কোহলিদের বিদায় করে মুম্বাইকে প্লে-অফে তুলে দিল গুজরাট
প্লে-অফের এক জায়গার জন্য লড়ছিল দুই দল। রোববার দিনের প্রথম ম্যাচে ক্যামেরুন গ্রিনের সেঞ্চুরিতে ৮ উইকেটের বড় জয় পেয়েও স্বস্তিতে ছিল না রোহিত শর্মার মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। তাদের প্লে-অফ ভাগ্য নির্ভর করছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর ওপর। সমীকরণ ছিল এমন, ম্যাচটিতে কোহলিরা জিতলে ছিটকে যাবে মুম্বাই, আর গুজরাট জিতলে প্লে-অফের টিকিট পাবে রোহিত শর্মার দল।
বাঁচা-মরার ম্যাচে এদিন কোহলির সেঞ্চুরিতে বড় সংগ্রহ পেয়েছিল বেঙ্গালুরু। তবে কোহলির রেকর্ডগড়া শতকের জবাব শতক দিয়েই দিলেন গুজরাটের ওপেনার শুভমান গিল। তার অপরাজিত ১০৪ রান ও বিজয় সংকরের অর্ধশতকের ওপর ভর করে বেঙ্গালুরুর দেওয়া ১৯৮ রানের টার্গেট ৫ বল হাতে রেখেই পার করে টেবিল টপার গুজরাট। হার্দিক পান্ডিয়ার দলের এই জয়ে গ্রুপ পর্ব থেকেই ছিটকে গেল কোহলির আরসিবি। অন্যদিকে, চতুর্থ দল হিসেবে শেষ চারে জায়গা করে নিয়েছে পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়ন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স।
বেঙ্গালুরুর এম চিন্বাস্বামী স্টেডিয়ামে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে দারুণ শুরু করে আরসিবি। পাওয়ার-প্লে থেকে আসে ৬২ রান। ফর্মের তুঙ্গে থাকা বিরাট কোহলি এবং ফাফ ডু প্লেসিস মিলে গড়েন ৬৭ রানের জুটি। ১৯ বলে ২৮ রান করে নূর আহমেদের বলে ফেরেন প্লেসি। ওপেনিং জুটির পর দ্রুত কিছু উইকেট হারায় বেঙ্গালুরু। ৫ বলে ১১ রান করে ম্যাক্সওয়েলের বিদায়ের পর মহীপাল লোমরোর ফেরেন ১ রান করে। মিচেল ব্রেসওয়েল ভালো শুরু পেলেও কাজে লাগাতে পারেননি, করেছেন ১৮ বলে ২৬ রান।
পুরো মৌসুমের মতো এদিনও ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছেন দীনেশ কার্তিক। প্রথম বলেই কট বিহাইন্ড হয়ে ফিরেছেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। বাঁচা-মরার ম্যাচ। প্লে-অফে উঠতে গেলে জিততেই হবে। এই অবস্থায় দলের বাকি ব্যাটাররা যখন সবাই ব্যর্থ, তখন রক্ষাকর্তা হয়ে আসেন সেই কোহলিই। দারুণ ব্যাটিংয়ে বেঙ্গালুরুকে ১৯৭ রানে পৌঁছে দিয়েছেন কোহলি। ১৩ চার ও ১ ছক্কায় তিনি খেলেছেন ৬১ বলে ১০১ রানের ইনিংস।
আইপিএলে এটি তার সপ্তম সেঞ্চুরি। টুর্নামেন্টের প্রায় দেড় যুগের ইতিহাসে তার চেয়ে বেশি তিন অঙ্কের স্বাদ পাননি আর কেউ। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিপক্ষে আগের ম্যাচে ১০০ রান করে ৬ সেঞ্চুরির রেকর্ডে ক্রিস গেইলের পাশে বসেন তিনি। টুর্নামেন্টটিতে পরপর দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি করা স্রেফ তৃতীয় ব্যাটসম্যান কোহলি। ২০২০ সালে দিল্লি ক্যাপিট্যালসের হয়ে শিখর ধাওয়ান ও গত আসরে রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে এই কীর্তি গড়েন জস বাটলার
১৯৮ রান বেঙ্গালুরুর মাঠে খুব বড় স্কোর ছিল না। কিন্তু লড়াই করার মতো ছিল নিঃসন্দেহে। তবে গুজরাটের ব্যাটিং অর্ডার এতটাই শক্তিশালী এবং আরসিবির বোলিং বিভাগ এতটাই ভঙ্গুর যে শুরু থেকেই অসমান লড়াই চলছিল। ঋদ্ধিমান সাহা কম রানে আউট হলেও চাপে পড়তে হয়নি গুজরাটকে। তিন নম্বরে নামা বিজয় শঙ্কর জুটি বাঁধলেন শুভমানের সঙ্গে। দু’জনে মিলে দ্বিতীয় উইকেটে ১২৩ রান তুললেন। ওখানেই বেঙ্গালুরুর হাত থেকে ম্যাচ বেরিয়ে গিয়েছিল।
তবে দাসুন শনাকা এবং ডেভিড মিলার পর পর ফিরে যাওয়ায় এবং রান তোলার গতি কিছুটা কমে যাওয়ায় সামান্য আশা জেগেছিল বেঙ্গালুরুর মনে। কিন্তু তা মিলিয়ে গেল শুভমানের সৌজন্যে। একার হাতে ম্যাচটা শেষ করে এলেন তিনি। প্রথম ইনিংসের কোহলির যে রকম দর্শনীয় ব্যাটিং দেখা গিয়েছিল, সে রকমই খেললেন শুভমান। আগাগোড়া বোলারদের বিপক্ষে দাপট, দর্শনীয় সব শট। তার অপরাজিত ১০৪ রানের ইনিংসে ছিল ৮টি ছক্কার মার। এই জয়ে মুম্বাইয়ের প্লে-অফ খেলা নিশ্চিত হয়ে গেল, আর গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিল আরসিবি।
এফআই