‘বুড়ো হাড়ে ভেলকি’ শর্মার, গুজরাটের জয় ছিনিয়ে নিল মুস্তাফিজরা

শেষ ১২ বলে জয়ের জন্য প্রয়োজন ৩৩ রান। ১৯তম ওভারের শেষ তিন বলে রাহুল তেওয়াটিয়া টানা তিন ছক্কা হাঁকালেন দিল্লির ডেথ ওভার স্পেশালিষ্ট এনরিখ নর্কিয়াকে। ওভারটিতে রান উঠল ২১। শেষ ওভারে গুজরাটের জয়ের সমীকরণ দাঁড়ায় ১২ রান। ক্রিজে তখনো রয়েছেন থিতু হয়ে যাওয়া হার্দিক পান্ডিয়া-তেওয়াটিয়ার মতো ব্যাটার। গুজরাটের জয়টা অনেকে সময়ের ব্যাপারই ভেবেছিল। তবে শেষের চিত্রনাট্যটা লিখলেন পেসার ইশান্ত শর্মা। বুড়ো হাড়ে ভেলকি দেখিয়ে আটকে দিলেন গুজরাটের জয়। শেষ ওভারে দিলেন মোটে ৬ রান। উইকেটও তুলে নিলেন একটি। শর্মার দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৫ রানের অবিশ্বাস্য জয় পেয়েছে হারতে হারতে দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া দিল্লি ক্যাপিটালস।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার (২ মে) আহমেদাবাদে গুজরাটের পেসার মোহাম্মদ শামির বোলিং তোপে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে দিল্লির ব্যাটিং অর্ডার। এই পেসার ৪ ওভারে মাত্র ১১ রান দিয়ে শিকার করেন ৪টি উইকেট। শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেটের বিনিময়ে ওয়ার্নাররা করতে পারে ১৩০ রান।
এদিকে হাতের নাগালে থাকা টার্গেট তাড়া করতে নেমে দিল্লির মতোই বাজে শুরু গুজরাটের। প্রথম ওভারেই খলিল আহমেদের বলে শূন্য রানে আউট হন ঋদ্ধিমান সাহা। ব্যর্থ শুভমান গিলও। আগের দুই ম্যাচে ছন্দে থাকা বিজয় শঙ্করও এদিন ফিরলেন বড্ড তাড়াতাড়ি। পাওয়ার প্লের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় গুজরাট।
বিজ্ঞাপন
পাওয়ার প্লের পরে বল করতে এসে প্রথম ওভারে ডেভিড মিলারকে বোল্ড করেন কুলদীপ যাদব। গুজরাটের প্রথম পাঁচ ব্যাটারের মধ্যে অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া ছাড়া কেউই দু’অঙ্কে পৌঁছাতে পারেননি। ম্যাচ জেতানোর দায়িত্ব গিয়ে পড়ে হার্দিকের ওপর। শেষ ৬ ওভারে জয়ের জন্য দরকার ছিল ৬০ রান। অর্থাৎ, প্রতি ওভারে ১০ রান। এই পরিস্থিতি থেকে যেকোনো দলের জেতা উচিত। ব্যক্তিগত ফিফটি হাঁকানোর দিনে আশা বাড়াচ্ছিলেন হার্দিক। তবে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকেও দলকে জেতাতে ব্যর্থ হলেন।
শেষ দিকে তেওয়াটিয়ার তিন ছক্কায় জয়ের স্বপ্ন দেখলেও অভিজ্ঞ ইশান্ত শর্মার আগুনে বোলিংয়ে স্বপ্নভঙ্গ হয় গুজরাটের।
বিজ্ঞাপন
এর আগে দিনের একমাত্র ম্যাচটিতে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় দিল্লি। তবে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় চাপে পড়ে দলটি। এদিন দলে জায়গা পাননি মুস্তাফিজুর রহমান। তাতে দ্য ফিজ ভক্তদের আরও একবার আক্ষেপ করতে হয়েছে। আর দিল্লি সমর্থকদের আক্ষেপ শুরু হয় টপ অর্ডারের ব্যাটিং দেখে। ২৩ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে বসে দলটি। ব্যাট হাতে ব্যর্থ হন অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নারও। তিনি ২ বলে ২ রান করে রান আউট হয়ে ফেরেন সাজঘরে।
ওপেনার ফিল সল্ট প্রথম বলেই আউট হয়েছেন। প্রিয়ম গের্গ করেন ১৪ বলে ১০ রান। ৬ বলে ৮ রান করে মোহাম্মদ শামির বলে আউট হন রাইলি রুশো। আর ১ রান করে বিদায় নেন মানিশ পান্ডে। দলের বিপদের মুহূর্তে হাল ধরেন অক্ষর প্যাটেল ও আমান হাকিম খান। দুজনে ৫৪ বলে ৫০ রানের জুটি গড়েন।
দলীয় ৭৩ রানে আউট হন অক্ষর প্যাটেল (৩০ বলে ২৭ রান)। এরপরে আমানকে সঙ্গ দেন রিপাল প্যাটেল। মূলত রিপাল-আমানের এই জুটিতেই ঝোড়ো রান পায় দিল্লি। দুজনে ২৭ বলে ৫৩ রান করেন। ১৮.৩ ওভারে আউট হন আমান। তিনি ৪৪ বলে করেন ৫১ রান। গুজরাটের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট নেন মোহাম্মদ শামি।
এফআই/এফকে