‘দেশের সম্মান বাঁচাতে’ বিনামূল্যে লড়ছেন সোহাগের আইনজীবী!
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মামলা পরিচালনা অত্যন্ত ব্যয় সাপেক্ষ। বাফুফের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ ফিফার তদন্ত প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত থাকাবস্থায় আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছেন। ফিফার সিদ্ধান্তের পর আবার আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালতে মামলাও করেছেন। বেতনভুক্ত সাধারণ সম্পাদক এই ব্যয় কিভাবে নির্বাহ করছেন এই প্রশ্ন ক্রীড়া সংশ্লিষ্ট অনেকেরই।
আজ রাজধানীর এক হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে সোহাগের আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসি ব্যয়ের ব্যাপারে খানিকটা ধারণা দিয়েছেন, ‘আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালতে আমরা যে আপিল করেছি সেটা খুব বড় অঙ্কের নয়। অল্প কিছু ফি দিয়েছি।’ তার নিজের সম্মানীর ব্যাপারে বলেন, ‘আইনজীবীদের ল্যাতিন ভাষায় একটা টার্ম রয়েছে প্রবোনো পাবলিকো। যেটা অনেকটা বিনামূল্যের মতো জনস্বার্থে করা হয়ে থাকে। দেশের সম্মানার্থে আমি এটা করছি।’
এমন মন্তব্যের পরক্ষণেই আবার তিনি বলেছেন, ‘এটা আমার এবং মক্কেলের কনফিডেনশিয়াল ব্যাপার। আমার মক্কেল আমাকে এক টাকা দিয়েও এঙ্গেজ করতে পারে আবার এক হাজার টাকাও হতে পারে। এটা আমার বিষয় আপনাদের অবগত হওয়ার নয়’। আজমালুল যখন এই মন্তব্য করছিলেন তখন পাশ থেকে সোহাগ বলছিলেন, ‘খুবই মিনিমাম অর্থ’।
সোহাগের সঙ্গে আইনী সহায়তা দিচ্ছেন আজমালুল হোসেন। তার সঙ্গে রয়েছেন দেশি আরেকজন আইনজীবী এবং সুইজারল্যান্ডে রয়েছেন আরেক আইনজীবী। দেশি দুই আইনজীবী বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে সোহাগের জন্য আইনীভাবে লড়লেও সুইস আইনজীবী অ্যান্থনির সম্মানীর ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘তাদের একটি স্ট্যান্ডার্ড ফি রয়েছে’।
আজমালুল হোসেন দেশের একজন বিশিষ্ট আইনজীবী। বাফুফের এথিকস কমিটির চেয়ারম্যানও ছিলেন তিনি। তখন থেকেই সোহাগের সঙ্গে পরিচয়। ফিফার এই বিষয়ের সঙ্গে আজমালুলকে সম্পৃক্ততা করার সময় সম্পর্কে সোহাগ বলেন,‘ডিসেম্বর থেকে আইনজীবী এটি নিয়ে কাজ করছে’। সুইস আইনজীবী অ্যান্থনিকে আজমালুলই ঠিক করেছেন।
১৬ ফেব্রুয়ারি জুরিখ গিয়ে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন সোহাগ। সেই সময় বাফুফের আরো তিন স্টাফ এবং আইনজীবীরাও সঙ্গে ছিলেন। এত ব্যয় কে নির্বাহ করেছেন এই প্রশ্নের উত্তরে সোহাগ বলেন,‘এর উত্তর বাফুফে সভাপতি আগেই দিয়েছিলেন, সামহাও ইট মেনেজড’। আজকের সংবাদ সম্মেলনের ভেন্যু ছিল দেশের শীর্ষ পাঁচ তারকা এক হোটেল। যেখানে একটি অনুষ্ঠান করাও অত্যন্ত ব্যয়সাপেক্ষ। বেতনভুক্ত সাধারণ সম্পাদকের এত ব্যয়বহুল জায়গায় সংবাদ সম্মেলন করা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সোহাগের সঙ্গে এখনো ফেডারেশনের শীর্ষ কর্তাদের যোগাযোগ রয়েছে বলে ধারণা ফুটবলসংশ্লিষ্ট অনেকের।
আর্থিক বিষয়ে অসঙ্গতির জন্য সোহাগ ফিফা থেকে দুই বছরের নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি আর্থিক জরিমানাও পেয়েছিলেন। সেই জরিমানা এক মাসের মধ্যে দেওয়ার কথা থাকলেও সেটি দেননি সোহাগ। এর কারণ সম্পর্কে বলেন, ‘আমি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আপিল করেছি। আমার আপিল সঠিক হলে তাহলে আর অর্থ প্রদান করতে হবে না এবং আপিল ব্যর্থ হলে তখন আবার অর্থ দিতে হবে’।
এফআই