রিংকু যা খেলছিল, আমি বল করলেও পাঁচ ছক্কা খেতাম: রশিদ
চলতি আইপিএলে এখন পর্যন্ত সেরা পারফরম্যান্স বাছতে বললে প্রথম সারিতেই থাকবে রিংকু সিংয়ের ম্যাচ জেতানো পাঁচ ছক্কার মার। গুজরাট টাইটান্সের বিপক্ষে শেষ ওভারে কলকাতার জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২৯ রান। ইয়াশ দয়ালের টানা পাঁচ বলে ৫টি ছক্কা হাঁকান কলকাতার ব্যাটার রিংকু। এমন অবিশ্বাস্য ইনিংস তারকাখ্যাতি এনে দিয়েছে কেকেআরের এই ব্যাটারকে। অতিদানবীয় ওই ইনিংসটি নিয়ে এবার কথা বললেন গুজরাটের আফগান তারকা রশিদ খান।
পশ্চিমবঙ্গের স্থানীয় দৈনিক সংবাদ প্রতিদিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রশিদ জানালেন, রিংকু ওইদিন যা খেলছিল, তিনি বল করলেও পাঁচ ছক্কা খেতে পারতেন। রিংকু সিংয়ের পাঁচ ছক্কা নিয়ে চর্চা থেমে নেই। অন্যদিকে, পাঁচ ছক্কা হজম করা ইয়াশ দয়াল মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হলেও পাশে পাচ্ছেন টিম সতীর্থদের। যদিও ওই ম্যাচের পর আর একাদশে দেখা যায়নি তাকে। এমনকী শোনা যাচ্ছে, পাঁচ ছক্কা খাওয়ার পর মানসিকভাবে এতটাই ভেঙে পড়েছেন যে, ওজন কমছে এই পেসারের।
ঘটনাক্রমে সেদিন গুজরাটের অধিনায়কত্বের দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন আফগান লেগ স্পিনার। এছাড়া করেছিলেন আইপিএলের প্রথম হ্যাটট্রিকও। এমন অর্জনের ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত ম্লান হয়ে যায় রিংকুর পাঁচ ছক্কার মারে। তবুও গোটা বিষয়টি নিয়ে ইতিবাচক রশিদ।
আরও পড়ুন: রিংকুকে শাহরুখের উপহার
দয়ালের পাশে দাঁড়িয়ে বললেন, এটা ক্রিকেট। আর ক্রিকেটে এসব হতেই পারে। ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালে বেন স্টোকসও তো পরপর চারটা ছয় খেয়েছিল। এটাই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট, এখানে বোলার এক ওভারে ছ’টা ছয়ও খেতে পারে! আর এই জিনিস ভবিষ্যতে ফের ঘটতে পারে। সে দিনের পর যশ সত্যিই ভেঙে পড়েছিল। কিন্তু যেভাবে টিম ওকে সামলে রেখেছিল, দেখার মতো। আশিস ভাই (আশিস নেহরা), হার্দিক (পান্ডিয়া), টিমের বাকি সিনিয়ররা–প্রত্যেকের কথা আমি বলব। আমরা সে দিনের পর থেকে ব্যাপারটা নিয়ে একবারও আলোচনা করিনি। একবারও রিংকুর সেই পাঁচ ছয়ের প্রসঙ্গ তুলিনি। আর মনে রাখতে হবে, রিংকু সেদিন প্রতিটা শট ভাল খেলেছিল। একটাও মিস করেনি। আর এমন নয় যে, যশ সব ক’টা বল খারাপ করেছিল। আমি তো বলব, তিনটা বল দয়াল সেদিন ভাল করেছিল। দেখুন, কেউ ইচ্ছে করে পাঁচটা ছয় খায় না। রিংকুর দিন ছিল সেদিন আমেদাবাদে। যা মারছিল, সব ছয়! আর ইয়াশের বদলে অন্য কেউ গেলেও সেদিন একই পরিণতি হতে পারত। সে-ও পাঁচটা ছয় খেতে পারত। এমনকী আমি বল করতে গেলে, আমিও পাঁচটা ছয় খেতে পারতাম! দিস ইজ ক্রিকেট!
গত রোববার (৯ এপ্রিল) আহমেদাবাদে ১৫৫ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলা কলকাতার শেষ ৮ বলে চাহিদা ছিল ৩৯ রানের। কোনো ব্যাটারের পক্ষে এমন সমীকরণ মেলানো অসম্ভবের পর্যায়েই পড়ে। তবে রিংকু সেটাকে সম্ভব করেন। গুজরাটের আইরিশ পেসার জশ লিটলের করা ১৯তম ওভারের শেষ দুই বলে তিনি মারেন যথাক্রমে ছক্কা ও চার। এরপর দয়ালকে শেষ ওভারে কচুকাটা করে ইতি টানেন উত্তেজনায় ভরপুর এক টি-টোয়েন্টি ম্যাচের।
এরপর স্টার স্পোর্টসের সঙ্গে কথা বলার সময় গুজরাট অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া বলেন, 'আমি এটা নিশ্চিতভাবে বলতে পারছি না (এই মৌসুমে দয়ালের আবারও মাঠে নামার সম্ভাবনা নিয়ে)। সেই ম্যাচের পর সে অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং তার ৭-৮ কেজি ওজন কমে যায়। সেই সময়ে ভাইরাল সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছিল।'
এই মুহূর্তে মাঠে নামার মতো পরিস্থিতিতে নেই দয়াল। হার্দিক বলেন, 'সে সেই ম্যাচের পরে ভেঙে পড়েছিল। সেই কারণে এই মুহূর্তে মাঠে নেমে খেলার মতো পরিস্থিতি তার নেই। মাঠে ফিরতে তার এখনও অনেক সময় লাগবে।'
এফআই