‘অ্যাশেজে বাজবল তত্ত্বের আসল পরীক্ষা নেবে অস্ট্রেলিয়া’
ব্রেন্ডন ম্যাককালাম হেড কোচ এবং বেন স্টোকস অধিনায়ক হওয়ার পর একেবারেই পাল্টে গেছে ইংল্যান্ড টেস্ট দলের চেহারা। সাম্প্রতিক সময়ে আগ্রাসী ক্রিকেট খেলে সফলতা পাচ্ছে ইংল্যান্ড। ম্যাককালামের ডাকনাম 'বাজ' এর সঙ্গে মিলিয়ে তাদের এই আগ্রাসী ক্রিকেটের নাম দেয়া হয়েছে বাজবল তত্ত্ব।
খেলোয়াড় হিসেবে শুরু থেকেই আক্রমণাত্বক দর্শনে বিশ্বাসী ছিলেন ম্যাককালাম। কোচিং ক্যারিয়ারে এসেও বদলায়নি তার দর্শন। এদিকে বেন স্টোকস বরাবরই লড়াকু মানসিকতার। আক্রমণাত্মক খেলতে পছন্দ করেন, কখনো হাল ছাড়েন না। আক্রমণাত্বক মানসিকতার এই দুজনকে ইংল্যান্ডের টেস্ট ক্রিকেটের দায়িত্ব দেয়ায় অনেকের মাঝে হিতে বিপরীত হওয়ার শঙ্কাও ছিল। তবে সব শঙ্কা দূর করে অভিষেক সিরিজেই বাজিমাত করেছে তারা। বাজিমাত করেছে বাজবল তত্ত্ব!
নিউজিল্যান্ডকে ঘরের মাঠে হোয়াইটওয়াশ করে যাত্রা শুরু করে স্টোকস-ম্যাককালাম জুটি। এই সিরিজে নতুন ব্র্যান্ডের এক ইংল্যান্ড দল দেখেছে ক্রিকেট বিশ্ব। মাঠের ক্রিকেটে স্টোকসের আক্রমণাত্মক মনোভাব আর ড্রেসিংরুমে ম্যাককালামের মাস্টার মাইন্ড। সবমিলিয়ে এই সিরিজ দিয়ে নতুন যুগে পা রাখে ইংলিশদের টেস্ট ক্রিকেট।
এখনও পর্যন্ত এই তত্ত্বে সফল ইংলিশদের আসন্ন অ্যাশেজে ভালো করতে হলে এর বিকল্প পরিকল্পনাও রাখতে হবে বলে মনে করেন স্টিভ ওয়াহ। অস্ট্রেলিয়ার সাবেক এই অধিনায়ক বাজবল নিয়ে ইংলিশদের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন। অজিদের বিশ্বকাপজয়ী এই অধিনায়কের প্রশ্ন, বাজবল নিয়ে ইংল্যান্ডের 'প্ল্যান বি' আছে তো? এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বমানের বোলিং অ্যাটাকের সামনে এই তত্ত্ব কাজে আসবে কিনা তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন ওয়াহ।
তিনি বলেন, 'আমার বড় প্রশ্ন হচ্ছে এই তথাকথিত বাজবল তত্ত্ব নিয়ে। তাদের কি কোন ভিন্ন পরিকল্পনা বা প্ল্যান বি আছে কিনা? তারা এই তত্ত্ব দিয়ে সম্প্রতি সময় বেশ ভালো ক্রিকেট খেলেছে। কিন্তু তাদের আসল পরীক্ষা হবে অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বমানের বোলিং অ্যাটাকের সাম্ননে।'
'বাজবল তত্ত্ব কি বিশ্বমানের বোলিং অ্যাটাকের সামনে দাঁড়াতে পারবে? কারণ এখানে খেলা হবে চ্যালেঞ্জিং কন্ডিশনে। আমার সন্দেহ আছে! এবার এই তত্ত্ব কাছে আসা নিয়ে। ম্যাককালাম ও স্টোকসের কি সেই সাহস আছে? এমন না যে পরিকল্পনা কাছে আসল না আর অনেক কিছু বদলে ফেললাম! তাদের কি ভিন্ন কোন পরিকল্পনা আছে? হয়তো ওদের সেটা খুঁজে বের করতে হবে' আরও যোগ করেন তিনি।
ওয়াহ'র মতো রিকি পন্টিং মনে করছেন, ইংল্যান্ড যে তত্ত্বে এগোচ্ছে তাতে অ্যাশেজে সফলতা আসবে না। এমনকি অস্ট্রেলিয়ার দুইবার বিশ্বকাপ জয়ী এই অধিনায়কের দাবি, এই অ্যাশেজকে ঘিরেই এতোদিন ধরে বাজবল তত্ত্বে ক্রিকেট খেলে আসছে ইংল্যান্ড। কিন্তু এই তত্ত্বে অ্যাশেজ জেতা সম্ভব নয় বলেও মনে করেন তিনি।
পন্টিংয়ের ভাষ্যমতে, 'আমার কিছু চিন্তা-ভাবনা আছে। আমি যদি অস্ট্রেলিয়ার ফাস্ট বোলার হতাম তাহলে কি করতাম। আমার মনে হয় ইংল্যান্ড কয়েকবছর ধরে এই ধরণের ক্রিকেট খেলে আসছে কারণ তাদের মাথায় অ্যাশেজ ছিল। তারা এই অ্যাশেজকে ঘিরেই এই তত্ত্ব তৈরি করেছে। কিন্তু এই তত্ত্বে অ্যাশেজ জেতা সম্ভব নয়।'
১৬ জুন থেকে শুরু হবে অ্যাশেজ। ৫ টেস্টের এই সিরিজ চলবে ৩১ জুলাই পর্যন্ত। ১৬ থেকে ২০ জুন এজবাস্টনে হবে সিরিজের প্রথম টেস্ট। বাকি ৪ টেস্টের ভেন্যু লর্ডস, হেডিংলি, ওল্ড ট্রাফোর্ড ও কিয়া ওভাল। সর্বশেষ অ্যাশেজে ৪-০ ব্যবধানে হেরেছিল ইংল্যান্ড। এবার ঘরের মাঠে সেই হারের প্রতিশোধ তুলতে চাইবে স্টোকসের দল।