সেরা সমর্থকের খেতাব জেতা এই আর্জেন্টাইনকে চেনেন?
সৌদি আরব থেকে ১১৬০ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে গিয়েছিলেন আব্দুল্লাহ আল সুলমি। উদ্দেশ্য ছিল কাছ থেকে বিশ্বকাপে দেশের খেলা দেখা ও ফুটবলারদের অনুপ্রাণিত করা। এক্ষেত্রে জাপানি সমর্থকদের অবদান ব্যতিক্রম। পরিশ্রমী এই জাতি প্রতিবারই স্টেডিয়াম ও হোটেলে পরিচ্ছন্নতা অভিযানের কারণে আলোচনায় থাকেন। তবে উভয়কেই ছাপিয়ে গেছেন আর্জেন্টাইন সমর্থক কার্লোস পাসকুয়েল।
প্যারিসে ফিফা দ্য বেস্ট অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সেরা সমর্থকের মনোনয়ন পাওয়া তিন দেশ। পরবর্তীতে নাম ঘোষণায় জানা যায়, সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে পুরষ্কারটি বাগিয়েছেন আলবিসেলেস্তা সমর্থক৷ দশকের পর দশক ফুটবলারদের সমর্থন দিয়ে যাওয়া পাসকুয়েল তার স্বীকৃতি পেয়েছেন।
আর্জেন্টিনার এই সমর্থকের ডাকনাম তুলা। ভালোবেসে এই নামেই তাকে সম্বোধন করেন সবাই। আর্জেন্টিনার ম্যাচ মানেই গ্যালারিতে নিশ্চিত হাজির থাকবেন তুলা। ড্রাম বাজিয়ে শোরগোল তুলে কী শুধু খেলোয়াড়দের প্রেরণা দেন? না, একইসঙ্গে দলের অন্য সমর্থকদেরও একই সুতোয় নিয়ে আসেন তিনি। এরপরই ধুমধাড়াক্কা আওয়াজের সঙ্গে সমর্থকরা তুলেন গানের কোরাস।
১৯৪০ সালে আর্জেন্টিনার রোজারিও শহরে জন্মগ্রহণ করেন তুলা। এরপর নানা কারণে স্থান বদলালেও তিনি ছিলেন ফুটবলের সঙ্গে। যেখানেই গিয়েছেন, সেখানকার স্থানীয় ফুটবলকে আঁকড়ে ধরেছেন। জাতীয় ফুটবল দলকে সমর্থন দিতে সর্বপ্রথম ১৯৭৪ বিশ্বকাপের গ্যালারিতে হাজির হয়েছিলেন তুলা। এভাবে দলের প্রতি তার নিবেদন দেখে ১৯৭১ সালে দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট তাকে একটি বাজ-ড্রাম উপহার দেন। যেটি হয়ে উঠেছিল গ্যালারিতে থাকা তুলার ট্রেডমার্ক।
কাতার বিশ্বকাপ চলাকালে এক সাক্ষাৎকারে তুলা জানিয়েছিলেন, 'জার্মানিতে অনুষ্ঠিত ১৯৭৪ আসরে প্রথম কোনো বিশ্বকাপের মঞ্চে আমি উপস্থিত ছিলাম। সেজন্য আমি পাড়ি দিয়েছি ১৫ হাজার কিলোমিটার। সে সময় বিবিসি থেকে শুরু করে প্রতিটি গণমাধ্যমের খবরেও ছিলাম আমি। যার প্রতিটি কাটিং এখনো আমার সংগ্রহে রয়েছে।'
আরও পড়ুন : ‘আর্জেন্টাইন সমর্থকরাই সেরা’
১৯৭৪-২০২২ সালের মধ্যে কেবলমাত্র একজনই তুলার চেয়ে বেশি বিশ্বকাপে উপস্থিত ছিলেন বলে উল্লেখ করেন তিনি। তার ভাষ্য, 'কেবল মাকায়াই (সাংবাদিক এনরিক মারকুয়েজ) আমার চেয়ে বেশি বিশ্বকাপে হাজির ছিলেন। তিনি সুইডেনে অনুষ্ঠিত ১৯৫৮ আসর থেকেই প্রতিটি বিশ্বমঞ্চে তার কভারেজ অব্যাহত ছিল।'
যে কোনো খেলার ফলাফল নির্ধারণ হয় খেলোয়াড়দের নৈপুণ্যে। কিন্তু এতে কী সব অবদানই খেলোয়াড়দের? বিশ্ব ফুটবল সম্পর্কে যারা কমবেশি ধারণা রাখেন, তারা জানেন গ্যালারিতে থাকা সমর্থক মানেই কেবল সমর্থনকারী নন। ফুরফুরে মেজাজে খেলতে থাকা তারকা কিংবা খেই হারানো খেলোয়াড়, উভয়কেই প্রভাবিত করতে পারেন সমর্থকরা। এমনকি ম্যাচের উত্তেজনা ও আমেজকে তারা বহুগুণে বাড়িয়ে তোলেন। তাই তো বিশ্বকাপে অনবদ্য অংশগ্রহণের জন্য প্রতি আসরের পর 'বেস্ট ফ্যান'কে পুরষ্কৃত করে আসছে।
এএইচএস