রিয়ালকে উড়িয়ে ফাইনালে ম্যানচেস্টার সিটি
ইতিহাস বলছে চলতি বছর ইতিহাদে কোনো ম্যাচ হারেনি ম্যানচেস্টার সিটি। এছাড়া সাম্প্রতিক ফর্মটাও কথা বলছিল ক্লাবটির হয়ে। তবে প্রতিপক্ষ দলটার নাম যখন রিয়াল মাদ্রিদ, হতে পারতো যে কোনো কিছুই।
তবে দ্বিতীয় লেগে ম্যানচেস্টার সিটির কাছে এদিন পাত্তাই পেল না রিয়াল মাদ্রিদ। আক্রমণের ঝড় তুলে প্রথমার্ধেই দুবার জালে বল পাঠান সিটির পর্তুগিজ তারকা বার্নাদো সিলভা। বিরতির পর রিয়াল ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া থাকলেও গোল ব্যবধান আরও বেড়েছে কেবল। সিলভার জোড়া গোলের পর দ্বিতীয়ার্ধে আত্মঘাতী গোল করেন এদের মিলতাও। শেষ দিকে সিটির চতুর্থ গোলটি করেন হুলিয়ান আলভারেস।
বুধবার (১৭ মে) দিবাগত রাতে ইতিহাদ স্টেডিয়ামে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমি-ফাইনালের ফিরতি লেগে ৪-০ গোলে জিতেছে পেপ গার্দিওয়ালার দল। প্রথম লেগ ১-১ ড্র হওয়ায় দুই লেগ মিলিয়ে ৫-১ অগ্রগামিতায় তিন মৌসুমে দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে জায়গা করে নিলো সিটি।
এই গত বছরেই, ফাইনালে এক পা দিয়েই ফেলেছিল ম্যানচেস্টার সিটি। পেপ গার্দিওলার দল নিজেদের মাঠে প্রথম লেগে ৪-৩ গোলে জেতার পর রিয়ালের মাঠেও ৮৯ মিনিট পর্যন্ত ১ গোলে এগিয়ে ছিল। কিন্তু মাত্র পাঁচ মিনিটের ঝড়ে রিয়ালের কাছে উড়ে যায় সিটিজেনরা। এবারের নিজেদের মাঠে রিয়ালবধ করে সেই প্রতিশোধও তুললো ইংলিশ ক্লাবটি।
ফিরতি লেগের আগে সিটির সম্ভাব্য নায়কদের তালিকায় হলান্ড-ডি ব্রুইনাদের আশপাশেও ছিল না সিলভারের নাম। কিন্তু ঘরের মাঠে ইতিহাদে যেন সব আলো কেড়ে নিলেন পর্তুগিজ এই ফুটবলার। ম্যাচের প্রথমার্ধে তার জোড়া গোল বলতে গেলে ব্যবধান গড়ে দিয়েছে।
এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণ শানায় সিটি। তবে রিয়াল গোলপোস্টের নিচে অতন্দ্র প্রহরী থিবু কোর্তোয়ার নৈপুণ্যে প্রথম বেশ কয়েকটি দারুণ প্রচেষ্টা প্রতিহত হয় সিটি’র। ১৩ মিনিটে তেমনই এক আক্রমণে বাঁ প্রান্ত দিয়ে জ্যাক গ্রিলিশ দারুণভাবে বল বাড়ান হলান্ডের উদ্দেশে। কাছাকাছি জায়গা থেকে হলান্ডের হেডে কোর্তোয়া যেভাবে বলটি ঠেকালেন, তাতে মাথায় হাত না দিয়ে পারেননি হাজার হাজার সিটি সমর্থকও।
সিটির একের পর এক আক্রমণ গুঁড়িয়ে দিচ্ছিলেন কোর্তোয়া। ২১ মিনিটে যেমন হলান্ডের নিশ্চিত গোল প্রায় অবিশ্বাস্যভাবে ঠেকিয়ে দেন এ বেলজিয়ান গোলরক্ষক। তবে বেশিক্ষণ দেয়াল হয়ে থাকতে পারলেন না কোর্তোয়া। ২৩ মিনিটে ডি ব্রুইনার পাস থেকে ডি-বক্সের ভেতর বল পেয়ে জোরালো শটে জালভেদ করেন সিলভা।
এক গোল হজমের পর খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসার চেষ্টা চালায় রিয়াল। ম্যাচের ৩৫ মিনিটে ডি-বক্সের অনেকটা বাইরে থেকে টনি ক্রুসের রকেট শট বারে লেগে ফিরে আসলে হতাশ হতে হয়। তবে ক্রুস ব্যর্থ হলেও পরের মিনিটে ঠিকই পেরেছেন সিলভা। ইলকাই গুন্দোয়ানের শট মিলিতাওয়ের গায়ে লেগে ফিরে আসলে ফাঁকা জায়গায় বল পেয়ে যান সিলভা। হেডে বলকে দ্বিতীয়বারের মতো জালের ঠিকানা দেখাতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি এই পর্তুগিজ মিডফিল্ডারকে।
ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে গতি বাড়ায় বেনজেমা-ভিনিসিউসরা। তবে কাঙ্খিত গোল মিলছিল না। উল্টো আত্মঘাতী গোলে ব্যবধান বাড়ান এদের মিলিতাও। ডি ব্রুইনার ফ্রি-কিকে নিজেদের জালে বল জড়িয়ে সিটিকে তৃতীয় গোলটি এনে দিতে সাহায্য করেন মিলিতাও।
এরপর শেষ দিকে সিটির হয়ে চতুর্থ গোলটি করেন বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন তারকা জুলিয়ান আলভারজে।
এফআই/ এসএমডব্লিউ