ অ্যান্ডারসন
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ দিয়ে নিজেদের ভালোভাবেই ঝালিয়ে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। টানা দ্বিতীয় ফাইনাল খেলা ভারতকে হারিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা টেস্ট শ্রেষ্ঠত্বও ছিনিয়ে নিয়েছে। এবার তাদের সামনে রোমাঞ্চকর ও ঐতিহাসিক অ্যাশেজ সিরিজ। ভারতের মুখোমুখি হওয়া ইংল্যান্ডের মাটিতেই তাদের মোকাবিলা করবে অজিরা। তবে অন্য সময়ের মতো আর স্লেজিং নয়, ‘বন্ধুত্বপূর্ণ অ্যাশেজ’ হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন ইংলিশ পেসার জেমস অ্যান্ডারসন। তবে প্রতিদ্বন্দ্বীতা রাখতে চান তিনি, প্রতিপক্ষকে বন্ধু বানাতে রাজি নন।
আগামী ১৬ জুন এজবাস্টন টেস্ট দিয়ে শুরু হবে পাঁচ ম্যাচের অ্যাশেজ। মাঠে ব্যাট-বলের লড়াইয়ের আগে জোরালোভাবেই শুরু হয়ে গেছে কথার লড়াই। তবে সিরিজটিতে আগের মতো আর খোঁচা দেওয়ার রেওয়াজ নেই, কিন্তু ঠিকই একই ঝাঁজ দেখা যাবে। চোখে চোখ রেখে জিততে চাইবে উভয়পক্ষই।
আরও পড়ুন >> ৩ ম্যাচের ফাইনাল চান রোহিত, ১৬ ম্যাচেও রাজি কামিন্স
দ্য টেলিগ্রাফকে দেওয়া এক ভিডিও সাক্ষাৎকারে আসন্ন সিরিজ নিয়ে কথা বলেছেন সাদা পোশাকের কিংবদন্তী পেসার অ্যান্ডারসন। টেস্ট ইতিহাসের সর্বোচ্চ উইকেট পাওয়া এই পেসার বলছেন, ‘সবচেয়ে বন্ধুত্বপূর্ণ অ্যাশেজ? হতে পারে। তবে অ্যাশেজে কিছু না কিছু বেরিয়ে আসে—খেলোয়াড়দের মধ্যে দ্বৈরথের মতো। ২০১৯ সালে (জফরা) আর্চারের সঙ্গে (স্টিভেন) স্মিথের যেমন হয়েছিল। অমন কিছু। তবে নিজেদের দিকেই মনোযোগ আমাদের—আমরা মাঠে কীভাবে বোলিং করতে চাই, ফিল্ডিং সেট করতে চাই। প্রতিপক্ষকে এসব হিসাবের বাইরে রাখতে চাই তাই। আর স্লেজিংয়ের ব্যাপারে—এমন না যে বাজ (ম্যাককালাম) আমাদের করতে বারণ বলেছে, তবে আমার মনে হয় না এ দলটি (এমন করবে)।’
— CricTracker (@Cricketracker) June 12, 2023
ইংল্যান্ডের নতুন ধারার টেস্ট ক্রিকেটেরও মূলনীতি আনন্দ দেওয়াই। স্টোকসের অধীনে ১৩ টেস্টের ১১টি জেতা ইংল্যান্ডের কেমন চ্যালেঞ্জ অস্ট্রেলিয়া নেবে, সেটি প্রশ্ন। তবে অ্যান্ডারসন বোঝাতে চাইলেন, তারা প্রস্তুত, ‘তারা কীভাবে খেলবে এ ব্যাপারে আগে থেকে বলা কঠিন। অবশ্যই তারা দেখেছে গত একবছর আমরা কীভাবে খেলেছি। যে স্টাইলের ক্রিকেট খেলেছি। আমি নিশ্চিত তারা এর প্রতি-আক্রমণের উপায় নিয়ে আলোচনা করেছে। তবে আমি যখনই অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে খেলেছি, তারা আগুনের সঙ্গে আগুন দিয়েই লড়াই করেছে। আরও কঠিন জবাব দিয়েছে। আমি নিশ্চিত, তারা ব্যাটিংয়ে হয়তো তেমন তেড়েফুঁড়ে না এলেও বোলিংয়ে আসবে। আর তাদের মানসম্পন্ন ব্যাটার তো আছেই। হয়তো মাঝে মাঝে তারাও ভাববে। তবে আমরা কীভাবে এ অবস্থানে এসেছি, আমাদের সেটি মনে রাখতে হবে।’
আরও পড়ুন >> অ্যাশেজে স্মিথকে ঠেকাতে ‘অদ্ভুত’ কৌশল ইংল্যান্ডের
ক্রিকেটের বাইরে প্রতিপক্ষ দলের খেলোয়াড়দের সঙ্গে বন্ধুত্ব নিয়ে ইতিহাসের সফলতম পেসার অ্যান্ডারসন বলেছেন, ‘জানি না কোনো পার্থক্য গড়ে কিনা। তবে তাদের ক্রিকেটের বাইরে না জানাটাই আমার ভালো লাগে। হ্যাঁ (আমি তাদের বন্ধু হতে চাই না)। তাদের প্রতিপক্ষ হিসেবেই দেখতে চাই, লড়াইয়ে নামতে চাই।’
এখন না হলেও ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক ক্রিকেট লিগগুলোর প্রভাব অ্যাশেজের প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঝাঁজ কমিয়ে দিতে পারে বলে মনে করেন অ্যান্ডারসন, ‘এখনও হয়তো হয়নি, তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে যত ক্রিকেট হচ্ছে, নানা জাতীয়তার ক্রিকেটাররা একসঙ্গে খেলছে, হয়তো অ্যাশেজের সেই প্রতিদ্বন্দ্বিতার ব্যাপারটি একটু কমিয়ে দেবে। এখনই হবে বলে মনে হয় না। তবে ভবিষ্যতে হবে।’
আরও পড়ুন >> ‘অ্যাশেজে বাজবল তত্ত্বের আসল পরীক্ষা নেবে অস্ট্রেলিয়া’
২০১৫ সালে সবশেষ অ্যাশেজ সিরিজ জিতেছিল ইংল্যান্ড। এর পরের তিনটি সিরিজের দুটিতে জিতেছে অস্ট্রেলিয়া, একটি হয়েছে ড্র। তবে অ্যাশেজ সিরিজের নিয়ম অনুযায়ী, ভস্মাধারটি আছে অস্ট্রেলিয়ার কাছেই। ১৬ জুনের পর লর্ডসে ২৮ জুন হবে দ্বিতীয় টেস্ট। ৬ ও ১৯ জুলাই হবে তৃতীয় ও চতুর্থ টেস্ট। এই দুই টেস্টের ভেন্যু লিডস ও ম্যানচেস্টার। আর লন্ডনের ওভালে ২৭ জুলাই হবে সিরিজের পঞ্চম ও শেষ টেস্ট। সর্বশেষ অ্যাশেজে ৪-০ ব্যবধানে হেরেছিল ইংল্যান্ড। এবার ঘরের মাঠে সেই হারের প্রতিশোধ তুলতে চাইবে স্টোকসের দল।
এএইচএস