দুই আফগানে বাজিমাত গুজরাটের, আরও মজবুত শীর্ষস্থান
আইপিএলের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন গুজরাট টাইটান্সের অবস্থান আসরের শুরুতে ছিল কিছুটা নড়বড়ে। কিন্তু ম্যাচ যত গড়াচ্ছে, আগের আসরের ফর্মই যেন নামিয়ে আনছে হার্দিক পান্ডিয়ার দল। দলটির হয়ে ধারাবাহিক নৈপুণ্য দেখিয়ে চলছেন দুই আফগান স্পিনার রশিদ খান ও তরুণ নূর আহমেদ। এই দুজনের ঘূর্ণিতে রাজস্থান রয়্যালস মাত্র ১১৮ রানে অলআউট হয়ে যায়। যা নিয়ে গুজরাটের সামনে পাত্তাই পায়নি সঞ্জু স্যামসনের দল। ফলে তারা ৯ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হেরেছে।
এই ম্যাচ জয়ে নিজেদের অনেকটা ধরাছোঁয়ার বাইরে নিয়ে গেল গুজরাট। ১০ ম্যাচের খেলায় এখন পর্যন্ত তারাই কেবল পাঁচটির বেশি ম্যাচ জিতেছে। ৭ জয়ে শীর্ষে থাকা পান্ডিয়াদের পয়েন্ট ১৪। অন্যদিকে, পাঁচ জয়ে তিনে থাকা রাজস্থানের অবনমন হয়েছে চারে।
শুক্রবার (৫ মে) দিনের একমাত্র ম্যাচে ঘরের মাঠে নেমেছিল রাজস্থান। ফলে চেনা কন্ডিশনে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্তটা বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই নিয়েছিলেন স্যামসন। কিন্তু কে জানত, গুজরাট টাইটান্সের বোলাররা এবারের আইপিএলে তাদের সেরা পারফরম্যান্সটা আজকের দিনের জন্যই জমিয়ে রাখবেন! জস বাটলার, যশস্বী জসওয়াল ও স্যামসনদের নিয়ে সাজানো টপ অর্ডার ধসে পড়তে তেমন সময় নেয়নি।
শুরুতেই পান্ডিয়াকে উইকেট উপহার দিয়েছেন ইংলিশ অধিনায়ক বাটলার। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই তিনি ৮ রানে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। এরপর ছন্দে থাকা আরেক ওপেনার জসওয়ালকেও নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন অধিনায়ক স্যামসন। তাদের জুটিতে ২১ বলে ৩৬ রান আসে। কিন্তু পাওয়ার প্লের শেষ ওভারেই আউট জসওয়াল। যদিও দুর্ভাগ্যজনকভাবে তিনি রান আউটে কাটা পড়েন। ৪৭ রানে দুই ওপেনারকে হারালেও দ্রুতই রান তুলছিলেন স্যামসন। কিন্তু তার ইনিংস দীর্ঘ হতে দেননি আইরিশ অলরাউন্ডার জস লিটল। সপ্তম ওভারেই ২০ বলে ৩০ রান করা স্যামসনকে আউট করেন এই বাঁ-হাতি পেসার।
প্রথম ইনিংসের বাকি গল্পটা দুই আফগান স্পিনারের। এক প্রান্তে রশিদ, অপর প্রান্ত থেকে তরুণ নূর আহমেদ ঘূর্ণি দেখিয়েছেন। তাদের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি রাজস্থানের মিডল অর্ডার। দুজনের ৭ ওভারে ৩৯ রানের বিনিময়ে এসেছে ৫ উইকেট, রশিদ ৩টি এবং দুটি নূরের শিকার। ফলে ১৭.৫ ওভারেই রাজস্থানের ইনিংস গুটিয়ে যায়।
রান তাড়ার কাজটা সহজ করে দেন গুজরাটের দুই ওপেনার শুভমান গিল ও ঋদ্ধিমান সাহা। ওপেনিং জুটিতে তারা ৭১ রান যোগ করলেই ম্যাচ একেবারে গুজরাটের হাতে এসে যায়। রানের তাড়া না থাকায় গিল খেলেছেন ওয়ানডে মেজাজে। কিন্তু ঋদ্ধিমান ছিলেন বরাবরের মতোই আক্রমণাত্মক। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে অজিঙ্কা রাহানে দলে ফেরায় অভিমানী ঋদ্ধিমানকেই যেন এই ম্যাচেও দেখা গেছে। ৩৫ বলে ৩৬ রান করে গিল আউট হলেও রান তাড়ার চাপ গুজরাটকে স্পর্শ করেনি। ৫টি চারের সৌজন্যে অপরাজিত ৪১ রান করেন ঋদ্ধিমান।
সহজ ম্যাচে ব্যাট চালানোর প্রয়োজন না থাকলেও, এরপর তিনে নামা অধিনায়ক পান্ডিয়া ক্রিজে এসেই বিস্ফোরক ব্যাটিং করেছেন। ফলে ১৩.৫ ওভারেই ম্যাচ গুজরাটের নাগালে চলে আসে। পান্ডিয়ার ব্যাটে আসে ১৫ বলে ৩৯ রানের অপরাজিত ইনিংস। তিনি খেলেছেন সমান ৩টি করে চার ও ছক্কা মার। রাজস্থানের ব্যাটিংয়ের মতো অসহায় হয়ে পড়েন বোলাররাও। তবে তাদের হয়ে নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে একমাত্র উইকেটটি পেয়েছেন স্পিনার যুজবেন্দ্র চাহাল।
এএইচএস