লুসাইল যেন বুয়েন্স আয়ার্স
খেলা শুরুর তখন আর মাত্র মিনিট পাঁচেক বাকি। এক দল যুবক হন্যে হয়ে লোকজনকে জিজ্ঞেস করছেন, ‘টিকিট হবে? টিকিট?’ বিশ্ব ফুটবলের জাদুকর লিওনেল মেসির শেষ বিশ্বকাপ। তাই আর্জেন্টিনার ম্যাচ শুরুর ঠিক আগ মুহূর্তেও মেসির সমর্থকদের টিকিট খোঁজা চলছে।
কাতার বিশ্বকাপে সবচেয়ে বড় স্টেডিয়াম লুসাইল। ৮০ হাজার ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন লুসাইলে অনেক আর্জেন্টাইন সমর্থক স্টেডিয়ামের বাইরে অপেক্ষা করলেও ভেতরে সমর্থনের কমতি ছিল না। কিক অফের শুরু থেকেই,‘মেসি মেসি, আর্জেন্টিনা আর্জেন্টিনা’ শোরগোল চলছিল।
পেনাল্টি থেকে মেসি যখন গোল করলেন তখন পুরো স্টেডিয়াম ফেটে পড়ছিল, ‘মেসি, মেসি প্রতিধ্বনিতে’। লুসাইল স্টেডিয়ামের মিডিয়া ট্রিবিউন কাঁচে ঘেরা নয়। ফলে দর্শকদের চিৎকার আসছিল একদম স্পষ্টভাবেই। ম্যাচের শুরু থেকেই দর্শকদের গর্জন। মেসিরা খেলছিলেন মাঠে, গ্যালারিতে মাতাচ্ছিলেন দর্শকরা।
কাতারের পাশ্ববর্তী দেশ সৌদি আরব। সৌদি আরবের দর্শকও ছিল অসংখ্য। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে খেলা দেখতে কয়েক হাজার সৌদি দর্শক লুসাইলে এসেছিলেন। অনেক কাতারী আবার সৌদি সমর্থন করেছেন আবার অনেকে মেসির প্রতি ভালোবেসে আর্জেন্টিনার জার্সি পড়ে এসেছেন।
লুসাইল স্টেডিয়ামে আর্জেন্টিনা ও সৌদি ছাড়াও অন্য দেশের অনেকেরই উপস্থিতি রয়েছে। এই গ্রুপের অন্যতম দল মেক্সিকো। সেই মেক্সিকোর অনেক সমর্থক এই গ্রুপের খেলা দেখতে এসেছে। আর্জেন্টিনার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলের সমর্থকও দেখা গেছে। তাদের কেউ মেসির খেলা দেখতে এসেছেন আবার কেউ সৌদিকে সমর্থন দিচ্ছেন।
কাতারে অবস্থিত অনেক বাংলাদেশি প্রবাসী মেসির খেলা দেখতে অফিস থেকে ছুটি নিয়েছেন। বিশ্বকাপে গত দুই দিনে চারটি ম্যাচ হয়েছে। আজকের ম্যাচটিই প্রথম স্থানীয় সময় দুপুর একটায়। খেলা একটায় হলেও সকাল ঘুম থেকেই সমর্থকরা স্টেডিয়ামের উদ্দেশ্যে ছুটেছেন। স্টেডিয়ামের গ্যালারী খুলে ঘন্টা তিনেক আগে। এর আগে থেকেই ছিল লম্বা লাইন। দর্শকদের চাপ এতটাই ছিল যে খেলা শুরুর সময়ও ছিল অপেক্ষামান সারি।
এবারের বিশ্বকাপে সবচেয়ে নান্দনিক স্টেডিয়াম লুসাইল। এই স্টেডিয়ামেই ১৮ ডিসেম্বর বিশ্ব পাবে নতুন স্টেডিয়াম। বিশ্বকাপ উপলক্ষ্যে এই স্টেডিয়ামকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে লুসাইল নগরী।
এজেড/এটি